মেয়েলি ব্রত ও কথা/সঙ্কট মঙ্গলচণ্ডী
সঙ্কট মঙ্গলচণ্ডী ব্রত।
এই ব্রত অগ্রহায়ণ মাসে যে কোন মঙ্গলবারে একবার কর্ত্তব্য। অগ্রহায়ণে নানাবিধ বার-ব্রত। এজন্য অগ্রহায়ণে করতে না পারিলে মাঘ মাসেও করা যাইতে পারে। ইহা কেবল সধবাদেরই কর্ত্তব্য।
“শেখর” বা অর্ঘ্য নির্ম্মণের বিশেষত্ব পূর্ব্বেই উল্লিখিত হইয়াছে। কলা-পাতার পরিবর্ত্তে ক্ষুদ্র রেশম বস্ত্র খণ্ড দ্বারা আতপ তণ্ডুল ও দুর্ব্বা বাঁধিতে হয়। এই ব্রত একজন, দুইজন অথবা চারি জন সধবা রমণী একত্র করিতে পারেন। তিনজনে করিবে না।
পূজান্তে ব্রত-চারিণী স্বয়ং রন্ধন করিয়া আহার করিবেন। রন্ধন সময়ে উপবেশন প্রণালী একটু কষ্টকর। দক্ষিণ জানুর নিম্নে দক্ষিণ হস্ত বাড়াইয়া সমস্ত কার্য সম্পন্ন করিতে হয়। ইহার নাম সঙ্কটাবস্থা। যতজন ব্রত করিবেন ততবার স্বতন্ত্রভাবে অন্ন পাক করিতে হইবে। ব্যঞ্জনাদি একত্র হইলে দোষ নাই। এক জনেই সকলের রান্না করিতে পারেন, অপর ব্রতচারিণীগণ সঙ্কটাবস্থায় উপবিষ্ট হইয়া বাটন বাটা কুটনো কাটা প্রভৃতি রন্ধনের সহায়তা করিবেন। এই প্রকারে রন্ধন, ভোজন, আচমন ও তাম্বুল সেবনের পর একজন অপরকে বলিবেন, “সঙ্কটে পার হই?” তিনি উত্তর দিবেন, “হও”। এইরূপে তিনবার অনুমতি প্রার্থনাসূচক প্রশ্ন ও অনুকুল উত্তর হইলে সঙ্কটাবস্থা পরিত্যাগ করিয়া গাত্রোখান করিবেন। এই প্রকারে একে একে সকলেই সঙ্কট-মুক্ত হইবেন। ব্রতের কথা রন্ধনের সময় সঙ্কটাবস্থায় উপবিষ্ট হইয়া শুনিতে হয়। রন্ধনে “সঙ্কট”সঙ্গিনী পাইলে সুবিধা এই যে কথা শ্রবণ ও গল্প গুজবে উপবেশন ক্লেশের কিঞ্চিৎ লাঘব হয়।
সঙ্কট-মঙ্গলচণ্ডী ব্রত কথা।
এক ছিল রাজা; তাঁর ছিল সাত রাণী। রাজার ছেলে পুলে কিছুই হয় নাই; এজন্য তিনি বড় দুঃখিত থাকিতেন। একদিন রাজা সকালে উঠে দেখেন, উঠনে ঝাঁট দেওয়া হয় নাই। তিনি মহা রাগান্বিত হ’য়ে হুকুম দিলেন, ঝাড়ুদার মেতরকে ধ’রে নিয়ে এস; আমি এখুনি জল্লাদ দিয়ে তার গর্দ্দানা নেবো। হুকুম পেয়ে কোটাল মেতরবাড়ী ছুটে গেল। গিয়ে দেখলে, মেতর খেতে বসেচে। কোটাল বল্লে, হ্যাঁরে তোর আক্কেলটা কি, রাজবাড়ীর কাজ ফেলে তুই কিনা এত সকালে খেতে বসেছিস্। ঝাড়ুদার উত্তর কল্লে, গোলামের বেয়াদবি মাফ করেন তো বলি। আমায় অনেক কাচ্চা বাচ্চা নিয়ে ঘর কত্তে হয়, সকালে ওই আঁটকুড়ে অনামুখো রাজার মুখ দেখে আমাদের একদিনও খাওয়াটা ভাল হয় না। তাই আজ মনে করনু, আগে খেয়ে তার পর রাজবাড়ী যাব। মেতরের মুখে এই কথা শুনে কোটাল অবাক্ হয়ে গেল। ফিরে এসে রাজাকে বল্লে, মহারাজ ভয়ে বলবো, কি নির্ভয়ে বলবো? রাজা বল্লেন, ভয় আবার কেন, নির্ভয়ে বল। কোটাল মেতরের আস্পর্দ্ধার কথা রাজাকে সব জানালে। শুনে, রাজার মুখ এতটুকু হয়ে গেল। তিনি মনের দুঃখে ভাবলেন, যা, আর এ এ মুখ কাকেও দেখাব না। সামান্য মেতরও আমায় ঘেন্না করে! রাজা কা’কেও কিছু না বলে, একেবারে অন্দরে গিয়ে দরজা বন্ধ ক'রে লেপমুড়ি দিয়ে শুয়ে রইলেন। এমন সময়ে আজ সভায় এক সন্ন্যাসী ঠাকুর উপস্থিত। সন্ন্যাসী উজীর নাজীরকে বল্লেন, এখনি রাজাকে আমার আগমন সংবাদ দাও। তারা সকলে ভাবলে, এখন উপায়! সাধু সন্ন্যাসীর কথা অবহেলা করা অকল্যাণ, অথচ রাজাকে খবর দেওয়া কারু সাধ্যি নয়। অবশেষে সন্ন্যাসী এসেছেন শুনে রাণীরা অনেক সাধ্যিসাধনা করে রাজাকে বাইরে পাঠিয়ে দিলেন। সন্ন্যাসী বল্লেন, 'ওহে রাজা, আমি সব জান্তে পেরেছি, তোমার আর চিন্তা নেই। তুমি এক কাজ কর। এই শিকড়টী তোমায় দিলুম, মধু আর পানের রস দিয়ে রাণীদের খাইয়ে দাও; তবেই তাঁদের ছেলে হবে। কিন্তু তুমি এই সত্য কর, আমার পছন্দ মত একটী ছেলে আমাকে দান কর্ব্বে। রাজা সম্মত হ'লেন। মনে ভাবলেন, সাতটী হ’লে একটী দেবো তা আর এমন বেশী কি।
সন্ন্যাসী বিদায় হইলেন। রাজা শিকড় নিয়ে রাণীদেহে দিলেন। ছোট রাণীর উপরই রাজার প্রাণের টান একটু বেশী। এজন্য আর ছ’রাণী তাকে না দিয়ে নিজেরাই সব শিকড়ের অসুদ খেয়ে ফেলে। তার পর যখন ছোট রাণী এসে অসুদ চাইলে, তখন তারা বল্লে, সে কি বোন্, তুমি এতক্ষণ কোথায়। ছিলে? তোমাকে না খুঁজেছি এখন জায়গা নেই। যাও, ঐ শিলনোড়া ধুয়ে খাওগে; এখনো ওতে একটু লেগে অবিশ্যি রয়েছে। ছোট রাণী অতি ভাল মানুষ, তিনি তাই কল্লেন।
তার পর দু’মাস, তিন মাস, চার মাস গুণতে গুণতে নয় মাস চলে গেল। দশম মাসে ছ’রাণীর ছটী ছেলে হলো। কিন্তু কোনটাই সর্ব্বাঙ্গসুন্দর নয়। কা’রও কাণা, কারও খোঁড়া, কা’রও বা কুঁজো এইরূপ ছ’রাণীর ছ’ছেলে হলো। আর ছোট রাণীর? তিনি একটী শঙ্খ প্রসব কল্লেন! রাজা বল্লেন, এদের যা হোক মানুষের চেহারা হয়েছে; ছোট রাণীর এটা কি হলো। রাজা আর ছোট রাণীর কাছে ঘেঁসলেন না। ছোট রাণী মনের দুঃখে, সতীনদের বাক্যিযন্ত্রণা এড়াবার জন্য রাজবাড়ী ভাগ করে তাঁর কোলের শাঁকটী নিয়ে কাছেই এক কুঁড়ে ঘরে বাস কত্তে লাগলেন।
এইরূপে কিছু দিন গেল। ছোট রাণীর শাঁক ক্রমেই বাড়তে লাগলো। রাত্তিরে ঘুমের ঘোরে তিনি টের পেতেন কোন শিশু যেন তাঁর বুকের দুধ চুষে খাচ্চে। ঘুম ভাঙ্গলে কিছুই দেখতে পেতেন না। আর তাঁর বিছানা শিশুসন্তানের বাহ্য-প্রস্রাবে নোংরা হইত। একদিন রেতে তিনি ঘুমের ভান করে শুয়ে আছেন, হঠাৎ দেখতে পেলেন শাঁকের ভেতর থেকে এক পরম সুন্দর বালক বের হয়ে খেলা কচ্চে। যেই দেখা আর অমনি তিনি তার হাত ধরে ফেলে বল্লেন, সোণারচাঁদ ছেলে আমার! তোমার মতন ছেলে যার, তার এই দুর্দ্দশা! আর তোমায় আমি ছাড়বো না। এই ব’লে তিনি, বালক শাঁকের ভেতর আর না লুকোয় এইজন্যে, শাঁকটী ছুড়ে ফেলে দিলেন। ছেলে বল্লে, মা! তুমি কি করলে, আজই সেই সন্ন্যেসীর মাথায় টনক পড়বে, আমাকে এসে নে যাবে। অমন সুন্দর ছেলের মুখে মধুর ‘মা’ ডাক শুনে ছোট রাণী আনন্দে আত্মহারা হলেন। তিনি ভাবলেন, আগেতো রাজাকে তাঁর ছেলে দেখাইগে, তার পরে অদেষ্টে যা থাকে হবে। মা মঙ্গলচণ্ডীর তার নাম স্মরণ ক’রে খুব ভোরে উঠে, ছোট রাণী ছেলে নিয়ে রাজার কোলে দিলেন। রাজা দেখলেন, ছেলেতো নয়, যেন কার্ত্তিক। তিনি আনন্দে অধীর হ’য়ে বলেন, এই ছেলেই রাজপুত্র হ’বার যুগ্যি। এমনি সময়ে দো’রে সেই সন্ন্যাসী ঠাকুর উপস্থিত। সন্ন্যাসীকে দেখে রাজার প্রাণ যেন উড়ে গেল। তাঁর মনে যেন অন্ধকমুনির শাপ জেগে উঠলো। তিনি ছোট রাণীর ছেলেকে একটুখানি আড়ালে রেখে আর ছ’ছেলেকে সম্মুখে দাঁড় করালেন। সন্ন্যাসী সামনে যাকে দেখলেন সেই ছেলেকে নিয়ে তখুনি বিদায় হলেন। কিছুদুর গিয়ে সন্ন্যাসী ছেলেকে জিজ্ঞাসা কল্লেন, তুমি সোজা পথে যাবে, কি বাঁকা পথে যাবে? বাঁকা পথে জঙ্গল ও বাঘ ভালুকের ভয়। ছেলেটা বল্লে, আমি রাজার বেটা রাজা, আমি কেন মিছিমিছি বাঘ ভালুকের মুখে মারা যাব? সেই পথে চল যে পথে কোন উত্ন নেই। উত্তর শুনে সন্ন্যাসী রাজার কাছে ফিরে এসে বল্লেন, এ ছেলেতে আমার কাজ নাই, আমারটা আমাকে দাও। এই ব’লে, তাহার হাতে শাঁক ছিল, তাতে ফু দিয়ে ‘শঙ্খনাথ বুটেশ্বর’ ব’লে ডাকতেই ছোট রাণীর ছেলে খেলা ফেলে ছুটে এলো। সন্ন্যাসী তাকে নিয়ে চ’লে গেলেন। রাজা ও ছোট রাণীর মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। রাজা কাঁদতে লাগলেন। ছোট রাণী দুর্গা নাম জপ কত্তে কত্তে গলায় আঁচল দিয়ে বল্তে লাগলেন, মা মঙ্গলচণ্ডি! এ সঙ্কট হ’তে উদ্ধার কর। পাড়ার পাঁচ মেয়ে এসে ছোট রাণীকে বল্লে, তুমি সঙ্কট মঙ্গলচণ্ডীর ব্রত কর; তবেই ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসবে।
এদিকে, কিছুদূর গিয়ে সন্ন্যাসী শঙ্খনাথ বুটেশ্বরকে জিজ্ঞেস কল্লেন, তুমি সোজা পথে যাবে, কি বাঁকা পথে যাবে? বাঁকা পথে জঙ্গল ও বাঘ ভালুকের ভয়। শঙ্খনাথ বল্লে, আমি রাজপুত্র, কা’কেও ভয় করি না; আর শিকার করাই রাজধর্ম্ম। তুমি বাঘ ভালুকের রাস্তায় আমাকে নিয়ে চল। সন্ন্যাসী তুষ্ট হ’লেন। আবার অনেক দূর গিয়ে জিজ্ঞেস কল্লেন, এ পথে। চোরের ভয়, ও পথে ডাকা’ত; কোন্ পথে যাবে? শঙ্খনাথ। বল্লে, আমি আগে ডাকা’ত শাসন করবো, ডাকা’তের পথে চল। সন্ন্যাসী তুষ্ট হ’লেন; মনে ভাবলেন, ছেলেটী মা’য়ের পূজোয় যুগ্যি বটে।
এইরূপে চলিতে চলিতে, তিন চার রাজার রাজ্য পার হ’য়ে তাঁরা এক ভীষণ অরণ্যে প্রবেশ করিলেন। সেখানে এক মন্দিরের ভিতর কালীমূর্ত্তি, আর সন্ন্যাসীর থাকিবার এক খানি ঘর। উভয়ে স্নান করিলেন। স্নানের পর সন্ন্যাসী রাজপুত্রকে বল্লেন, তুমি আমার ঘরের ভিতর খানিক বিশ্রাম কর। ঘরের ভিতর সব দিকে দেখতে পার, কিন্তু সাবধান, উত্তর দিকটা দেখিও না। এই বলিয়া তিনি মন্দিরে পূজার আয়োজনে বসিয়া গেলেন। শঙ্খনাথের মনে কেমন একটা সন্দেহ জন্মালো। সব দিক দেখতে পারবে, তাতে কিছু দোষ নেই, যত মানা হ’লো কি-না ওই উত্তর দিকটায়। এই ভাবিয়া তিনি প্রথমেই উত্তর দিকের দরজা খুলিলেন। খুলিয়া দেখেন একটা রক্তের পুকুরে অসংখ্য কাটামুণ্ড পদ্মের মত ভাসচে। রাজপুত্রকে দেখে তারা খিল্খিল্ করে হাসতে লাগলো। শঙ্খনাথ আশ্চর্য্য হ’য়ে বলেন, তোমরা। কে? আর আমাকে দেখে হাঁসছো কেন? কাটা মুণ্ডগুলি বল্লে, আজই আমাদের দলে আর একটী লোক পাব এই ভেবে। আমাদের হাসি এলো। সন্ন্যাসী আমাদের দেবীর কাছে বলি দিয়েছে, তোমারও এই দশা করবে। রাজপুত্র বল্লেন, এখন তবে উপায়? তারা পরামর্শ দিলে, সন্ন্যাসী পূজা শেষ ক’রে তোমায় দেবীর কাছে মাথা হেঁট করে প্রণাম কত্তে বলবে; তুমি কখনও প্রণাম করো না। সাবধান! প্রণাম করেছ, কি মারা গিয়েছ। শঙ্খনাথ মঙ্গলচণ্ডীর নাম স্মরণ কত্তে লাগলেন।
এদিকে সন্ন্যাসীর আহলাদের আর সীমা নাই; ১০৭ টা বলি শেষ হইয়া গেছে, এইটা হ'লেই তাঁর মানসিক পূর্ণ হয়। তাড়াতাড়ি কোন রকমে পূজো শেষ করে ফেল্লেন; সমস্ত পূজাও হয়ে উঠলো না। মা কাত্যায়ণী বিরূপ হলেন; সেবার তাঁর পূজা আর গ্রহণ কল্লেন না। যাই হোক, সন্ন্যাসী তো রাজপুত্রকে মন্দিরে নিয়ে এলেন। তিনি বল্লেন, শঙ্খনাথ! দেবীকে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম কর। শঙ্খনাথ মা কাত্যায়ণীকে মনে মনে প্রণাম ক’রে মুখে বল্লেন, আমি রাজপুত্র, প্রণাম পেয়েছি ছাড়া প্রণাম কেমন করিয়া করিতে হয় তাহা জানি না। তুমি আগে প্রণাম ক’রে দেখিয়ে দাও। আমি তাই দেখে শেষে প্রণাম করবো। সন্ন্যাসী হাতের খাঁড়া মাটীতে রেখে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করিলেন। আর অমনি দেবীর ইঙ্গিতে, রাজপুত্র খাঁড়া হাতে ক’রে সন্ন্যাসীকে এক কোপে কেটে ফেল্লেন। সন্ন্যাসীর রক্ত হ’তে আবার নূতন সন্ন্যাসী জন্মাতে লাগলো। একজন কাটেন তত দশজন হয়। কিছুতেই সন্ন্যাসীর ক্ষয় হয় না। তখন দেবীর আদেশ হইল, “ডাইনে কেটে বাঁয়ে (খাঁড়া) মোছ, বাঁয়ে কেটে ডাইনে মোছ।” শঙ্খনাথ তাই কল্লেন। তখন সব রক্তবীজ সন্ন্যাসী নিপাত হলো। শঙ্খনাথ পূজার ফুলজল রক্ত পুকুরে কাটা মুণ্ডের উপর ছড়িয়ে দিলেন; তখন তারা সকলে বেঁচে উঠলো, আর রাজপুত্রকে ধন্য ধন্য কত্তে লাগলো। তিনি মা চণ্ডীকে প্রণাম ক’রে স্বদেশ যাত্রা কল্লেন। শঙ্খনাথের নাম দেশময় ছড়িয়ে গেল। পথে এক রাজা তাঁর কন্যার সঙ্গে শঙ্খনাথের বিয়ে দিয়ে অর্দ্ধেক রাজত্ব দান কল্লেন।
রাজপুত্তর বৌ নিয়ে বাজি বাজনা করে বাড়ী চল্লেন। সে দিন অঘ্রাণ মাস মঙ্গলবার, ছোট রাণী সঙ্কট মঙ্গলচণ্ডীর ব্রত ক’রছিলেন। পাড়ার পাঁচ মেয়ে ছুটে এসে বল্লে, ওঠ মা, তোর ছেলে রাজকন্যে বিয়ে ক’রে বাড়ী আসচে। ঘোট রাণী বল্লেন, ছেলেকে বাইরে খানিক অপেক্ষা কত্তে বল। আমি এখন উঠতে পারবে না। তার পর, ব্রত সমাপন করিয়া ‘সঙ্কট’ [২৩ পৃষ্ঠায় উপবেশন প্রণালী দেখ] হ’তে উঠে, তবে ছেলে বউকে বরণ ক’রে ঘরে আনলেন। রাজা ও ছোট রাণী ছেলে ও বউ পেয়ে মহাসুখী হলেন। তাঁরা সুখে স্বচ্ছন্দে রাজত্ব করতে লাগলেন।
এই ব্রত কল্লে অপুত্রের পুত্র হয়, নির্ধনের ধন হয়, আপদ বালাই দূর হয়। চিরকাল সুখে যায়।