আনন্দ-তুফান/নাম বিসর্জ্জন
বাজিল বিলাপ-বাদ্য সঘনে আবার—
বিসর্জ্জন করি সমাপন;
শেল-সম বিঁধিল মরমে—বাদ্যধ্বনি।
নিবিলে জীবন-দীপ, হায় রে যেমতি,
পরিজন-আর্ত্তনাদে বিদরে হৃদয় সবাকার;
তেমতি এ বাদ্য-বজ্র বাজিল পরাণে,
দুর্গাহারা মর্ত্ত্যবাসিজনে।
তা’ই যেন শশব্যস্তে সবে,
ভূর্জ্জপত্রে অলক্তক-যোগে,
(হৃদয়-আগারে রাখিতে যতনে বুঝি,)
বসে লিখিবারে দুৰ্গতিনাশন—দুর্গানাম;
সংসারের সকল ভুলিয়া—ক্ষণকাল।
কিন্তু হায়! মায়াবশে তা’রা,
দুর্গা-নামও দেয় ভাসাইয়া,
দুর্গা সহ অতল সলিলে,
শূন্য করি হৃদয়-আসনে—একবার।
হেরি’ শূ্ন্য স্থান, বসিল আবার হৃদে
‘কুচিন্তা’-রাক্ষসী; শ্মশান করিল বসুন্ধরা;
হ’ল শবপ্রায় শিবানী-বিহনে—জীবগণ।
হাসিল বায়সী-‘মায়া’, ‘রিপু’-ফেরুদল
আরম্ভিল স্বকার্য্য সাধন হৃষ্টমনে।
(এস হে পাঠক, ভাই, যাই অন্ত পথে,
এ সাধু প্রসঙ্গ-সনে ভকত-সকাশে।)
এদিকে, ভকতে ভাসে আনন্দ-তুফানে,
নিরখিয়া বিজয়া-রূপিণী অম্বিকায়—
বিরাজিত হৃদয়-আসনে।
লিখে তা’ই চারিদিকে তা’র,
ধীরে ধীরে সমুজ্জ্বল ভক্তি-মসী দিয়া,
অনুরাগ-লেখনী-সহায়ে,
অবিরাম বিপদ্-বারিণী-‘ব্রহ্মময়ী’-দুর্গা-নাম।
প্রেমে গলি’, অশ্রু-গঙ্গা-জলে,
সুখে তাহা করে বিসর্জ্জন,
করিবারে শোধন উহায়;—
বিনাশিতে মায়ার কালিমা।
মনে হয় নিরখি ভক্তের খেলা,
চাহে বুঝি তা’রা জিনিতে শমনে,
অন্তিম সময়ে অনায়াসে।
(কে বুঝে ভক্তের লীলা, ভক্তি-বল বিনা!)