অবশেষ

বাহির পথে বিবাগী হিয়া
কিসের খোঁজে গেলি,
আয়রে ফিরে আয়।
পুরানো ঘরে দুয়ার দিয়া,
ছেঁড়া আসন মেলি’
বসিবি নিরালায়।
সারাটা বেলা সাগর ধারে
কুড়ালি যত নুড়ি,
নানারঙের শামুক ভারে
বোঝাই হ’লো ঝুড়ি,
লবণ পারাবারের পারে
প্রখর তাপে পুড়ি’
মরিলি পিপাসায়;
ঢেউয়ের দোল তুলিল রোল
অকূলতল জুড়ি’,
কহিল বাণী কী জানি কী ভাষায়।
আয়রে ফিরে আয়॥

বিরাম হ’লো আরামহীন
যদিরে তোর ঘরে,
না যদি রয় সাথী,
সন্ধ্যা যদি তন্দ্রা-লীন
মৌন অনাদরে,
না যদি জ্বালে বাতি;
তবু তো আছে আঁধার কোণে
ধ্যানের ধনগুলি,
একেলা বসি আপনমনে
মুছিবি তা’র ধূলি,
গাঁথিবি তা’রে রতনহারে
বুকেতে নিবি তুলি’
মধুর বেদনায়।
কানন-বীথি ফুলের রীতি
না হয় গেছে ভুলি,
তারকা আগে গগন কিনারায়
আয়রে ফিরে আয়॥

১৯ চৈত্র, ১৩৩৪