মেঘের খেলা

স্বপ্ন যদি হ’ত জাগরণ,
সত্য যদি হ’ত কল্পনা,
তবে এ ভালোবাসা  হ’ত না হত-আশা
কেবল কবিতার জল্পনা।

মেঘের খেলা-সম হ’ত সব
মধুর মায়াময় ছায়াময়।
কেবল আনাগোনা,  নীরবে জানাশোনা,
জগতে কিছু আর কিছু নয়।

কেবল মেলামেশা গগনে
সুনীল সাগরের পরপারে—
সুদূরে ছায়াগিরি  তাহারে ঘিরি ঘিরি,
শ্যামল ধরণীর ধারে ধারে।

কখনো ধীরে ধীরে ভেসে যায়,
কখনো মিশে যায় ভাঙিয়া—
কখনো ঘননীল  বিজুলি-ঝিলিমিল,
কখনো উষারাগে রাঙিয়া।

যেমন প্রাণপণ বাসনা
তেমনি বাধা তার সুকঠিন—

সকলি লঘু হয়ে  কোথায় যেত বয়ে,
ছায়ার মতো হ’ত কায়াহীন।

চাঁদের আলো হ’ত সুখহাস,
অশ্রু শরতের বরষণ—
সাক্ষী করি বিধু  মিলন হত মৃদু
কেবল প্রাণে প্রাণে পরশন।

শান্তি পেত এই চিরতৃষা
চিত্ত চঞ্চল সকাতর—
প্রেমের থরে থরে,  বিরাম জাগিত রে,
দুখের ছায়া-মাঝে রবিকর।

রােজ্ ব্যাঙ্ক্। খিরকি ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৮৮৯