সুনির্মল বসুর শ্রেষ্ঠ কবিতা/বাঁশের বাঁশি
বাঁশের বাঁশি
অনেক দূরে
উদাস সুরে
কোন্ সে বাঁশি বাজে রে
কোন্ সে বাঁশি বাজে।
শুনতে পেনু
মোহন বেণু
শালের বনের মাঝে রে,
শালের বনের মাঝে।
বাতাস চলে
গাছের তলে,
আঁধার হ’ল ফিকে রে,
আঁধার হ’ল ফিকে;
আলোয় ভরা
হাসছে ধরা,
দেখছি দিকে দিকে রে,
দেখছি দিকে দিকে।
ধানের ক্ষেতে
উঠছে মেতে,
বাতাস মাঝে মাঝে রে,
বাতাস মাঝে মাঝে।
অনেক দূরে
মৃদুল সুরে
বাঁশের বাঁশি বাজে রে,
বাঁশের বাঁশি বাজে।
মাঠের ধারে,
নদীর পারে
সাদা বালুর চরে রে,
সাদা বালুর চরে
দেখছি চেয়ে
আকাশ বেয়ে
ভোরের আলো ঝরে রে,
ভোরের আলো ঝরে।
নদীর কোণে
শালের বনে
যাচ্ছে যেন কারা রে,
যাচ্ছে যেন কারা!
চলার তালে
আজ সকালে
বাজায় বাঁশি তারা রে,
বাজায় বাঁশি তারা।
মাঝে মাঝে
মাদল বাজে
চলার সাথে সাথে রে,
চলার সাথে সাথে;
বুনো ভাষায়
গান শোনা যায়
নীরব নিঝুম প্রাতে রে,
নীরব নিঝুম প্রাতে।
নদীর পারে,
মাঠের ধারে
গহন বনের মাঝে রে,
গহন বনের মাঝে,
প্রাণ-উদাসী
বাঁশের বাঁশি
মোহন সুরে বাজে রে,
মোহন সুরে বাজে।
ধীর বাতাসে
গন্ধ আসে,
কোথায় ফোটে হেনা রে,
কোথায় ফোটে হেনা;
নদীর বাঁকে
চকোর ডাকে,
স্বরটি চেনা-চেনা রে,
স্বরটি চেনা-চেনা।
স্নিগ্ধ ভোরে
মাঠের ’পরে
চরণ ফেলে ফেলে রে,
চরণ ফেলে ফেলে,
বাঁশি বাজায়,
গান গেয়ে যায়
সাঁওতালদের ছেলে রে,
সাঁওতালদের ছেলে।
আজ সকালে
গানের তালে
উঠলো জেগে সাড়া রে,
উঠলো জেগে সাড়া;
সদলবলে
বাজিয়ে চলে
বাঁশের বাঁশি তারা রে,
বাঁশের বাঁশি তারা॥