পাতা:সুকুমার রায় রচনাবলী-প্রথম খণ্ড.djvu/৭৯: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

Kaushik sur (আলোচনা | অবদান)
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
+
বৈধকরণ
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
৩ নং লাইন: ৩ নং লাইন:
{{gap}}পিটার বলল, “মহারাজ, এক মিনিট সবুর করুন।” এই বলে সে একটা ভাঙা শিঙের বাঁশি নিয়ে তার বোনের চোখে মুখে ফুঁ দিতে লাগল। এক মিনিটের মধ্যে মেয়েটা চোখ মেলে বড়-বড় দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে উঠে বসল। রাজা তো অবাক! তিনি বললেন, “এই শিঙেটা আমায় দিতে হবে।” পিটার কাঁদতে লাগল—বলল, “দোহাই মহারাজ, ওটা না হলে আমাদের চলবে কেমন করে?” দেখাদেখি বোনটাও কাঁদতে লাগল, “এবার আমি মারা গেলে কি করে বাঁচাবে? দোহাই মহারাজ, পিটারের মেজাজ ভয়ানক।” রাজা বললেন, “আমার মেজাজ তার চাইতেও ভয়ানক—তোদের যে মেরে ফেলি নি এই ঢের—এই নে—” বলে এক মুঠো মোহর ফেলে দিলেন।
{{gap}}পিটার বলল, “মহারাজ, এক মিনিট সবুর করুন।” এই বলে সে একটা ভাঙা শিঙের বাঁশি নিয়ে তার বোনের চোখে মুখে ফুঁ দিতে লাগল। এক মিনিটের মধ্যে মেয়েটা চোখ মেলে বড়-বড় দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে উঠে বসল। রাজা তো অবাক! তিনি বললেন, “এই শিঙেটা আমায় দিতে হবে।” পিটার কাঁদতে লাগল—বলল, “দোহাই মহারাজ, ওটা না হলে আমাদের চলবে কেমন করে?” দেখাদেখি বোনটাও কাঁদতে লাগল, “এবার আমি মারা গেলে কি করে বাঁচাবে? দোহাই মহারাজ, পিটারের মেজাজ ভয়ানক।” রাজা বললেন, “আমার মেজাজ তার চাইতেও ভয়ানক—তোদের যে মেরে ফেলি নি এই ঢের—এই নে—” বলে এক মুঠো মোহর ফেলে দিলেন।


{{gap}}রাজা বাড়ি ফিরতে ফিরতে ভাবলেন, “এবার যার উপর রাগ করব—একেবারে তলোয়ারের কোপ বসিয়ে দেব।” বাড়ি ফিরে দেখেন—নিমন্ত্রিত লোকেরা তখনো আশ্চর্য ভোজ খাবার আশায় বসে আছেন। মন্ত্রী বললেন, “মহারাজ, আহারের অন্য বন্দোবস্ত করতে বলব কি?” রাজা বললেন, “কি, এত বড় কথা! আমি করছি একরকম বন্দোবস্ত, তুমি করবে অন্য রকম?” বলেই মন্ত্রীর মাথায় এক কোপ বসিয়ে দিলেন। উজির নাজির কোটাল সব হাঁ-হাঁ করে উঠতেই রাজা ঘ্যাঁচ ঘ্যাঁচ করে তাদেরও মাথা কেটে দিলেন। চারিদিকে হুলুস্থূল পড়ে গেল। রাজা বললেন, “ভয় নেই, তোমরা এখন মজা দেখ।” বলে তিনি শিঙেটা মন্ত্রীর মুখের কাছে নিয়ে ফুঁ দিতে লাগলেন। কিন্তু ফুঁ দিলে হবে কি—মরা মানুষ কি আর বাঁচে?
{{gap}}রাজা বাড়ি ফিরতে ফিরতে ভাবলেন, 'এবার যার উপর রাগ করব—একেবারে তলোয়ারের কোপ বসিয়ে দেব।' বাড়ি ফিরে দেখেন—নিমন্ত্রিত লোকেরা তখনো আশ্চর্য ভোজ খাবার আশায় বসে আছেন। মন্ত্রী বললেন, “মহারাজ, আহারের অন্য বন্দোবস্ত করতে বলব কি?” রাজা বললেন, “কি, এত বড় কথা! আমি করছি একরকম বন্দোবস্ত, তুমি করবে অন্য রকম?” বলেই মন্ত্রীর মাথায় এক কোপ বসিয়ে দিলেন। উজির নাজির কোটাল সব হাঁ-হাঁ করে উঠতেই রাজা ঘ্যাঁচ ঘ্যাঁচ করে তাদেরও মাথা কেটে দিলেন। চারিদিকে হুলুস্থূল পড়ে গেল। রাজা বললেন, “ভয় নেই, তোমরা এখন মজা দেখ।” বলে তিনি শিঙেটা মন্ত্রীর মুখের কাছে নিয়ে ফুঁ দিতে লাগলেন। কিন্তু ফুঁ দিলে হবে কি—মরা মানুষ কি আর বাঁচে?


{{gap}}তখন রাজার হুকুমে পেয়াদা পুলিশ দৌড়ে গিয়ে পিটারকে ধরে আনল। একটা মজবুত বাক্সের মধ্যে তাকে বন্ধ করে সেই বাক্স মোটা দড়ি দিয়ে বাঁধা হল। রাজা বললেন, “পাজি পিটার—তোমার শাস্তি শোন—এই বাক্সে ভরে তিন দিন তিন রাত্রি তোমাকে ঐ পাহাড়ের উপর রাখা হবে। সেখানে রোদে পুড়ে হিমে ভিজে তুমি তোমার দুষ্টুমির কথা ভাববে—তারপর তোমাকে এই পাহাড় থেকে একেবারে সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হবে।”
{{gap}}তখন রাজার হুকুমে পেয়াদা পুলিশ দৌড়ে গিয়ে পিটারকে ধরে আনল। একটা মজবুত বাক্সের মধ্যে তাকে বন্ধ করে সেই বাক্স মোটা দড়ি দিয়ে বাঁধা হল। রাজা বললেন, “পাজি পিটার—তোমার শাস্তি শোন—এই বাক্সে ভরে তিন দিন তিন রাত্রি তোমাকে ঐ পাহাড়ের উপর রাখা হবে। সেখানে রোদে পুড়ে হিমে ভিজে তুমি তোমার দুষ্টুমির কথা ভাববে—তারপর তোমাকে এই পাহাড় থেকে একেবারে সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হবে।”


{{gap}}পিটার বলল, “আহা, মহারাজের দয়ার শরীর।”—পাহাড়ের আগায় বাক্সের মধ্যে শুয়ে পিটার মনে মনে ভাবছে, ‘এখন উপায়?’ আর মুখে চিৎকার করে গান করছে—
{{gap}}পিটার বললে, “আহা, মহারাজের দয়ার শরীর।” পাহাড়ের আগায় বাক্সের মধ্যে শুয়ে পিটার মনে মনে ভাবছে, ‘এখন উপায়?’ আর মুখে চিৎকার করে গান করছে—


{{block center|<poem>‘ধিন্‌ তাধিনা তাধেই ধেই—
{{block center|<poem>‘ধিন্‌ তাধিনা তাধেই ধেই—
স্বর্গে যাবার রাস্তা এই’—</poem>}}
স্বর্গে যাবার রাস্তা এই’—</poem>}}


{{gap}}এমনি করে দুদিন গেল। তিন দিনের দিন এক বুড়ো বিদেশী সওদাগর সেখানে এল। সে বেচারা তীর্থ করতে বেরিয়েছে, পিটারের গান শুনে ব্যাপারটা কি দেখতে এল। সওদাগর বলল, “তুমি কে ভাই? স্বর্গের রাস্তার কথা বলছিলে?” পিটার বলল, “আরে চুপ—কাউকে বোলো না, তাহলে স্বর্গে যাবার কাড়াকাড়ি পড়ে যাবে—মাঝে থেকে আমার স্বর্গে যাওয়া মাটি হবে।” সওদাগর বলল, “ভাই, তুমি একা যাবে কেন? আমায়ও একটু পথ বাত্‌লে দাও না।” পিটার বলল, "সকলের কি তা সম্ভব হয়? এই বাক্সকে মন্ত্র পড়ে এখানে রাখা হয়েছে—<noinclude>যেমন-</noinclude><noinclude>
{{gap}}এমনি করে দুদিন গেল। তিন দিনের দিন এক বুড়ো বিদেশী সওদাগর সেখানে এল। সে বেচারা তীর্থ করতে বেরিয়েছে, পিটারের গান শুনে ব্যাপারটা কি দেখতে এল। সওদাগর বলল, “তুমি কে ভাই? স্বর্গের রাস্তার কথা বলছিলে?” পিটার বলল, “আরে চুপ—কাউকে বোলো না, তাহলে স্বর্গে যাবার জন্য কাড়াকাড়ি পড়ে যাবে—মাঝে থেকে আমার স্বর্গে যাওয়া মাটি হবে।” সওদাগর বলল, “ভাই, তুমি একা যাবে কেন? আমায়ও একটু পথ বাত্‌লে দাও না।” পিটার বলল, "সকলের কি তা সম্ভব হয়? এই বাক্সকে মন্ত্র পড়ে এখানে রাখা হয়েছে—<noinclude>যেমন-</noinclude><noinclude>