পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/৩৩৮: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
 
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh|৩২৬||তিতাস একটি নদীর নাম}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
রমু ততক্ষণে খালের পাড়ে। হাড়ি-বোঝাই নৌকাটির জন্য সারাক্ষণ তার মন কৌতুহলী হইয়া থাকিত। বিকাল পড়িতে বাপকে অনুপস্থিত ও মাকে কাজে ব্যস্ত দেখিয়া সে একবার হাড়ির নৌকাখানা দেখিতে আসিয়াছে। হাড়ির একটা পাহাড় যেন ঠেলিয়া মাথা উচু করিয়াছে। নৌকাখানা বড়। চারিদিকে খুটি গাড়িয়া খোয়াড় বানাইয়া হাড়ির কাড়ি পরতে পরতে বড় করিয়াছে। সকালে ঝুড়ি-ঝুড়ি হাড়ি বিক্রয় করিতে গায়ে গিয়াছিল। ধান-কড়ি লইয়া ফিরিয়া আসিয়া রাধিয়াছে, খাইয়াছে,—এখন উহারা বিশ্রামে ব্যস্ত । বিরাট একটা দৈত্যের মত নৌকাখানা এখানে আটক পড়িয়াছে। জল শুকনা। নড়িবার চড়িবার ক্ষমতা নাই। কিন্তু লোকগুলির মনে সেজন্য কোনই দুশ্চিন্তা দেখা যাইতেছে না। তারা যেন দিনের পর দিন এইভাবে ঝুড়ি ঝুড়ি হাড়ি লইয়া গা ওয়াল করিতে যাইবে । তারপর সব হাড়ি কলসী বিক্রয় হইয়া গেলে একদিন জোয়ার আসিবে, তিতাসের জল ঠেলিয়া খালে আসিয়া ঢুকিবে, এবং বহুদিন পর এই বিরাট দৈত্য গা নাড়া দিয়া উঠিবে। ইহার পর আর তাহাদিগকে কোন দিন দেখা যাইবে না। প্রতি বারে নূতন নূতন গায়ে গিয়া ইহারা পাড়ি জমাইবে । তাই কি তাহাদের মনে ক্ষুর্তি ? ঠাণ্ডা হাওয়া দিয়াছে, একজন বারমাসী গান তুলিয়াছে— ‘হায় হায়রে, এহিত চৈত্রি না মাসে গিরস্তে বুনে বীজ। আন গো কটোরা ভরি খাইয়া মরি বিষ ॥ বিষ খাইয়া মইরা যামু কানবে বাপ মায়। আর ত না দিবে বিয়া পরবাসীর ঠাই ॥
{{gap}}রমু ততক্ষণে খালের পাড়ে। হাঁড়ি-বোঝাই নৌকাটির জন্য সারাক্ষণ তার মন কৌতুহলী হইয়া থাকিত। বিকাল পড়িতে বাপকে অনুপস্থিত ও মাকে কাজে ব্যস্ত দেখিয়া সে একবার হাঁড়ির নৌকাখানা দেখিতে আসিয়াছে।
{{gap}}হাঁড়ির একটা পাহাড় যেন ঠেলিয়া মাথা উঁচু করিয়াছে। নৌকাখানা বড়। চারিদিকে খুঁটি গাড়িয়া খোয়াড় বানাইয়া হাঁড়ির কাড়ি পরতে পরতে বড় করিয়াছে। সকালে ঝুড়ি-ঝুড়ি হাঁড়ি বিক্রয় করিতে গাঁয়ে গিয়াছিল। ধান-কড়ি লইয়া ফিরিয়া আসিয়া রাঁধিয়াছে, খাইয়াছে,—এখন উহারা বিশ্রামে ব্যস্ত।
{{gap}}বিরাট একটা দৈত্যের মত নৌকাখানা এখানে আটকা পড়িয়াছে। জল শুক্‌না। নড়িবার চড়িবার ক্ষমতা নাই। কিন্তু লোকগুলির মনে সেজন্য কোনই দুশ্চিন্তা দেখা যাইতেছে না। তারা যেন দিনের পর দিন এইভাবে ঝুড়ি ঝুড়ি হাঁড়ি লইয়া গাঁওয়াল করিতে যাইবে। তারপর সব হাঁড়ি কলসী বিক্রয় হইয়া গেলে একদিন জোয়ার আসিবে, তিতাসের জল ঠেলিয়া খালে আসিয়া ঢুকিবে, এবং বহুদিন পর এই বিরাট দৈত্য গা নাড়া দিয়া উঠিবে। ইহার পর আর তাহাদিগকে কোন দিন দেখা যাইবে না। প্রতি বারে নূতন নূতন গাঁয়ে গিয়া ইহারা পাড়ি জমাইবে। তাই কি তাহাদের মনে স্ফূর্তি?
{{gap}}ঠাণ্ডা হাওয়া দিয়াছে, একজন বারমাসী গান তুলিয়াছে—‘হায় হায়রে, এহিত চৈত্রি না মাসে গিরস্তে বুনে বীজ। আন গো কটোরা ভরি খাইয়া মরি বিষ॥ বিষ খাইয়া মইরা যামু কান্‌বে বাপ মায়। আর ত না দিবে বিয়া পরবাসীর ঠাঁই॥’
{{nop}}