মহুয়া/ভাবিনী
< মহুয়া
(পৃ. ১৩০-১৩১)
ভাবিনী
ভাবিছ যে-ভাবনা একা-একা
দুয়ারে বসি’ চুপে চুপে
সে যদি সম্মুখে দিত দেখা
মূর্ত্তি ধরি’ কোনো রূপে—
হয়তো দেখিতাম শুকতারা
দিবস পার হ’য়ে দিশাহারা
এসেছে সন্ধ্যার কিনারাতে
সাঁঝের তারাদের দলে,
উদাস স্মৃতিভরা আঁখিপাতে
উষার হিমকণা জ্বলে।
হয়তো দেখিতাম বাদলে যে
এনেছিলো শ্রাবণে বাণী
শরতে জলভার এলো ত্যেজে
শুভ্র সেই মেঘখানি।
চলে সে সন্ন্যাসী দিশে দিশে
রবির আলোকের পিয়াসী সে;
আকাশ আপনারি লিপি লিখে’
পড়িতে দিল যেন তা’রে,
সে তাই চেয়ে চেয়ে অনিমিখে
বুঝিতে বুঝি নাহি পারে।
হয়তো দেখিতাম রজনীতে
সে যেন সুরহারা বীণা
বিজন দীপহীন দেহলিতে
মৌন মাঝে আছে লীনা।
একদা বেজেছিলো যে-রাগিণী
তা’রে সে ফিরে যেন নিল চিনি’
তারার কিরণের কম্পনে
নীরব আকাশের মাঝে,
সুদুর সুরসভা-অঙ্গনে
সুরের স্মৃতি যেথা বাজে!
১৫ আশ্বিন, ১৩৩৫