বোধোদয়/ঈশ্বর ও ঈশ্বর সৃষ্ট পদার্থ
বোধোদয়।
....
ঈশ্বর ও ঈশ্বরসৃষ্ট পদার্থ।
আমরা ইতস্ততঃ যে সমস্ত বস্তু দেখিতে পাই সে সমুদায়কে পদার্থ কহে। পদার্থ তিন প্রকার চেতন, অচেতন, উদ্ভিদ। যে সকল বস্তুর জীবন আছে এবং যথা ইচ্ছা গমনাগমন কবিতে পারে তাহারাই চেতন পদার্থ; যেমন মনুষ্য-গো, অশ্ব, পক্ষী, পতঙ্গ, কীট ইত্যাদি। যে সকল বস্তুর জীবন নাই আর যেখানে রাখ সেই খানেই থাকে, এক স্থান হইতে অন্য স্থানে যাইতে পারে না তাহাদিগকে অচেতন পদার্থ কহে; যেমন ধাতু, প্রস্তর, মৃত্তিকা, জল, ঘটী, বাটী, দোয়াত, কলম, পুস্তক, কাচ ইত্যাদি। আর যে সকল বস্তু ভূমিতে জন্মে তাহারা উদ্ভিদ পদার্থ; যথা তরু, লতা, গুল্ম, তৃণপ্রভূতি।
ঈশ্বর সকল পদার্থেরই সৃষ্টিকর্ত্তা। তিনিই প্রথমে চেতন, অচেতন, উদ্ভিদ সমুদায় পদার্থ সৃষ্টি করিয়াছেন। পৃথিবী, চন্দ্র, সূর্য্য, সমুদ্র, পর্ব্বত, তরু, লতা, মনুষ্য, পশু, পক্ষী, কীট, পতঙ্গ প্রভৃতি সকলই তাঁহার সৃষ্টি। এই নিমিত্ত ঈশ্বরকে সৃষ্টিকর্ত্তা কহে।
ঈশ্বর নিরাকার চৈতন্যস্বরূপ। তাঁহাকে দেখিতে পাওয়া যায় না, কিন্তু সর্ব্বদা সর্ব্বত্র বিদ্যমান আছেন। আমরা যাই করি তিনি তাহা দেখিতে পান; যাহা মনে ভাবি তাহাও জানিয়ে পারেন: ঈশ্বর পরম দয়ালু। তিনি যাবতীয় জীব জন্তুকে আহার দেন ও রক্ষা করেন। অতএব ঈশ্বরকে ভক্তি, স্তব ও প্রণাম করা আমাদিগের কর্ত্তব্য কর্ম্ম।