দুঃখহারী

মনে করো তুমি থাকবে ঘরে,
আমি যেন যাব দেশান্তরে।
ঘাটে আমার বাঁধা আছে তরী,
জিনিস-পত্র নিয়েছি সব ভরি—
ভালো করে দেখ তো মনে করি
কী এনে মা, দেব তোমার তরে॥

চাস কি মা, তুই এত এত সোনা-
সোনার দেশে করব আনাগোনা।
সোনামতী নদী-তীরের কাছে
সোনার ফসল মাঠে ফ’লে আছে,
সোনার চাঁপা ফোটে সেথায় গাছে—
না কুড়িয়ে আমি তো ফিরব না॥

পরতে কি চাস মুক্তো গেঁথে হারে-
জাহাজ বেয়ে যাব সাগর-পারে।
সেখানে, মা, সকাল বেলা হলে
ফুলের 'পরে মুক্তোগুলি দোলে—
টুপ্‌টুপিয়ে পড়ে ঘাসের কোলে-
যত পারি আনব ভারে ভারে॥

দাদার জন্য আনব মেঘে ওড়া
পক্ষিরাজের বাচ্ছা দুটি ঘোড়া।

বাবার জন্যে আনব আমি তুলি
কনক-লতার চারা অনেকগুলি—
তোর তরে মা, দেব কৌটা খুলি
সাত রাজার ধন মানিক একটি জোড়া॥

[আলমোড়া
৩০? শ্রাবণ ১৩১০]