শিক্ষা/গ্রন্থপরিচয়
গ্রন্থপরিচয়
‘শিক্ষা’ বাংলা ১৩১৫ সালে ‘গদ্যগ্রন্থাবলী’ চতুর্দশ ভাগ -রূপে প্রথম প্রকাশিত হয়; উহাতে বর্তমান গ্রন্থের প্রথম ছয়টি প্রবন্ধ এবং তদতিরিক্ত ‘সাহিত্যসম্মিলন’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধ সংকলিত হইয়াছিল। শেষোক্ত প্রবন্ধটি প্রচলিত ‘রবীন্দ্র-রচনাবলী’তে বা স্বতন্ত্র পুস্তকেও ‘সাহিত্য’ গ্রন্থের পরিশিষ্টে মুদ্রিত আছে।
১৩৪২ শ্রাবণে ‘শিক্ষা’র যে পরিবর্ধিত সংস্করণ প্রকাশিত হয় তাহাতে পূর্বোক্ত সাতটি প্রবন্ধ ব্যতীত বাংলা ১৩১৬-১৩৪২ সালে রচিত বা মুদ্রিত আরো পনেরোটি প্রবন্ধ ও পত্র (মূলগ্রন্থে ও পরিশিষ্টে) সংকলিত হয়।
১৩৫১ চৈত্রে বর্তমান সংস্করণের প্রথম প্রকাশ।
শিক্ষার ব্যবহারিক দিক সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের সমুদয় রচনা আলোচনা বা পত্রাদি শীঘ্রই ‘শিক্ষা’র দ্বিতীয় একটি খণ্ডে সংকলন করিবার কল্পনা রহিয়াছে। সুতরাং ১৩৫১ চৈত্রে সংকলিত এবং ১৩৫৭ আষাঢ়ে, ১৩৬০ চৈত্রে ও বর্তমানে পুনর্মুদ্রিত গ্রন্থকে নূতন পরিকল্পনা-অনুযায়ী ‘শিক্ষা’র প্রথম ভাগ বলা যাইতে পারে। রবীন্দ্রনাথের শিক্ষা-সম্পর্কিত (বাংলা ও ইংরেজি) সমুদয় রচনা ও মন্তব্যের একটি বিশদ তালিকা Visva-Bharati Quarterlyর ১৯৪৭ মে-অক্টোবরের একটি বিশেষ সংখ্যায় (পৃ ২০৩-১৫) মুদ্রিত হয়; অনুসন্ধিৎসু ব্যক্তি তাহাতে প্রয়োজনীয় বহু তথ্য পাইবেন।
এই গ্রন্থে সন্নিবিষ্ট রচনাবলীর প্রথম-মুদ্রণ-কাল পরে সংকলন করা হইল; গ্রন্থের ভিতরেও প্রত্যেক রচনার সবশেষে উহার মুদ্রণকাল দেওয়া হইয়াছে।—
রচনা | প্রকাশ | ||
১ | শিক্ষার হেরফের | সাধনা | পৌষ ১২৯৯ |
২ | ছাত্রদের প্রতি সম্ভাষণ | বঙ্গদর্শন | বৈশাখ ১৩১২ |
৩ | শিক্ষাসমস্যা | ভাণ্ডার | জ্যৈষ্ঠ ১৩১৩ |
৪ | শিক্ষাসংস্কার | ভাণ্ডার | আষাঢ় ১৩১৩ |
৫ | জাতীয় বিদ্যালয় | বঙ্গদর্শন | ভাদ্র ১৩১৩ |
৬ | আবরণ | বঙ্গদর্শন | ভাদ্র ১৩১৩ |
৭ | অপোবন | প্রবাসী | পৌষ ১৩১৬ |
৮ | ধর্মশিক্ষা | তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা | মাঘ ১৩১৮ |
৯ | শিক্ষাবিধি | প্রবাসী | আশ্বিন ১৩১৯ |
১০ | লক্ষ্য ও শিক্ষা | তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা | অগ্রহায়ণ ১৩১৯ |
১১ | স্ত্রীশিক্ষা | সবুজ পত্র | ভাদ্র-আশ্বিন ১৩২২ |
১২ | শিক্ষার বাহন | সবুজ পত্র | পৌষ ১৩২২ |
১৩ | ছাত্রশাসনতন্ত্র | সবুজ পত্র | চৈত্র ১৩২২ |
১৪ | অসন্তোষের কারণ | শান্তিনিকেতন | জ্যৈষ্ঠ ১৩২৬ |
১৫ | বিদ্যার যাচাই | শান্তিনিকেতন | আষাঢ় ১৩২৬ |
১৬ | বিদ্যাসমবায় | শান্তিনিকেতন | আশ্বিন-কার্তিক ১৩২৬ |
১৭ | শিক্ষার মিলন | সবুজ পত্র প্রবাসী |
ভাদ্র ১৩২৮ আশ্বিন ১৩২৮ |
১৮ | বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপ | পুস্তিকা | ১৯৩৩ |
১৯ | শিক্ষার বিকিরণ | পুস্তিকা | ১৯৩৩ |
২০ | শিক্ষা ও সংস্কৃতি | বিচিত্রা | শ্রাবণ ১৩৪২ |
২১ | শিক্ষার স্বাঙ্গীকরণ | বিশ্বভারতী বুলেটিন | মাঘ ১৩৪২ |
২২ | আশ্রমের শিক্ষা | প্রবাসী | আষাঢ় ১৩৪৩ |
২৩ | ছাত্রসম্ভাষণ | পুস্তিকা | ৫ ফাল্গুন ১৩৪৩ |
উল্লিখিত তালিকার বিভিন্ন প্রবন্ধ সম্পর্কে কতকগুলি তথ্য এই স্থলে সংকলনযোগ্য—
১ প্রথমাবধি সাময়িকের পাঠ হইতে কিছু বর্জন করিয়া পুস্তকে গৃহীত হইয়াছে। মূল প্রবন্ধটি ‘রাজশাহী অ্যাসোসিয়েশনে পঠিত’।
২ সাময়িকের পাঠ হইতে অনেকটা বর্জিত। ১৭ চৈত্র [১৩১১] ক্লাসিক রঙ্গমঞ্চে রবীন্দ্রনাথ-কর্তৃক পঠিত।
৩ বঙ্গদর্শনের আষাঢ়-সংখ্যাতেও মুদ্রিত। উহার পাদটীকায় জানা যায়, প্রবন্ধটি ২৩ জ্যৈষ্ঠ [১৩১৩] বুধবার ওভারটুন হলে আহুত সভায় রবীন্দ্রনাথ-কর্তৃক পঠিত হয়।
৫ ২৯ শ্রাবণ তারিখে [১৩১৩] কলিকাতা টাউন হলে পঠিত।
৭ পূর্বাবধি শান্তিনিকেতন গ্রন্থে মুদ্রিত আছে।
৯, ১০ ইংলণ্ড্-প্রবাস-কালে রচিত পত্র। এজন্য সমসাময়িক অন্য পত্র ও রচনা-চয়ের সহিত ‘পথের সঞ্চয়’ গ্রন্থেও মুদ্রিত হইয়াছে।
১৩ প্রেসিডেন্সি কলেজে ছাত্র-অধ্যাপকে যে সংঘর্ষ ঘটে তাহাই এই প্রবন্ধের হেতু।
১৭ ‘রবীন্দ্রজীবনী’ (১৩৫৯) -অনুযায়ী ইহার রচনা শান্তিনিকেতনে; ২৫ শ্রাবণ ১৩২৮ (১০ অগস্ট ১৯২১) অপরাহ্নে আশ্রমবাসীদের সমক্ষে পঠিত। অতঃপর এই প্রবন্ধ ১৫ অগস্ট (১৯২১) য়ুনিভার্সিটি ইন্স্টিটিউট হলে জাতীয় শিক্ষাপরিষদের পক্ষ হইতে অনুষ্ঠিত কবি-সংবর্ধনা-সভায় পঠিত হয়; সভাপতি ছিলেন স্যর আশুতোষ চৌধুরী। পরবর্তী ১৮ অগস্টে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে আল্ফ্রেড রঙ্গমঞ্চে কবি পুনরায় ইহা পাঠ করেন।
১৮, ১৯ কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আহুত সভায় যথাক্রমে ১৯৩২ ডিসেম্বর ও ১৯৩৩ ফেব্রুয়ারিতে এই অভিভাষণদ্বয় পঠিত হয়।
২১ কলিকাতা-নগরে অনুষ্ঠিত ‘শিক্ষাসপ্তাহে’ আন্তর্জাতিক ‘নিউ এডুকেশন ফেলোশিপ’এর ভাষণ-রূপে ৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৬ তারিখে পঠিত। ইহাতে বহুপূর্বকালীন ‘শিক্ষার বাহন’ (পৌষ ১৩২২) প্রবন্ধের কোনো কোনো অংশ অঙ্গীকৃত হইয়াছে; লেখক সুচনাতেই বলেন, ‘এ সম্বন্ধে বরাবর আমি আলোচনা করেছি, আবার তার পুনরুক্তি করতে প্রবৃত্ত হলেম •• পুনরুক্তি অনেকেই হয়তো ধরতে পারবেন না। কেননা অনেকেরই কানে আমার সেই পুরোনো কথা পৌঁছয় নি। যাঁদের কাছে পুনরুক্তি ধরা পড়বে তাঁরা যেন ক্ষমা করেন। কেননা আজ আমি দুঃখের কথা বলতে এসেছি, নূতন কথা বলতে আসি নি।
২২ ‘নিউ এডুকেশন ফেলোশিপ’এর বঙ্গীয় শাখা (শান্তিনিকেতন) কর্তৃক প্রচারিত শিক্ষার ধারা’ (ভাদ্র ১৩৪৩) গ্রন্থের শেষ প্রবন্ধ। ১৩৪৮ আষাঢ়ে প্রকাশিত ‘আশ্রমের রূপ ও বিকাশ’ (বিশ্বভারতী বুলেটিন ২৯) পুস্তিকার প্রথমাংশরূপে ইহার একটি সংস্কৃত রূপ সংকলিত হয়; শান্তিনিকেতন-বিদ্যালয়ের পঞ্চাশবর্ষপুর্তি উপলক্ষে ১৩৫৮ পৌষে পুর্ববৎ ঐ পুস্তিকারই অঙ্গীকৃতরূপে পুনর্মুদ্রিত হইয়াছে।
২৩ ১৯৩৭ ফেব্রুয়ারি মাসে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক পদবীসম্মান-বিতরণ-সভা’য় পঠিত।