আত্মপরিচয়
আ ত্ম প রি চ য়
প্রকাশ ১ বৈশাখ ১৩৫০
পুনর্মুদ্রণ চৈত্র ১৩৫২, কার্তিক ১৩৬১
আষাঢ় ১৩৬৪, ভাদ্র ১৩৬৮, জ্যৈষ্ঠ ১৩৭৬, পৌষ ১৩৮৬
সংস্করণ চৈত্র ১৪০০
আশ্বিন ১৪১৭
© বিশ্বভারতী
প্রকাশক কুমকুম ভট্টাচার্য
বিশ্বভারতী। ৬ আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রােড। কলকাতা ১৭
মুদ্রক প্রিণ্টটেক
১৫ এ অম্বিকা মুখার্জী রােড। কলকাতা ৫৬
সূচীপত্র | ||
প্রকাশ বা রচনার কাল | পৃষ্ঠা | |
১॥ | ১৩১১ | ৭ |
২॥ | ফাল্গুন ১৩১৮ | ৩১ |
৩॥ | আশ্বিন-কার্তিক ১৩২৪ | ৩৯ |
৪॥ | বৈশাখ ১৩৩৮ | ৭৩ |
৫॥ | পৌষ ১৩৩৮ | ৭৭ |
৬॥ | বৈশাখ ১৩৪৭ | ৯৭ |
৭॥ | ভাদ্র ১৩১৭ | ১০৭ |
সংযোজন | ||
সম্মান॥ | বৈশাখ ১৩৩৪ | ১১৫ |
গ্রন্থপরিচয় | ১২১ |
গ্রন্থপরিচয়
বর্তমান গ্রন্থে প্রকাশিত প্রথম প্রবন্ধটি ‘বঙ্গভাষার লেখক’ (১৩১১) গ্রন্থে প্রথম মুদ্রিত হয়। রবীন্দ্রনাথের সহিত দ্বিজেন্দ্রলালের যে বিরােধ এক সময়ে বাংলা সাময়িক সাহিত্যকে বিক্ষুব্ধ করিয়া তুলিয়াছিল, এই প্রবন্ধ হইতেই এক রূপ তাহার সূচনা হয়। দ্বিজেন্দ্রলাল এই প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথের ‘দম্ভ ও অহমিকা’র সন্ধান পাইয়াছিলেন।[১] বঙ্গদর্শন-সম্পাদকের অহ্বানে, রবীন্দ্রনাথ এই অভিযােগের উত্তরে যাহা বলিয়াছিলেন, তাহার এক অংশ, মূল প্রবন্ধের পরিপূরকরূপে নিম্নে মুদ্রিত হইল—
আমি মনে জানি, অহংকার প্রকাশ করিবার অভিপ্রায় আমার ছিল না।
বহুদিন হইল জর্মন কবিশ্রেষ্ঠ গ্যয়টের কোনো রচনার ইংরেজি তর্জমাতে একটা কথা পড়িয়াছিলাম; যতদূর মনে পড়ে, তাহার ভাবখানা এই যে, বাগানের মধ্যে যে শক্তি গােলাপ হইয়া ফোটে সেই একই শক্তি মানুষের মনে ও বাক্যে কাব্য হইয়া প্রকাশ পায়।
এই বিশ্বশক্তিকে নিজের জীবনের মধ্যে ও রচনার মধ্যে অনুভব করা অহংকার নহে। বরঞ্চ অহংকারের ঠিক উলটা। কেননা, এই বিশ্বশক্তি কোনাে ব্যক্তিবিশেষের বিশেষ সম্পত্তি নহে, তাহা সকলের মধ্যেই কাজ করিতেছে।
তাই যদি হয় তবে এতবড়ো একটা অত্যন্ত সাধারণ কথাকে বিশেষ ভাবে বলিতে বসা কেন?
ইহার উত্তর এই যে, অত্যন্ত সাধারণ কথারও যখন জীবনের বিশেষ অবস্থায় বিশেষ উপলব্ধি হয় তখন তাহা আমাদিগকে হঠাৎ একটা আলােকের মতো চমৎকৃত করিয়া দেয়। যাহা সাধারণ তাহাকেই বিশেষ করিয়া যখন জানিতে পাই তখন তাহার বিস্ময় বড়ো বেশি করিয়া আঘাত করে। মৃত্যুর মতাে অত্যন্ত বিশ্বব্যাপী নিশ্চিত ও পুরাতন পদার্থেরও বিশেষ পরিচয় আমাদিগকে একটা সদ্যোনূতন আবির্ভাবের মতো চমক লাগাইয়া দেয়। এইজন্য বিশেষ অবস্থায় সাধারণ কথাকেও বিশেষ করিয়া বলিবার আকাঙ্ক্ষা মনে উদয় হইয়া থাকে। বস্তুত সাহিত্যের বারােআনা কথাই নিতান্ত জানা কথাকেই নিজের মধ্যে নূতন করিয়া জানিয়া নিজের মতো নূতন করিয়া বলা।
সম্প্রতি অধ্যাপক কেয়ার্ডের একটি গ্রন্থে পড়িতেছিলাম:
Though man is essentially self-conscious, he always is more than he thinks or knows; and his thinking and knowing are ruled by ideas of which he is at first unaware, but which, nevertheless, affect everything he says or does. Of these ideas we may, therefore, expect to find some indication even in the earliest stage of his development; but we cannot expect that in that stage they will appear in their proper form or be known for what they really are.
যে আইডিয়া সম্বন্ধে আমরা প্রথমে অচেতন ছিলাম তাহাই যে আমাদিগকে বলাইয়াছে ও করাইয়াছে এবং আমাদের অপরিণত অবস্থারও কথা ও কাজকে আমাদের অজ্ঞাতসারে সেই আইডিয়াই শক্তি প্রবর্তিত করিয়াছে— আমার ক্ষুদ্র আত্মজীবনীতে এই কথাটার উপলব্ধিকে আমি কোনো-এক রকম করিয়া বলিবার চেষ্টা করিয়াছি। কথাটা সত্য কি মিথ্যা সে কথা স্বতন্ত্র, কিন্তু ইহা অলংকার নহে, কারণ, ইহা কাহারও একলার সামগ্রী নহে। তবে কিনা যখন নানা কারণে নিজের জীবনবিকাশের মধ্যে এই আইডিয়াকে স্পষ্ট করিয়া প্রত্যক্ষ করা যায় তখন তাহাকে নিতান্ত সাধারণ কথা ও জানা কথা বলিয়া আর উপেক্ষা করিতে পারি না।
রবীন্দ্রনাথের ধর্মমতের কোনো একটি সমালোচনার[২] উত্তরে এই গ্রন্থের তৃতীয় প্রবন্ধটি লিখিত হয়। রচনাটি ‘আমার ধর্ম’ নামে সবুজ পত্রে (আশ্বিন-কার্তিক ১৩২৪) প্রকাশিত হইয়াছিল। এই প্রবন্ধে[৩] রবীন্দ্রনাথের ধর্মসংগীতের অন্য যে একটি সমালোচনার উল্লেখ আছে, তাহা বিপিনচন্দ্র পাল -কর্তৃক লিখিত[৪]।
সপ্ততিতম জন্মোৎসবে শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের অভিভাষণের কবিকর্তৃক সংশোধিত অনুলিপি এই গ্রন্থের চতুর্থ প্রবন্ধরূপে মুদ্রিত হইল। এই অভিভাষণ প্রবাসীতে (জ্যৈষ্ঠ ১৩৩৮) প্রকাশিত হইয়াছিল।
সপ্ততিবর্ষপূর্তি উপলক্ষে কলিকাতা টাউন-হলে যে রবীন্দ্রজয়ন্তী (১১ পৌষ ১৩৩৮) অনুষ্ঠিত হয় সেই উৎসবে পাঠ করিবার জন্য এই গ্রন্থের পঞ্চম প্রবন্ধটি লিখিত হইয়াছিল। এবং ‘প্রতিভাষণ’ নামে পুস্তিকাকারে মুদ্রিত হইয়াছিল। রচনাটি দীর্ঘ বলিয়া তথায় পঠিত হইতে পারে নাই, ছাত্র-ছাত্রীগণ-কর্তৃক সেনেট হলে অনুষ্ঠিত (১৫ পৌষ ১৩৩৮) রবীন্দ্র জয়ন্তী উৎসবে এই প্রতিভাষণ করি পাঠ করেন।
‘আশি বছরের আয়ুঃক্ষেত্রে’ -প্রবেশ উপলক্ষে এই গ্রন্থের ষষ্ঠ প্রবন্ধটি লেখা হইয়াছিল। প্রবন্ধটি প্রবাসীতে (জ্যৈষ্ঠ ১৩৪৭) ‘জন্মদিনে’ নামে প্রকাশিত হয়।
১৩১৭ সালে ‘বেঙ্গলী’ পত্রের সহকারী সম্পাদক পদ্মিনীমােহন নিয়ােগী -কর্তৃক অনুরুদ্ধ হইয়া রবীন্দ্রনাথ একটি চিঠিতে তাঁহার যে সংক্ষিপ্ত জীবনকথা লিপিবদ্ধ করেন, প্রাসঙ্গিক বােধে তাহা গ্রন্থপরিশেষে মুদ্রিত হইল। চিঠিখানি প্রবাসীতে (কার্তিক ১৩৪৮) প্রকাশিত হইয়াছিল। এই চিঠিতে মুদ্রিত রবীন্দ্রনাথের স্ত্রীবিয়ােগের কাল, ১৩০৭ স্থলে ১৩০৯ জানিতে হইবে।
এই গ্রন্থের পঞ্চম প্রবন্ধটি সংক্ষিপ্ত আকারে ‘রবীন্দ্র-রচনাবলী’র প্রথম খণ্ডে অবতরণিকা’রূপে মুদ্রিত হইয়াছে; অন্য রচনাগুলি রবীন্দ্রনাথের কোনো গ্রন্থে ইতিপূর্বে মুদ্রিত হয় নাই— পুলিনবিহারী সেন -কর্তৃক সাময়িক পত্র হইতে সংকলিত হইয়া গ্রন্থে প্রকাশিত হইল।
১৩৮৬
বর্তমান সংস্করণে কবি-কর্তৃক চন্দননগরে কথিত ভাষণ শ্রীহরিহর শেঠের ‘রবীন্দ্রনাথ ও চন্দননগর’ (আশ্বিন ১৩৬৮) গ্রন্থ হইতে সংগ্রথিত হইল।
১৪০০
- ↑ কাব্যের উপভােগ: বঙ্গদর্শন মাঘ ১৩১৪
- ↑ ‘ধর্ম প্রচারে রবীন্দ্রনাথ’, প্রবর্তক, দ্বিতীয় বর্ষ, নবম সংখ্যা; পুনর্মুদ্রণ— নারায়ণ, আষাঢ় ১৩২৪। এই প্রসঙ্গে দ্রষ্টব্য, ‘ধর্ম প্রচারে রবীন্দ্রনাথ’, প্রবর্তক, দ্বিতীয় বর্ষ, চতুর্থ সংখ্যা; এবং রবীন্দ্রনাথের ‘আমার ধর্ম’ প্রবন্ধের প্রত্যুত্তরে লিখিত ‘রবীন্দ্রনাথের ধর্ম’, প্রবর্তক, দ্বিতীয় বর্ষ, দ্বাবিংশ সংখ্যা।
- ↑ পৃ ৪০
- ↑ ‘রবীন্দ্রনাথের ব্রহ্মসংগীত’, বিজয়া, ১৩২০
এই লেখাটি বর্তমানে পাবলিক ডোমেইনের আওতাভুক্ত কারণ এটির উৎসস্থল ভারত এবং ভারতীয় কপিরাইট আইন, ১৯৫৭ অনুসারে এর কপিরাইট মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। লেখকের মৃত্যুর ৬০ বছর পর (স্বনামে ও জীবদ্দশায় প্রকাশিত) বা প্রথম প্রকাশের ৬০ বছর পর (বেনামে বা ছদ্মনামে এবং মরণোত্তর প্রকাশিত) পঞ্জিকাবর্ষের সূচনা থেকে তাঁর সকল রচনার কপিরাইটের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায়। অর্থাৎ ২০২৪ সালে, ১ জানুয়ারি ১৯৬৪ সালের পূর্বে প্রকাশিত (বা পূর্বে মৃত লেখকের) সকল রচনা পাবলিক ডোমেইনের আওতাভুক্ত হবে।