পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/৩২৭: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh|তিতাস একটি নদীর নাম||৩১৫}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{gap}}একটা করুণ সুর তার মনে গুণ গুণ করিয়া উঠিল। তার জগৎ বেদনার জগৎ। এ জগতে হাসি নাই, আমােদ নাই। আপনজন না থাকার ব্যথায় তার জগৎ পরিম্লান। আকাশে তারা আছে, কাননে ফুল আছে, মেঘে রঙ আছে। তিতাসের ঢেউয়ে সে-রঙের খেলা আছে, সব কিছু নিয়াও এই রূপােন্মত্ত বহির্বিশ্ব তার মনের ম্লানিমার সঙ্গে একাকার। একটার পর একটা সাগরের ঢেউয়ের মত কি যেন তার সারা মনটা ডুবাইয়া চুবাইয়া দেয়। তখন সে চাহিয়া দেখে, কূল নাই, সীমা নাই, খালি জল আর জল। দুই তীরের বাঁধনে বাঁধা তিতাসের সাধ্য কি সে জল আগলায়। এ যেন বার-দরিয়ার নােনা জল—ছােট তটিনীর সকল নৃত্যবিলাসকে তলাইয়া দিয়া জাগিয়া থাকে শুধু একটানা হাহাকার।
মাসী তার একান্তই অসহায় । তিক্তবিরক্ত বাপ মার অনাত্মীয় পরিবেশে সে নিতান্তই অসহায় । অতীতের সঙ্গে তার বর্তমানের যে যোগ-সূত্র আছে, ভবিষ্যতের দিকে পা বাড়াইয়। সে-সূত্র ছিন্ন বিচ্ছিন্ন। একটা নগণ্য খড়কুটার মতই সেও সময়ের মহাম্রোতে ভাসিয়া চলিয়াছে । তিতাসের জলে হাজারো খড়কুটা ভাসিয়া যায় ; কিন্তু কোন না কোন মালোর জালে তারা আটকা পড়িবেই পড়িবে। কিন্তু মাসীর ভবিষ্যৎ, কোন অবলম্বনের গায়েই আটকা পড়িবে না। আর উদয়তারা ? অনেক বেদনা তার মনে জমা হইয়া আছে, কিন্তু বড় কঠিন এ নারী । হাস্য পরিহাসে, প্রবাদে শ্লোকে সব বেদন ঢাকিয় সে নারী সব সময়ে মুখের হাসি নিয়া চলে। তাহাকে জদ করিবে এমন দুঃখ বুঝি বিধতাও স্বষ্টি করিতে পারে নাই । মাসী তার মত সকল দুঃখকে অগ্রাহ করিয়া চলিবার ক্ষমতা পাইল না কেন ? হায়, তাহা যদি সে পাইত, অনন্তর মন অনেক ভাবনা হইতে নিস্কৃতি পাইত । আর এই হাস্যচঞ্চল মেয়েটি। এর জীবন সবে শুরু হইয়াছে। সে নিজে যেমন চাদের রোশনি, তেমনি অনেক থমথমে আকাশের তারাকে সে কাননের ফুলের মত বোটায় আঘাত করিয়া ফুটাইয়৷ ছিটাইয়া হাসাইতে মাতাইতে সক্ষম। সে যদি সব সময় তার সঙ্গে সঙ্গে থাকিতে পারিত। তবে তার মনের মানিমাটুকু একটু একটু করিয়া ক্ষয় হইয়া যাইত ।

মেয়েটি হঠাৎ হাসিতে ফাটিয়া পড়িল । অনন্ত চমকাইয়া উঠিয়া বলিল, ‘হাস কেনে ?
{{gap}}অনন্ত ইহার কারণ বিশ্লেষণ করিতে চায় মনে মনে। দেখে এত বিশাল বিপুল সময়ের মহাস্রোতে সে বুঝি বা একখণ্ড দুর্বল কুটার মতই ভাসিয়া চলিয়াছে। কিছুদিন আগে একমাত্র মাকে আপন বলিয়া জানিত। তারপর মাসী। কিন্তু সে যে আসলে তার কেউ না, অনন্তর এ বােধ আছে। বনমালী উদয়তারা এরাও দুইদিনের পথের সাথী। এরা যেদিন মাসীর মতই তাকে পর করিয়া দিবে সেদিন সে কোথায় যাইবে!

{{gap}}কোথায় আর যাইবে। একটা পান্থশালা জুটিয়া যাইবেই। যে ছাড়িতে পারে তার জুটিতেও বিলম্ব হয় না। পান্থশালারই মত এই মেয়েটির সংসারে ঢুকিয়া পড়িলে ক্ষতি কি?

{{gap}}তিনটি নারী একযােগে অনন্তর সামনে আসিয়া দাঁড়াইল।