সুকুমার সমগ্র রচনাবলী (প্রথম খণ্ড)/বিবিধ কবিতা/নিঃস্বার্থ

পুণ্যলতা চক্রবর্তী, কল্যাণী কার্লেকর সম্পাদিত
(পৃ. ১৬৮)

নিঃস্বার্থ

গোপলাটা কি হিংসুটে মা! খাবার দিলেম ভাগ করে,
কল্লে নাকো মুখেও কিছু, ফেল্লে ছুঁড়ে রাগ করে।
জ্যাঠাইমা যে মেঠাই দিলেন ‘দুই ভায়েতে খাও' বলে—
দশটি ছিল, একটি তাহার চাখতে নিলেম ‘ফাও’ বলে,
আর যে নটি, ভাগ করে তায় তিনটে দিলেম গোপলাকে—
তবুও কেবল হ্যাংলা ছেলে আমার ভাগেই চোখ রাখে।
বুঝিয়ে বলি, ‘কাঁদিস কেন? তুই যে নেহাৎ কনিষ্ঠ,
বয়স বুঝে সামলে খাবি, তা নৈলে হয় অনিষ্ট।
তিনটি বছর তফাৎ মোদের, জ্যায়দা হিসাব গুণতি তাই,
মোন্দা আমার ছয়খানি হয়, তিন বছরে তিনটি পাই।
তাও মানে না, কেবল কাঁদে—স্বার্থপরের শয়তানি,
শেষটা আমায় মেঠাইগুলো খেতেই হল সবখানি।

সন্দেশ-১৩২৬