(১০)


মূলতান।

 বজাও রে মোহন বাঁশী!
সারা দিবসক বিরহদহন-দুখ,
 মরমক তিয়াষ নাশি।
রিঝ[১] মন-ভেদন বাঁশরি-বাদন
 কঁহা শিখলিরে কান?
হানে থির থির, মরম অবশকর
 লহু লহু মধুময় বাণ।
ধস ধস করতহ উরহ বিয়াকুলু
 ঢুলু ঢুলু অবশ-নয়ান;
কত কত বরষক বাত সোঁয়ারয়[২]
 অধীর করয় পরাণ।

কত শত আশা পূরল না বঁধু
 ও মুখ করল পয়ান।
পহুগো[৩] কত শত পিরীত-যাতন
 ছিয়ে বিঁধাওল বাণ।
হৃদয় উদাসয়, নয়ন উছাসয়
 দাৰুণ মধুময় গান।
সাধ যায় বঁধু, যমুনা বারিম
 ডারিব দগধ-পরাণ।
সাধ যায় পহু, রাখি চরণ তব
 হৃদয় মাঝ হৃদয়েশ!
হৃদয়-জুড়াওন বদন-চন্দ্র তব
 হেরব জীবন শেষ।
সাধ যায় বঁধু, তোঁহার দেহ
 মিলাওব দেহ ম মোর।

মিলন সনে জনু বিরহ মিলব রে
 দিবস রাতি ভরি ভোর।[৪]
সাধ যায় বঁধু! দুহুঁ দুহুঁ মেলয়ি
 ইঁহসে করয়ি পয়ান,
মেঘ মেঘ পর হরখে ভরমিব
 দুঁহুঁ মিলি করইব গান।
সাধ যায় ইহ চাঁদম কিরণে,
 কুসুমিত কুঞ্জ বিতানে,
বসন্ত বায়ে, প্রাণ মিশায়ব,
 বাঁশিক সুমধুর গানে।
প্রাণ ভৈবে মঝু বেণু-গীতময়,
 রাধাময় তব বেণু।
জয় জয় মাধব, জয় জয় রাধা,
 চরণে প্রণমে ভানু।

  1. রিঝ—হৃদয়
  2. সোঁয়ারয়—স্মরণ করাইয়া দেয়
  3. পহুগো—প্রভু।
  4. বিরহ যেন মিলনের সঙ্গে মিলিয়। থাকিবে।