অসমাপ্ত

বোলো তা’রে, বোলো,
এতদিনে তা’রে দেখা হ’লো।
তখন বর্ষণ শেষে
ছুঁয়েছিলো রৌদ্র এসে
উন্মীলিত গুল্-মোরের থোলো।
বনের মন্দির মাঝে
তরুর তম্বুরা বাজে,
অনন্তের উঠে স্তবগান,
চক্ষে জল ব’হে যায়,
নম্র হ’লো বন্দনায়
আমার বিস্মিত মনপ্রাণ॥


দেবতার বর
কত জন্ম কত জন্মান্তর
অব্যক্ত ভাগ্যের রাতে
লিখিছে আকাশ পাতে
এ-দেখার আশ্বাস-অক্ষর।

অস্তিত্বের পারে পারে
এ-দেখার বারতারে
বহিয়াছি রক্তের প্রবাহে।
দূর শূন্য দৃষ্টি রাখি’
আমার উন্মনা আঁখি
এ-দেখার গূঢ় গান গাহে॥


বোলো আজি তা’রে,
চিনিলাম তোমারে আমারে।
হে অতিথি, চুপে চুপে
বারম্বার ছায়ারূপে
এসেছো কম্পিত মোর দ্বারে।
কত রাত্রে চৈত্রমাসে,
প্রচ্ছন্ন পুষ্পের বাসে
কাছে-আসা নিঃশ্বাস তোমার
স্পন্দিত ক’রেছে জানি
আমার গুণ্ঠন খানি,
কাঁদায়েছে সেতারের তার॥

বোলো তা’রে আজ,
“অন্তরে পেয়েছি বড়ো লাজ।
কিছু হয় নাই বলা,
বেধে গিয়েছিলো গলা,
ছিল না দিনের যোগ্য সাজ।
আমার বক্ষের কাছে
পূর্ণিমা লুকানো আছে,
সেদিন দেখেছো শুধু অমা।
দিনে দিনে অর্ঘ্য মম
পূর্ণ হবে, প্রিয়তম,
আজি মোর দৈন্য করো ক্ষমা॥”


২৭ শ্রাবণ, ১৩৩৫