১১

জগতের মাঝখানে যুগে যুগে হইতেছে জমা
সুতীব্র অক্ষমা।
অগােচরে কোনােখানে একটি রেখার হােলে ভুল
দীর্ঘকালে অকস্মাৎ আপনারে করে সে নির্মূল।
ভিত্তি যার ধ্রুব ব’লে হয়েছিল মনে
তলে তার ভূমিকম্প ট’লে ওঠে প্রলয়নর্তনে।
প্রাণী কত এসেছিল দলে দলে
জীবনের রঙ্গভূমে
অপর্যাপ্ত শক্তির সম্বলে
সে শক্তিই ভ্রম তার,
ক্রমেই অসহ্য হয়ে লুপ্ত ক'রে দেয় মহা ভার।
কেহ নাহি জানে
এ বিশ্বের কোন্‌খানে
প্রতিক্ষণে জমা।
দারুণ অক্ষমা।
দৃষ্টির অতীত ত্রুটি করিয়া ভেদন
সম্বন্ধের দৃঢ় সূত্র করিছে ছেদন,
ইঙ্গিতের স্ফুলিঙ্গের ভ্রম
পশ্চাতে ফেরার পথ চিরতরে করিছে দুর্গম।
দারুণ ভাঙন এ যে পূর্ণেরি আদেশে
কী অপূর্ব সৃষ্টি তার দেখা দিবে শেষে,

গুঁড়াবে অবাধ্য মাটি বাধা হবে দূর,
বহিয়া নূতন প্রাণ উঠিবে অঙ্কুর।
হে অক্ষমা,
সৃষ্টির বিধানে তুমি শক্তি যে পরমা,
শান্তির পথের কাঁটা তব পদপাতে
বিদলিত হয়ে যায় বারবার আঘাতে আঘাতে॥


জোড়াসাঁকো
১৩ নভেম্বর, ১৯৪০