বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (প্রথম খণ্ড)/১০৪

শিরোনাম সূত্র তারিখ
মাওলানা ভাসানী কর্তৃক প্রকাশিত রাজনৈতিক বক্তব্যভিত্তিক লিপলেট মাওলানা ভাসানী ১৩ই জানুয়ারী, ১৯৫৭

পূর্ব বাংলার গরীব চাষী, মজুর, ছাত্র, যুবক ও জনসাধারণের প্রতি-আমার আবেদন

ভাইসব,

 এ দেশ শুধু মন্ত্রী, মেম্বার, সরকারী কর্মচারীদের নহে-এ দেশ অগণিত জনগণের দেশ। যাহারা এ দেশ পরিচালিত করেন, তাহারা শতকরা ৯৫ জন গরীব, কামার কুমার প্রভৃতি সকল শ্রেণীর জনসাধারণের টাকা দিয়াই চলেন। এ দেশের সরকার জনগণেরই সরকার। তাই জনগণের স্বার্থ রক্ষাকল্পে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, চোরাকারবারি প্রভৃতি সকল রকম সমাজবিরোধী কার্যকলাপ বন্ধ করার জন্য ভয়ভীতি ত্যাগ করিয়া ঐক্যবদ্ধ হউন। পূর্ব বাংলার বাঁচার দাবী পূর্ণ আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন আদায়ের দাবী এবং মহান ২১ দফার বাকী ১৪ দফা দাবী পূরণের জন্য বিচ্ছিন্ন জনশক্তিকে আওয়ামী লীগের মাধ্যমে ঐকৃবদ্ধ করিয়া তুমুল আন্দোলন গড়িয়া তুলিতে হইবে।

 দেশের নানাবিধ সমস্যার সমাধানের উপায় উদ্ভাবন এবং আন্দোলনকে সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য আমি আগামী ৭ই ফেব্রুয়ারী হইতে সপ্তাহব্যাপী সন্তোষ কাগমারীতে এক বিরাট সম্মেলন আহবান করিয়াছি। দল মত, জাতিধর্ম নির্বিশেষে উক্ত সম্মেলনে যোগদান করিয়া জনগণের দাবী আদায়ের আন্দোলন জোরদার করুন।

কর্মসূচী

৭ই ও ৮ই ফেব্রুয়ারী- পূর্ব পাক আওয়ামী লীগ কাউন্সিল সভা।

৭ই ফেব্রুয়ারী হইতে-কৃষি, শিল্প প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক সম্মেলন। প্রদর্শনীর জন্য শ্রেষ্ঠ দ্রব্যসম্ভার আনয়নের এবং সাংস্কৃতিক সম্মেলনে যোগদানের জন্য শিল্পীগণকে অনুরোধ জানান যাইতেছে। থাকার ব্যবস্থা করা হইবে, বিছানা সঙ্গে আনিবেন।

জনগণের নগণ্য খাদেম

মোঃ আবদুল হামিদ খান ভাসানী

১৩-০১-৫৭

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ- সম্মেলনের জন্য জাউল, পাতা, ডেকড়ী, কড়াই, গরু-বকরী যে যাহা দান করিতে চান সম্মেলনের পূর্বেই পৌছাইয়া দিবেন।