সুকুমার সমগ্র রচনাবলী (প্রথম খণ্ড)/আবোল তাবোল/সাবধান
(পৃ. ৩৩)
সাবধান
আরে আরে, ওকি কর প্যালারাম বিশ্বাস?
ফোঁস্ ফোঁস্ অত জোরে ফেলো নাকো নিঃশ্বাস।
জানো না কি সে-বছর ও-পাড়ার ভূতোনাথ,
নিঃশ্বাস নিতে গিয়ে হয়েছিল কুপোকাৎ?
হাঁপ ছাড় হ্যাঁস্ফ্যাঁস্ ও রকম হাঁ করে—
মুখে যদি ঢুকে বসে পোকা মাছি মাকড়ে?
বিপিনের খুড়ো হয় বুড়ো সেই হল’ রায়,
মাছি খেয়ে পাঁচমাস ভুগেছিল কলেরায়।
তাই বলি—সাবধান! ক’রো নাকো ধুপ্ধাপ্,
টিপি টিপি পায় পায় চলে যাও চুপ্চাপ্।
চেয়ো নাকো আগে পিছে, যেয়ো নাকো ডাইনে
সাবধানে বাঁচে লোকে,—এই লেখে আইনে।
পড়েছ তো কথামালা? কে যেন সে কি করে
পথে যেতে পড়ে গেল পাতকোর ভিতরে।
ভালো কথা—আর যেন সকালে কি দুপুরে,
নেয়ো নাকো কোনো দিন ঘোষেদের পুকুরে;
এরকম মোটা দেহে কি যে হবে কোন্ দিন,
কথাটাকে ভেবে দেখ কি রকম সঙ্গিন!
চটো কেন? হয় নয় কেবা জানে পষ্ট,
যদি কিছু হয়ে পড়ে পাবে শেষে কষ্ট।
মিছিমিছি ঘ্যান্ঘ্যান্ কেন কর তক্ক?
শিখেছ জ্যাঠামো খালি, ইঁচড়েতে পক্ক।
মানবে না কোন কথা চলা ফেরা আহারে,
একদিন টের পাবে ঠেলা কয় কাহারে।
রমেশের মেজমামা সেও ছিল সেয়না,
যত বলি ভালো কথা কানে কিছু নেয় না—
শেষকালে একদিন চান্নির বাজারে
পড়ে গেল গাড়ি চাপা রাস্তার মাঝারে!