হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় বৌদ্ধগান ও দোহা (১৯৫১)/চর্য্যাচর্য্যবিনিশ্চয়/২৭

২৭

রাগ কামোদ

ভুসুকুপাদানাম্।  অধরাতি ভর কমল বিকসউ
বতিস জোইণী তসু অঙ্গ উহ্নসিউ॥ ধ্রু॥
চালিউঅ ষষহর মাগে অবধূই
রঅণহু ষহজে কহেই॥ ধ্রু॥
চালিঅ ষষহর গউ ণিবাণেঁ
কমলিনি কমল বহই পণালেঁ॥ ধ্রু॥
বিরমানন্দ বিলক্ষণ সুধ॥
জো এথু বুঝই সো এথু বুধ॥ ধ্রু॥
ভুসুকু ভণই মই বুঝিঅ মেলেঁ
সহজানন্দ মহাসুহ লোলেঁ॥ ধ্রু॥

 তমেবার্থং সহজানন্দরসপূর্ণো হি ভুসুকুসিদ্ধাচার্য্যঃ প্রতিপাদয়তি—

 অধরাতীত্যাদি। তত্র সেকপটলোক্তবিধানাৎ অর্দ্ধরাত্রৌ চতুর্থীসন্ধ্যায়াং প্রজ্ঞাজ্ঞানাভিষেকদানসময়ে বজ্রসূর্য্যরশ্মিনা কমলং উষ্ণীষকমলং বিকসিতং মম। তস্মিন্ সময়ে দ্বাত্রিং[৪১][শ]দ্ যোগিনীতি দ্বাত্রিংশন্নাড়িকা বোধিচিত্তবহা ললনারসনাবধূতী। অভেদ্যা[ঃ] সূক্ষ্মরূপাদিকা বোদ্ধব্যা[ঃ]। তত্র স্থানে স্রবন্তি। তাসাং আনন্দাদিসন্দোহেনাঙ্গোহ্নাসোভূৎ (সংভূৎ)।

 ধ্রুবপদেন সদ্গুরুপ্রভাবমাহ—

 তস্মিন্ কালে তেন হেতুনা সসহরবোধিচিত্তচন্দ্রঃ। অবধূতীমার্গেণ বজ্রশিখরং গতঃ। সদ্গুরুবচনতত্ত্বরত্নপ্রভাবাৎ স ময়ি সহজানন্দং কথয়তি।

 তথাচ সরহপাদাঃ

চিত্তে শশ[হ]রমিত্যাদি।

 দ্বিতীয়পদেন তমেবার্থং বদতি—

 চালিঅ ইত্যাদি। শশহরো হি বোধিচিত্তমবধূতীমার্গেণ যৎ প্রচলিতং স এব গুরুসম্প্রদায়াৎ বজ্রশিখরাগ্রে নির্ব্বাণং প্রভাস্বরং গতং। কমলরসং মহাসুখ[] ❌ রসমস্যাস্তীতি কমলিনী। সৈব প্রকৃতিপরিশুদ্ধাবধূতিকা নৈরাত্মা কমলরসং তমেব বোধিচিত্তমহাসুখ ❌ রসেন কায়বজ্রং প্রীণয়িত্বা মহাসুখচক্রোদ্দেশং বহতীতি।

 তথাচ কৃষ্ণাচার্য্যপাদাঃ

পহ বহন্তে ণিঅমর বন্ধনেত্যাদি।

 তৃতীয়পদেন তমেবা[৪১ক]র্থং কথয়তি—

 বিরমানন্দেত্যাদি। বিলক্ষণচতুর্থানন্দশুদ্ধোঽয়ং বিরমানন্দঃ। যস্য যোগীন্দ্রস্যাবগমো গুরুপ্রসাদাদহর্ন্নিশমভূৎ স এব ভগবান্ বজ্রধরঃ। দ্বাত্রিংশল্লক্ষণযুক্তো ব্যঞ্জনাশীত্যলংকৃতঃ। অনধিগততত্ত্বানামত্রাবকাশো[] ন স্যাদিতি।

 তথাচ দবড়ীপাদাঃ

গবাং যূথ ন্যায় ইত্যাদি।

 চতুর্থপদেন স্ববোধং দ্রঢ়য়তি—

 ভুসুকু ভণই ইত্যাদি। ভুসুকুপাদো হি বদতি। ময়া ভুসুকুপাদেন প্রজ্ঞোপায়মেলকে সহজানন্দং মহাসুখ[ং] সদ্গুরুপ্রসাদাল্লীলয়াবগতং। ২৭॥

  1. দুই ঢেরার মধ্যে যে লেখাটুকু আছে, তাহা পড়িয়া গিয়াছিল বলিয়া পুরাণ নেওয়ারী অক্ষরে নীচে লিখিয়া দেওয়া আছে।
  2. ‘অবসরে’ লিখিয়া ‘সরে’ কাটিয়া উপরে ‘কা’ তুলিয়া দিয়াছে। ছিল ‘অবসরেশো,’ হইয়াছে ‘অবকাশো’।

২৭

রাগ কামোদ

ভুসুকুপাদানাম্— অধরাতি ভর কমল বিকসিউ।
বতিস জোইণী তসু অঙ্গ উহ্নসিউ॥ ধ্রু॥
চালিঅ ষষহর মাগে অবধূই।
রঅণহু ষহজে কহেই॥ ধ্রু॥

চালিঅ ষষহর গউ ণিবাণে।
কমলিনি কমল বহই পণালেঁ॥ ধ্রু॥
বিরমানন্দ বিলক্ষণ সুধ।
জো এথু বুঝই সো এথু বুধ॥ ধ্রু॥
ভুসুকু ভণই মই বুঝিঅ মেলেঁ।
সহজানন্দ মহাসুহ লীলেঁ॥ ধ্রু॥

 পূর্ণ অর্দ্ধরাত্রিতে (চতুর্থীসন্ধ্যায়) (বজ্ররূপ সূর্য্যরশ্মি দ্বারা আমার) কমল (উষ্ণীষকমল, মস্তকস্থ সহস্রদল পদ্ম) বিকশিত হইল। (তখন) বত্রিশ যোগিনী (ললনা, রসনা আদি বোধিচিত্তবহা সূক্ষ্ম দ্বাত্রিংশ নাড়ী, আনন্দসন্দোহবশতঃ) তাহাদের অঙ্গ (শরীর) উনাইয়া তুলিল [উষ্ণতায় ঘর্ম্মোদ্গমের ন্যায় তাহারা শরীর হইতে আনন্দস্রাব করিতে লাগিল]। (সেই সময়) শশধর (বোধিচিত্তরূপ চন্দ্র) অবধূতিমার্গে (বজ্রশিখরে) চালিত হইয়া, রঅণহু (সদ্গুরুর বচনরূপ তত্ত্বরত্নের প্রভাবে আমাকে) সহজানন্দের কথা কহিতে লাগিল। (অবধূতিমার্গে) চালিত শশধর (বজ্রশিখরাগ্রে) নির্ব্বাণ প্রাপ্ত হইল। [তখন] কমলিনী (প্রকৃতিপরিশুদ্ধাবধূতিকা নৈরাত্মা) কমল-(রসরূপ বোধিচিত্তমহাসুখরসে কায়বজ্রকে প্রীণিত করিয়া) প্রণালে (প্রকৃষ্ট নাল, অবধৃতিমার্গে) প্রবহমাণ হইতে লাগিলেন। (এই) বিরমানন্দ বিলক্ষণ (চতুর্থানন্দ দ্বারা) পরিশুদ্ধ। (গুরুর প্রসাদে) যে (যোগীন্দ্র) ইহা বুঝেন, তিনি ইহাতে বোধশীল হয়েন। ভুসুকু বলেন,—মেলেঁ (প্রজ্ঞা ও উপায়ের মিলন দ্বারা) সহজানন্দরূপ মহাসুখ (সদ্গুরুপ্রসাদে) আমি অবলীলাক্রমে বুঝিয়াছি।