সানাই/জ্যোতির্বাষ্প
(পৃ. ২০)
জ্যোতির্বাষ্প
হে বন্ধু, সবার চেয়ে চিনি তোমাকেই
এ কথায় পূর্ণ সত্য নেই।
চিনি আমি সংসারের শত-সহস্রেরে
কাজের বা অকাজের ঘেরে
নির্দিষ্ট সীমায় যারা স্পষ্ট হয়ে জাগে,
প্রত্যহের ব্যবহারে লাগে,
প্রাপ্য যাহা হাতে দেয় তাই-
দান যাহা তাহা নাহি পাই।
অনন্তের সমুদ্রমন্থনে
গভীর রহস্য হতে তুমি এলে আমার জীবনে।
উঠিয়াছ অতলের অস্পষ্টতাখানি
আপনার চারি দিকে টানি।
নীহারিকা রহে যথা কেন্দ্রে তার নক্ষত্রেরে ঘেরি,
জ্যোতির্ময় বাষ্প-মাঝে দূরবিন্দু তারাটিরে হেরি।
তোমা-মাঝে শিল্পী তার রেখে গেছে তর্জনীর মানা,
সব নহে জানা ৷
সৌন্দর্যের যে পাহারা জাগিয়া রয়েছে অন্তঃপুরে,
সে আমারে নিত্য রাখে দূরে।
[শান্তিনিকেতন]
২৮ মার্চ ১৯৪০