আজাদী সৈনিকের ডায়েরী/কোহিমা সহরে যুদ্ধ
১৭ই এপ্রিল ১৯৪৪:
বৃটিশ সৈন্য ফাঁদে পড়িয়াছে। তাহাদের রসদের বেশী ভাগই দখল করিয়াছিলাম। তাহাদের খাদ্যাভাব নিশ্চয়ই হইয়াছে। তাহার উপর পানীয় জল বন্ধ; জল যাহা আছে তাহা আর কয়দিন চলিবে? ডেপুটি কমিশনারের বাংলোর কাছে খানিকটা জায়গা এবং ‘সামার হাউসে’ অল্পসংখ্যক লোক মাত্র অবশিষ্ট আছে—বাকি সকলেই পলয়ন করিয়াছে। এই ক্ষুদ্র সেনাদল এখনো বাধা দিতেছে। কাল বৃটিশ এরোপ্লেন হইতে প্যারাসুট যেগে জিনিষপত্র নামাইয়া দিয়াছে—সম্ভবত খাবার জিনিষ। আমরা বিমানটি দেখিতে পাইয়া উহাকে লক্ষ্য করিয়া গুলি ছুঁড়ি; কিন্তু তাহার পূর্ব্বেই উহাদের জিনিষ নামানো শেষ হইয়া গিয়াছিল এবং শীঘ্রই আমাদের লক্ষ্যের বাহিরে চলিয়া গেল।
আজ আমাদের একদল সৈন্য একটি ঘাঁটি আক্রমণ করিল। অজস্র গুলি তাহাদের উপর বর্ষার বারিধারার মত বর্ষিত হইতে লাগিল। মরণ অগ্রাহ্য করিয়া আমাদের বীর সৈনিকগণ অগ্রসর হইল। তখন বেয়নেট লাগাইয়া কয়েকজন শত্রু সৈনিক উহাদের উপর ঝাঁপাইয়া পড়িল। প্রবল হাতাহাতি যুদ্ধ চলিতে লাগিল। শেষে উহারা সামার হাউসের দিকে পলায়ন করিল। আমাদের জয় হইয়াছে।
রাত্রি ১১টা। অদূরে বোমা বিস্ফোরণের শব্দ। যে ঘাঁটি আমরা আজ দখল করিয়াছিলাম, তাহা ধ্বংশস্তূপে পরিণত হইয়াছে।