শিশু/খেলা
খেলা
তোমার কটি-তটের ধটি
কে দিল রাঙিয়া!
কোমল গায়ে দিল পরায়ে
রঙিন আঙিয়া!
বিহান বেলা আঙিনাতলে
এসেছ তুমি কী খেলাছলে,
চরণ দুটি চলিতে ছুটি
পড়িছে ভাঙিয়া।
তোমার কটি-তটের ধটি
কে দিল রাঙিয়া॥
কিসের সুখে সহাস মুখে
নাচিছ বাছনি,
দুয়ার-পাশে জননী হাসে
হেরিয়া নাচনি।
তাথেই-থেই তালির সাথে
কাঁকন বাজে মায়ের হাতে,
রাখাল-বেশে ধরেছ হেসে
বেণুর পাঁচনি।
কিসের সুখে সহাস মুখে
নাচিছ বাছনি॥
ভিখারী ওরে, অমন ক'রে
শরম ভুলিয়া
মাগিস কিবা মায়ের গ্রীবা
আঁকড়ি ঝুলিয়া।
ওরে রে লোভী, ভুবনখানি
গগন হতে উপাড়ি আনি
ভরিয়া দুটি ললিত মুঠি
দিব কি তুলিয়া।
কী চাস ওরে, অমন ক'রে
শরম ভুলিয়া॥
নিখিল শোনে আকুল-মনে
নৃপুর-বাজনা।
তপন শশী হেরিছে বসি
তোমার সাজনা।
ঘুমাও যবে মায়ের বুকে
আকাশ চেয়ে রহে ও মুখে,
জাগিলে পরে প্রভাত করে
নয়ন-মাজনা।
নিখিল শোনে আকুল-মনে
নূপুর-বাজনা॥
ঘুমের বুড়ি আসিছে উড়ি
নয়ন-ঢুলানী,
গায়ের 'পরে কোমল করে
পরশ-বুলানী।
মায়ের প্রাণে তোমারি লাগি
জগৎ-মাতা রয়েছে জাগি,
ভুবন-মাঝে নিয়ত রাজে
ভুবন-ভুলানী।
ঘুমের বুড়ি আসিছে উড়ি
নয়ন-ঢুলানী॥
[আলমোড়া
৫ শ্রাবণ ১৩১০]