পাতা:গল্পগুচ্ছ (প্রথম খণ্ড).djvu/১৮৬: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
Mohaguru (আলোচনা | অবদান)
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh|১৮২|গল্পগুচ্ছ|}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:

১৮২ গল্পগুচ্ছ
ঘরের কাঠমঞ্চ হইতে শেখর আপনার পুথিগুলি পাড়িয়া সম্মুখে শুপাকার করিয়া রাখিয়াছেন। তাহার মধ্য হইতে বাছিয়া বাছিয়া নিজের রচিত গ্রন্থগুলি পৃথক করিয়া রাথিলেন। অনেক দিনকার অনেক লেখা । তাহার মধ্যে অনেকগুলি রচনা তিনি নিজেই প্রায় ভুলিয়া গিয়াছিলেন। সেগুলি উলটাইয়া পালটাইয়া এখানে ওখানে পড়িয়া দেখিতে লাগিলেন। আজ র্তাহার কাছে ইহা সমস্তই অকিঞ্চিৎকর বলিয়া বোধ হইল
{{gap}}ঘরের কাষ্ঠমঞ্চ হইতে শেখর আপনার পুঁথিগুলি পাড়িয়া সম্মুখে স্তুপাকার করিয়া রাখিয়াছেন। তাহার মধ্য হইতে বাছিয়া বাছিয়া নিজের রচিত গ্রন্থগুলি পৃথক করিয়া রাখিলেন। অনেক দিনকার অনেক লেখা। তাহার মধ্যে অনেকগুলি রচনা তিনি নিজেই প্রায় ভুলিয়া গিয়াছিলেন। সেগুলি উল্টাইয়া পাল্‌টাইয়া এখানে ওখানে পড়িয়া দেখিতে লাগিলেন। আজ তাঁহার কাছে ইহা সমস্তই অকিঞ্চিৎকর বলিয়া বােধ হইল।

নিশ্বাস ফেলিয়া বলিলেন, “সমস্ত জীবনের এই কি সঞ্চয় । কতকগুলা কথা এবং ছন্দ এবং মিল!” ইহার মধ্যে যে কোনো সৌন্দর্য, মানবের কোনো চির-আনন্দ, কোনো বিশ্বসংগীতের প্রতিধ্বনি, তাহার হৃদয়ের কোনো গভীর আত্মপ্রকাশ নিবদ্ধ হইয়া আছে— অজ তিনি তাহ দেখিতে পাইলেন না । রোগীর মুখে যেমন কোনো খাদ্যই রুচে না তেমনি আজ র্তাহার হাতের কাছে যাহা কিছু আসিল সমস্তই ঠেলিয়া ঠেলিয়া ফেলিয়া দিলেন। রাজার মৈত্রী, লোকের খ্যাতি, হৃদয়ের দুরাশা, কল্পনার কুহক— আজ অন্ধকার রাত্রে সমস্তই শূন্ত বিড়ম্বন বলিয়া ঠেকিতে লাগিল।
{{gap}}নিশ্বাস ফেলিয়া বলিলেন, “সমস্ত জীবনের এই কি সঞ্চয়। কতকগুলা কথা এবং ছন্দ এবং মিল !” ইহার মধ্যে যে কোনাে সৌন্দর্য, মানবের কোনাে চির-আনন্দ, কোনাে বিশ্বসংগীতের প্রতিধ্বনি, তাঁহার হৃদয়ের কোনাে গভীর আত্মপ্রকাশ নিবদ্ধ হইয়া আছে— আজ তিনি তাহা দেখিতে পাইলেন না। রােগীর মুখে যেমন কোনাে খাদ্যই রুচে না তেমনি আজ তাঁহার হাতের কাছে যাহা কিছু আসিল সমস্তই ঠেলিয়া ঠেলিয়া ফেলিয়া দিলেন। রাজার মৈত্রী, লােকের খ্যাতি, হৃদয়ের দুরাশা, কল্পনার কুহক আজ অন্ধকার রাত্রে সমস্তই শূন্য বিড়ম্বনা বলিয়া ঠেকিতে লাগিল।
তখন একটি একটি করিয়া তাহার পুথি ছিড়িয়া সম্মুখের জলন্ত অগ্নিভাণ্ডে নিক্ষেপ করিতে লাগিলেন। হঠাৎ একটা উপহাসের কথা মনে উদয় হইল । হাসিতে হাসিতে বলিলেন, "বড়ো বড়ো রাজার অশ্বমেধষজ্ঞ করিয়া থাকেন— আজ আমার এ কাব্যমেধযজ্ঞ ।” কিন্তু, তখনি মনে উদয় হইল, তুলনাটা ঠিক হয় নাই। “অশ্বমেধের অশ্ব যখন সর্বত্র বিজয়ী হইয়া ফিরিয়া আসে তখনি অশ্বমেধ হয়— আমার কবিত্ব যেদিন পরাজিত হইয়াছে আমি সেইদিন কাব্যমেধ করিতে বসিয়াছি- আরও বহুদিন পূর্বে করিলেই ভালো छ्ट्रेऊ |”

একে একে নিজের সকল গ্রন্থগুলিই অগ্নিতে সমর্পণ করিলেন। আগুন ধুধু করিয়া জলিয়া উঠিলে কবি সবেগে দুই শূন্ত হস্ত শূন্তে নিক্ষেপ করিতে করিতে বলিলেন, “তোমাকে দিলাম, তোমাকে দিলাম, তোমাকে দিলাম, হে স্বন্দরী অগ্নিশিখা, তোমাকেই দিলাম। এতদিন তোমাকেই সমস্ত আহুতি দিয়া আসিতেছিলাম, আজ একেবারে শেষ করিয়া দিলাম । বহুদিন তুমি আমার হৃদয়ের মধ্যে জলিতেছিলে, হে মোহিনী ৰহিরুপিণী, যদি সোনা হইতাম তো
{{gap}}তখন একটি একটি করিয়া তাঁহার পুঁথি ছিড়িয়া সম্মুখের জ্বলন্ত অগ্নিভাণ্ডে নিক্ষেপ করিতে লাগিলেন। হঠাৎ একটা উপহাসের কথা মনে উদয় হইল। হাসিতে হাসিতে বলিলেন, “বড়ােবড়াে রাজারা অশ্বমেধযজ্ঞ করিয়া থাকেন আজ আমার এ কাব্যমেধযজ্ঞ।” কিন্তু, তখনি মনে উদয় হইল, তুলনাটা ঠিক হয় নাই। “অশ্বমেধের অশ্ব যখন সর্বত্র বিজয়ী হইয়া ফিরিয়া আসে তখনি অশ্বমেধ হয় আমার কবিত্ব যেদিন পরাজিত হইয়াছে আমি সেইদিন কাব্যমেধ করিতে বসিয়াছি আরও বহুদিন পূর্বে করিলেই ভালাে হইত।”

{{gap}}একে একে নিজের সকল গ্রন্থগুলিই অগ্নিতে সমর্পণ করিলেন। আগুন ধূ ধূ করিয়া জ্বলিয়া উঠিলে কবি সবেগে দুই শূন্য হস্ত শুন্যে নিক্ষেপ করিতে করিতে বলিলেন, “তােমাকে দিলাম, তােমাকে দিলাম, তােমাকে দিলাম, হে সুন্দরী অগ্নিশিখা, তােমাকেই দিলাম। এতদিন তােমাকেই সমস্ত আহুতি দিয়া আসিতেছিলাম, আজ একেবারে শেষ করিয়া দিলাম। বহুদিন তুমি আমার হৃদয়ের মধ্যে জ্বলিতেছিলে, হে মােহিনী বহ্নিরূপিণী, যদি সােনা হইতাম তাে