বোধোদয়/গণন—অঙ্ক
গণন-অঙ্ক।
বস্তুর সংখ্যা করিবার ও মূল্য কহিবার নিমিত্ত গণনা জানা অত্যন্ত আবশ্যক। সচরাচর সকলে কয়েকটী কথা দ্বারা গণনা করিয়া থাকে। সে কয়েকটা কথা এই; এক, দুই, তিন, চারি, পাঁচ, ছয়, সাত, আট, নয়, দশ। কিন্তু যখন পুস্তকে অথবা অন্য কোন স্থানে কেহ কোন বস্তুর সঙ্ঘ্যা পাত করে, তখন সে ব্যক্তি এক,দুই ইত্যাদি শব্দ না লিখিয়া তাহা অপেক্ষা সঙ্ক্ষিপ্ত প্রণালী অবলম্বন করে; অর্থাৎ, ঐ সকল শব্দ না লিখিয়া তাহার স্থানে এক এক অঙ্কপাত করে; এই অঙ্ক দ্বারা সেই সেই শব্দের কার্য্য নির্ব্বাহ হয়।
অঙ্ক সমুদায়ে দশটী মাত্র; তাহদের আকার ও নাম এই;
১, |
২, |
৩, |
৪, |
৫, |
৬, |
৭, |
৮, |
৯, |
০, |
অন্তিম (০) অঙ্ককে শূন্য কহে, অর্থাৎ উহা কিছুই নয়; যেহেতু অন্য নয়টী অঙ্কের আশ্রয় ব্যতিরেকে কেবল উহার দ্বারা কোম সঙ্খ্যার বোধ হয় না। কিন্তু ১ এই অঙ্কের পর বসাইলে, অর্থাৎ এইরূপ ১০ লিখিলে দশ হয়। ২ এই অঙ্কের পর বসাইলে (২০) কুড়ি হয়। ৩ এই অঙ্কের পর (৩০) ত্রিশ। ৪ এই অঙ্কের পর (৪০) চল্লিশ। ৫ এই অঙ্কের পর (৫০) পঞ্চাশ ইত্যাদি। আর যদি ১ এই অঙ্কের পর দুই শূন্য বসান যায়, অর্থাৎ এইরূপ ১০০ লিখা যায় তবে তাহাতে এক শত বুঝায়। ১ লিখিয়া তিন শূন্য বসাইলে, অর্থাৎ এইরূপ ১০০০ লিখিলে সহস্র বুঝায়।
১, ৩, ৫, ৭, ৯, ১১, ১৩, ১৫ ইত্যাদি অঙ্ককে বিষম অঙ্ক কহে। আর ২, ৪, ৬, ৮, ১০, ১২, ১৪, ১৬ ইত্যাদি অঙ্ককে সম অঙ্ক কহে।
অঙ্ক ও শব্দ দ্বারা যেরূপে গণনা করা যায় তাহার প্রণালী নিম্নে প্রদর্শিত হইতেছে;
১ এক |
১৯ উনিশ |
৩৭ সাঁইত্রিশ |
|
৫৫ পঞ্চান্ন |
৭২ বায়াত্তর |
৮৯ উননব্বই |
|
ইহা ভিন্ন অর্ব্বুদ, বৃন্দ, খর্ব্ব, প্রভৃতি আরও কতকগুলি সঙ্খ্যা আছে, এস্থলে তাহাদের উল্লেখ করা অনাবশ্যক।
১, ২, ৩, ৪, ৫ ইত্যাদি অঙ্ক যেমন সঙ্খ্যা বাচক, সেইরূপ প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ পঞ্চম ইত্যাদি পূরণ বাচকও হয়। যাহা দ্বারা সঙ্খ্যা পূর্ণ হয় তাহাকে পূরণবাচক অঙ্ক কহে। যদি দুটি রেখা লেখা যায় তবে শেষের টীকে দ্বিতীয় অর্থাৎ দুই সঙ্খ্যার পূরক বলিতে হইবেক, আর আগের টীকে প্রথম; কারণ শেষে রেখাট না লিখিলে দুই সঙ্খ্যা পূর্ণ হয় না, এবং আগের রেখাটী না থাকিলে এক সংখ্যা সম্পন্ন হয় না। এইরূপ তিন রেখা॥। লিখিলে শেষের টীকে তৃতীয় অর্থাৎ তিন সংখ্যার পূরক বলিতে হইবেক; কারণ শেষের রেখাটী না থাকিলে তিন সংখ্যা পূর্ণ হয় না। এবং চারি রেখা॥॥ লিখিলে শেষের টীকে চতুর্থ রেখা; পাঁচ রেখ॥॥। লিখিলে শেষের টীকে পঞ্চম রেথা কহা যায়; কারণ শেষের দুইটী রেখা না থাকিলে চারি ও পাঁচ সংখ্যা পূর্ণ হয় না।
১, ২, ৩, ৪, ৫ ইত্যাদি অঙ্ক যখন পূরণার্থে লিখিত হয় তখন ঐ ঐ অঙ্কের শেষে প্রথম, দ্বিতীয়, ইত্যাদি পূরণ বাচক শব্দের শেষ অক্ষর যোগ করিয়া দেওয়া উচিত; তাহা হইলে অর্থ প্রতীতির কোন বৈলক্ষণ্য ঘটে না। যেমন ১ম, ২য়, ৩য়, এই রূপ অক্ষর সংযোগ করিয়া লিখিলে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, বুঝাইবেক; অক্ষর সংযোগ না করিলে এক, দুই, তিন; কি প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়; ইহা স্পষ্ট বোধ হওয়া দুর্ঘট। যেহেতু যদি কেহ এরূপ লিখে “আমি চৈত্র মাসের ৩ দিবসে এই কর্ম্ম করিস্নাছিলাম” তাহা হইলে তিন দিবসে, অথবা তৃতীয় দিবসে, কিছুই নিশ্চিত বুঝা যাইবেক না। কেহ এমত বুঝিবেক, ঐ কর্ম্ম করিতে তিন দিবস লাগিয়াছিল; কেহ বোধ করিবেক, তৃতীয় দিবসে ঐ কর্ম্ম করা হইয়াছিল। ফলতঃ যে লিগিয়াছিল তাহার অভিপ্রায় কি, নির্ণয় হওয়া কঠিন। কিন্তু ৩ এই অক্ষরের পরে যদি য় এই অক্ষর লেখা থাকে, তবে আর কোন সংশয় থাকে না, কেবল তৃতীয় বুঝায়।পূরণবাচক অঙ্ক লিখিবার ধারা।
১ম |
৯ম |
১৭শ |
২৫শ |
|
১লা |
৯ই |
১৭ই |
২৫এ |
|