সোনার তরী/অচল স্মৃতি
(পৃ. ২০০-২০১)
অচল স্মৃতি।
আমার হৃদয়-ভূমি-মাঝখানে
জাগিয়া রয়েছে নিতি
অচল ধবল শৈল সমান
একটি অচল স্মৃতি।
প্রতিদিন ঘিরি ঘিরি
সে নীরব হিমগিরি
আমার দিবস আমার রজনী
আসিছে যেতেছে ফিরি।
যেথানে চরণ রেখেছে, সে মোর
মর্ম্ম গভীরতম,
উন্নত শির বয়েছে তুলিয়া
সকল উচ্চে মম।
মোর কল্পনা শত
রঙীন্ মেঘের মত
তাহারে ঘেরিয়া হাসিছে কাঁদিছে
সোহাগে হতেছে নত।
আমার শ্যামল তরুলতাগুলি
ফুল পল্লব ভারে
সরস কোমল বাহু-বেষ্টনে
বাঁধিতে চাহিছে তারে,
শিখর গগন-লীন
দুর্গম জনহীন,
বাসনা-বিহগ একেলা সেথায়
ধাইতেছে নিশিদিন।
চারিদিকে তার কত আসা-যাওয়া
কত গীত কত কথা,
মাঝখানে শুধু ধ্যানের মতন
নিশ্চল নীরবতা।
দূরে গেলে তবু, একা
সে শিখর যায় দেখা,
চিত্ত-গগনে আঁকা থাকে তার
নিত্য-নীহার-রেখা!
১১ অগ্রহায়ণ, ১৩০০।