অব্যক্ত: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Subrata Roy (আলোচনা | অবদান)
WikitanvirBot I (আলোচনা | অবদান)
বট কসমেটিক পরিবর্তন করছে
৭ নং লাইন:
|author =জগদীশ চন্দ্র বসু}}
<div style="padding-left:2em;font-size:1.3em">
== কথারম্ভ ==
ভিতর ও বাহিরের উত্তেজনায় জীব কখনও কলরব কখনও আর্তনাদ করিয়া থাকে। মানুষ মাতৃক্রোড়ে যে ভাষা শিক্ষা করে সে ভাষাতেই সে আপনার সুখ-দুঃখ জ্ঞাপন করে। প্রায় ত্রিশ বৎসর পূর্বে আমার বৈজ্ঞানিক ও অন্যান্য কয়েকটি প্রবন্ধ মাতৃভাষাতেই লিখিত হইয়াছিল। তার পর বিদ্যুৎ-তরঙ্গ ও জীবন সম্বন্ধে অনুসন্ধান আরম্ভ করিয়াছিলাম এবং সেই উপলক্ষে বিবিধ মামলা-মোকদ্দমায় জড়িত হইয়াছি। এ বিষয়ের আদালত বিদেশে, সেখানে বাদ-প্রতিবাদ কেবল ইউরোপীয় ভাষাতেই গৃহীত হইয়া থাকে।এদেশেও প্রিভিকাউন্সিলের রায় না পাওয়া পর্যন্ত কোন মোকদ্দমার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয় না।
জাতীয় জীবনের পক্ষে ইহা অপেক্ষা অপমান আর কি হইতে পারে? ইহার প্রতিকারের জন্য এদেশে বৈজ্ঞানিক-আদালত স্থাপনের চেষ্টা করিয়াছি। ফল হয়তো এ জীবনে দেখিব না; প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞান-মন্দিরের ভবিষ্যৎ বিধাতার হস্তে। বন্ধুবর্গের অনুরোধে বিক্ষিপ্ত প্রবন্ধগুলি পুস্তকাকারে মুদ্রিত করিলাম। চতুর্দিক ব্যাপীয়া যে অব্যক্ত জীবন প্রসারিত, তাহার দু-একটি কাহিনী বর্ণিত হইল। ইহার মধ্যে কয়েকটি লেখা মুকুল, দাসী, প্রবাসী, সাহিত্য এবং ভারতবর্ষে প্রকাশিত হইয়াছিল।
১৫ নং লাইন:
:১লা বৈশাখ, ১৩২৮
 
== যুক্তকর ==
পুরাতন লাইয়াই বর্তমান গঠিত, অতীতের ইতিহাস না জানিলে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ অজ্ঞেয়ই রহিবে। পুরাতন ইতিহাস উদ্ধার করিতে হইলে সেকালে সর্বসাধারণের দৈনন্দিন জীবন কিরূপে অতিবাহিত হইত, তাহা জানা আবশ্যক। লোকপরম্পরায় শুনিয়াছিলাম, দেড় হাজার বৎসর পূর্বের জীবন্ত চিত্র এখনও অজন্তার গুহামন্দিরে দেখিতে পাওয়া যায়। আজকাল পথ অনেক সুবিধা হইয়াছে; কিন্তু বহুবৎসর পূর্বে যখন অজন্তা দেখিতে গিয়াছিলাম, তখন রাস্তাঘাট বিশেষ কিছুই ছিল না। রেলস্টেশন হইতে প্রায় একদিনের পথ। বাহন গরুর গাড়ি। অনেক কষ্টের পর অজন্তা পৌঁছিলাম। মাঝখানের পার্বত্য নদী পার হইয়া দেখিলাম, পর্বত খুদিয়া গুহাশ্রেণী নির্মিত হইয়াছে; ভিতরের কারুকার্যের পরাকাষ্ঠা। গুহার প্রাচীর ও ছাদে চিত্রাবলি অঙ্কিত; তাহা সহস্রাধিক বৎসরেও ম্লান হয় নাই। দরবার-চিত্রে দেখিলাম, পারস্যদেশ হইতে দূত রাজদর্শনে আসিয়াছে। অন্য স্থানে ভীষণ সমরচিত্র। তাহাতে একদিকে অস্ত্রশস্ত্রে ভূষিতা নারীসৈন্য যুদ্ধ করিতেছে। আর এককোণে দেখিলাম, দুইখানা মেঘ দুই দিক হইতে আসিয়া প্রহত হইয়াছে। ঘূর্ণায়মান বাষ্পরাশিতে মূর্তি ফুটিয়া উঠিয়াছে, তাহারা পরষ্পরের সহিত ভীষণ রণে যুঝিতেছে। এই দ্বন্দ্ব সৃষ্টির প্রাক্কাল হইতে আরম্ভ হইয়াছে; এখনও চলিতেছে, ভবিষ্যতেও চলিবে। প্রতিদ্বন্দ্বী আলো ও আঁধার, জ্ঞান ও অজ্ঞান, ধর্ম ও অধর্ম। যখন সবিতা সপ্তঅশ্বযোজিত রথে আরোহণ করিয়া সমুদ্রগর্ভ হইতে পূর্বদিকে উত্থিত হইবেন, তখনই আঁধার পরাহত হইয়া পশ্চিম গগনে মিলাইয়া যাইবে।
 
৪০ নং লাইন:
অনেক সময়ে এক অপূর্ণতা আসিয়া পৃথিবীর সৌন্দর্য ও সজীবতা অপহরণ করে। আলো ও অন্ধকার, সুখ ও দুঃখমিশ্রিত দৃশ্য অসামঞ্জস্যহেতু অশান্তিপূর্ণ হয়, অথচ আলো ও অন্ধকারের সমাবেশ ভিন্ন সুচিত্র হয় না। কেবল আলো কিংবা কেবল অন্ধকারে চিত্র অপরিস্ফুট থাকে। যে-দৃশ্যের কথা উল্লেখ করিলাম, উহার ন্যায় জীবনচিত্র অনেক সময় সৌন্দর্যহীন হয়। ঐ চিত্রের ন্যায় একটি শিশু কিংবা নারীর উর্ধ্বোত্থিত বাহুতে সমস্ত দৃশ্য পরিবর্তিত হইয়া যায়। আলো ও ছায়া, সুখ ও অপরিহার্য দুঃখ তখন স্ব-স্ব নির্দিষ্ট স্থানে সমাবিষ্ট হয়। তখন সেই দুইখানি উত্তোলিত যুক্তহস্ত হইতে কিরণরেখা অন্ধকার ভেদ করিয়া সমস্ত দৃশ্য জ্যোতির্ময় করে।
 
== বিষয়সূচী ==
* [[অব্যক্ত/আকাশ-স্পন্দন ও আকাশ-সম্ভব জগৎ|আকাশ-স্পন্দন ও আকাশ-সম্ভব জগৎ]]
* [[অব্যক্ত/গাছের কথা|গাছের কথা]]
৬৩ নং লাইন:
* [[অব্যক্ত/যুক্তকর|যুক্তকর]]
 
[[categoryবিষয়শ্রেণী:জনপ্রিয় বিজ্ঞান]]
[[categoryবিষয়শ্রেণী:জগদীশ চন্দ্র বসু]]
[[Categoryবিষয়শ্রেণী:অব্যক্ত]]