বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (প্রথম খণ্ড)/১০৭
শিরোনাম | সূত্র | তারিখ |
কাগমারী সম্মেলনে আন্তর্জাতিক রাজনীতির উপর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর বক্তব্য | দৈনিক সংবাদ | ৮ই ফেব্রুয়ারী, ১৯৫৭ |
সময়ের উপর নির্ভর করিয়া বৈদেশিক নীতি নির্ধারণের আবেদন
আওয়ামী লীগ কাউন্সিল অধিবেশনে জনাব সোহরাওয়ার্দীর বক্তৃতা
(নিজস্ব প্রতিনিধি)
আওয়ামী লীগ কাউন্সিল অধিবেশনে বক্তৃতা প্রসংগে প্রধানমন্ত্রী জনাব সোহরাওয়ার্দী “সময়ের উপর নির্ভর করিয়া বৈদেশিক নীতি নির্ধারণের পক্ষে মত দেন। তিনি বলেন আমাদের কেন্দ্র হইতে পদত্যাগ করিতে বলা হইতেছে না। ইহাতেই প্রমাণ হয় যে, জনসাধারণের আমাদের উপর সামান্য হইলেও আস্থা রহিয়াছে। ১৯৫৫ সালে যে পররাষ্ট্রনীতির কথা বলা হইয়াছে, তাহা অদ্যাবধি চলিতে পারে কিনা তাহা দেখিতে হইবে। আমাদের দেশের রাজনৈতিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা রহিয়াছে। আমাদের কেন্দ্রে একটি মাত্র পার্টির জন্যই পররাষ্ট্র নীতি নির্ধারণ করিতে হয় না। সমগ্র দেশের জন্য তাহা করিতে হয়।
তিনি মওলানা সাহেবের প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের কথা উল্লেখ করিয়া বলেন, আমার মনে হয় শতকরা ৯৮ ভাগ স্বায়ত্তশাসন আমরা পাইয়াছি। কিন্তু এমন কতকগুলি ব্যাপার যেমন বৈদেশিক সাহায্য, কেন্দ্রীয় অর্থ বণ্টন বিষয়ে কেন্দ্রর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন রহিয়াছে।
জনাব সোহরাওয়ার্দী পাকিস্তানের অত্যাবশকীয় সংহতি ও জনসাধারণের মৌলিক দেশপ্রেমের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন।
স্বায়ত্তশাসন
স্বায়ত্তশাসনের দাবী সম্পর্কে তিনি বলেন যে, এই দাবীর বাস্তব ভিত্তি নাই। কারণ স্বায়ত্তশাসন মোতাবেক এই দাবীর শতকরা ৯৮ ভাগই স্বীকার করিয়া লওয়া হইয়াছে। উপরক্ত কেবলমাত্র জাতীয় পরিষদে আইন পাস করিলে অবস্থার উন্নতি হইবে না। এই সম্পর্কে কাউন্সিলে তিনি উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলিতে পূর্ব পাকিস্তানের আবশ্যকীয় অর্থের পরিমাণ নির্ধারণের কমিটি গঠন করিতে বলেন এবং এই প্রসংগে তিনি বলেন যে পূর্ব পাকিস্তান কেন্দ্র হইতে যথেষ্ট পরিমাণে সাহায্য পাইতেছে। এই সম্পর্কে তিনি স্বতন্ত্র প্রবনতার তীব্র প্রতিবাদ করিয়া বলেন যে, দাবী আদায়ের জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে সংগ্রাম করিতে হইবে।
পররাষ্ট্রনীতি
ইতিমধ্যেই ইহার (পররাষ্ট্রনীতি) সাফল্য প্রমাণিত হইয়াছে। পররাষ্ট্রনীতি কখনই স্থিতিশীল হইতে পারে না। তবে পরিবর্তিত অবস্থার সহিত ইহাকে অবশ্যই সমন্বয় সাধন করিয়া চলিতে হইবে। পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণকালে অবশ্যই যথাথ সময়ের কথাও বিবেচনা করিতে হইবে এবং পাকিস্তানের ক্ষেত্রে ইহা ফলদায়ক হইয়াছে।
মওলানা ভাসানীর বক্তৃতা প্রসংগে- মওলানা ভাসানী সামরিক জোটের বিরোধী হইলেও দেশের জনসাধারণের উন্নতি বিধানের জন্যে তিনি অর্থনৈতিক সাহায্য গ্রহণের বিরোধী নহেন।
পররাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে আমার সহিত তাহাদের পার্থক্য আমার প্রতি চ্যালেঞ্জস্বরূপ। আমি তাহাদের রাজী করানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করিব।[১]
- ↑ ভাষণটি সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে।