মিঠেকড়া/জ্ঞানী
বরেনবাবু মস্ত জ্ঞানী, মস্ত বড় পাঠক,
পড়েন তিনি দিন রাত্তির গল্প এবং নাটক,
কবিতা আর উপন্যাসের বেজায় তিনি ভক্ত,
ডিটেকটিভের কাহিনীতে গরম করেন রক্ত;
জানেন তিনি দর্শন আর নানা রকম বিজ্ঞান
জ্যোতিষশাস্ত্র জানেন তিনি, তাইতাে আছে দিজ্ঞান;
ইতিহাস আর ভূগােলেতে বেজায় তিনি দক্ষ,
এসব কথা ভাবলেই তার ফুলতে থাকে বক্ষ।
সব সময়েই পড়েন তিনি, সকাল থেকে সন্ধ্যে,
ছুটির দিনে পড়েন তিনি, পড়েন পূজোর বন্ধে।
মাঝে মাঝে প্রকাশ করেন গৃঢ় জ্ঞানের তত্ব
বিদ্যাখানা জাহির করেন বরেন্দ্রনাথ দত্ত ও
হঠাৎ ঢুকে রান্না ঘরে বলেন, ওসব কী রে?
ভাইঝি গীতা হেসে বলে, এসব কালাে জিরে।
বরেনবাবু রেগে বলেন, জিরে তাে হয় সাদা,
তিলও কালাে, জিরেও কালাে পেয়েছিস কি গাধা?
রান্না করার সময় কেবল পুড়িয়ে হাজার লঙ্কা,
হনুমতী হয়েছিস তুই, হচ্ছে আমার শঙ্কা।
হঠাৎ ছােট্ট খােকাটাকে কাঁদতে দেখে, দত্ত
খােলেন বিরাট বইয়ের পাতা নামটি—“মনস্তত্ব”।
খুঁজতে খুঁজতে বরেনবাবু হয়ে গেলেন সারা
বুঝলেন না, কেন খােকা মাথায় করছে পাড়া।
হঠাৎ এসে ভাইঝি গীতা দুধের বাটি নিয়ে,
খাইয়ে দিয়েই পাঁচ মিনিটে দিলাে ঘুম পাড়িয়ে
বরেনবাবু ভাবেন, খােকার কেমন তরাে ধারা,
আধ ঘণ্টার চেঁচামেচি পাঁচ মিনিটেই সারা?
বরেনবাবুর কাছে আরাে বিরাট একটি ধাঁধা,
হলদে চালের রঙ কেন হয় ভাত হলে 'পর সাদা?
পাথর বাটির গরম জিনিস ঠাণ্ডা হয় তা জানি,
পাহাড় দেশে গরম কেন এমন ছটফটানি?
পথ চলতে ভেবে এসব ভিজে ওঠেন ঘামে,
মানিকতলা যেতে চাপেন ধর্মতলার ট্রামে।
বরেনবাবু; জানেন কিন্তু নানা রকম বিজ্ঞান,
জ্যোতিষশাস্ত্র জানেন তিনি তাইতাে এমন দিক্-জ্ঞান