মায়া

চিত্তকোণে ছন্দে তব
বাণীরূপে
সঙ্গোপনে আসন লবো
চুপে চুপে।
সেইখানেতেই আমার অভিসার,
যেথায় অন্ধকার
ঘনিয়ে আছে চেতন বনের
ছায়াতলে,
যেথায় শুধু ক্ষীণ জোনাকির
আলো জ্বলে॥

সেথায় নিয়ে যাবো আমার
দীপশিখা,
গাঁথ্‌বো আলো-আঁধার দিয়ে
মরীচিকা।
মাথা থেকে খোঁপার মালা খুলে
পরিয়ে দেবো চুলে;
গন্ধ দিবে সিন্ধুপারের
কুঞ্জবীথির,
আন্‌বে ছবি কোন্ বিদেশের
কী বিস্মৃতির॥

পরশ মম লাগ্‌বে তোমার
কেশে বেশে,
অঙ্গে তোমার রূপ নিয়ে গান
উঠ্‌বে ভেসে।
ভৈরবীতে উচ্ছল গান্ধার,
বসন্ত বাহার,
পূরবী কি ভীমপলাশী
রক্তে দোলে—
রাগরাগিণী দুঃখে সুখে,
যায়-যে গ’লে॥


হাওয়ায় ছায়ায় আলোয় গানে
আমরা দোঁহে
আপন মনে র’চ্‌বো ভুবন
ভাবের মোহে।
রূপের রেখায় মিল্‌বে রসের রেখা,
মায়ার চিত্রলেখা,—
বস্তু-চেয়ে সেই মায়া তো
সত্যতর,
তুমি আমায় আপ্‌নি র’চে
আপন করো॥

২৪ শ্রাবণ, ১৩৩৫