আলালের ঘরের দুলাল (১৮৭০)/১৪
১৪ মতিলাল ও তাহার দলবল একজন কবিরাজ লইয়া
তামাশা ফষ্টি করণ, রামলালের সহিত বরদাপ্রসাদ
বাবুর দেশ ভ্রমণের ফলের কথা, হুগলি হইতে গুম-
খুনির পরওয়ানা ও বরদা বাবু প্রভৃতির তথায় গমন।
বেলেল্লা ছোঁড়াদের আয়েসে আশ মেটে না, প্রতিদিন তাহাদের নূতন২ টাট্কা২ রং চাই। বাহিরে কোন রকম আমোদের সূত্র না পাইলে ঘরে আসিয়া মাথায় হাত দিয়া বসে। যদি প্রাচীন খুড়া জেঠা থাকে তবেই বাঁচোয়া, কারণ বেসম্পর্ক ঠাট্টা চলে অথবা জো সো করে তাঁহাদিগের গঙ্গা যাত্রার ফিকিরও হইতে পারে, নতুবা বিষম সংকট —একেবারে চারিদিকে সরিষাফুল দেখে।
মতিলাল ও তাহার সঙ্গীরা নানা রঙ্গের রঙ্গী হইয়া অনেক প্রকার লীলা করিতে লাগিল কিন্তু কোন্ লীলা যে শেষ লীলা হইবে, তাহা বলা বড় কঠিন। তাহাদিগের আমোদ-প্রমোদের তৃষ্ণা দিন২ বৃদ্ধি পাইতে লাগিল। এক২ রকম আমোদ দুই-একদিন ভাল লাগে —তাহার পরেই বাসি হইয়া পড়ে, আবার অন্য কোনো রং না হইলে ছট্ফটানি উপস্থিত হয়। এইরূপে মতিলাল দলবল লইয়া কাল কাটায়। পালাক্রমে এক২ জনকে এক২ টা নূতন২ আমোদের ফোয়ারা খুলিয়া দিতে হইত, এজন্য একদিন হলধর দোলগোবিন্দের গায়ে লেপমুড়ি দিয়া ভাইলোক সকলকে শিখাইয়া পড়াইয়া ব্রজনাথ কবিরাজের বাটীতে গমন করিল। কবিরাজের বাটীতে ঔষধ প্রস্তুতের ধুম লেগে গিয়াছে— কোন খানে রসাসিন্ধু মাড়া যাইতেছে —কোন খানে মধ্যম নারায়ণ তৈলের জ্বাল হইতেছে —কোন খানে সোণা ভস্ম হইতেছে। কবিরাজ মহাশয় এক হাতে ঔষধের ডিপে ও আর এক হাতে এক বোতল গুড়ুচ্যাদি তৈল লইয়া বাহিরে যাইতেছিলেন, এমন সময়ে হলধর উপস্থিত হইয়া বলিল, রায় মহাশয়! অনুগ্রহ করিয়া শীঘ্র আসুন —জমিদারবাবুর বাটীতে একটি বালকের ঘোরতর জ্বরবিকার হইয়াছে— বোধ হয় রোগীর এখন তখন হইয়াছে তবে তাহার আয়ু ও আপনার হাতযশ —অনুমান হয় মাতব্বর২ ঔষধ পড়িলে আরাম হইলেও হইতে পারে। যদি আপনি ভাল করিতে পারেন যথাযোগ্য পুরস্কার পাইবেন। এই কথা শুনিয়া কবিরাজ তাড়াতাড়ি করিয়া রোগীর নিকট আসিয়া উপস্থিত হইলেন। যতগুলিন নব বাবু নিকটে ছিল তাহারা বলিয়া উঠিল —আসতে আজ্ঞা হউক২ কবিরাজ মহাশয়! আমাদিগকে বাঁচাউন—দোলগোবিন্দ দশপোনের দিন পর্যয়ন্ত জ্বর বিকারে বিছানায় পড়িয়া আছে—দাহ পিপাসা অতিশয়—রাত্রে নিদ্রা নাই—কেবল ছট্ফট্ করিতেছে,—মহাশয় এক ছিলিম তামাক খাইয়া ভাল করিয়া হাত দেখুন। ব্রজনাথ রায় প্রাচীন, পড়া শুনা বড় নাই—আপন ব্যবসায়ে ধামাধরা গোচ—দাদা যা বলেন তাইতেই মত—সুতরাং স্বয়ংসিদ্ধ নহেন, আপনি কেটে ছিঁড়ে কিছুই করিতে পারে না। রায় মহাশয়ের শরীর ক্ষীণ, দন্ত নাই, কথা জড়িয়া পড়ে, কিন্তু মুখের মধ্যে যথেষ্ট গোঁপ—গোঁপও পেকে গিয়াছে কিন্তু স্নেহপ্রযুক্ত কখনই ফেলিতেন না। রোগীর হাত দেখিয়া নিশ্বাস ত্যাগ করিয়া স্তব্ধ হইয়া বসিলেন। হলধর জিজ্ঞাসা করিলেন—কবিরাজ মহাশয় যে চুপ করিয়া থাকিলেন? কবিরাজ উত্তর না দিয়া রোগীর প্রতি দৃষ্টি করিতে লাগিলেন, রোগীও এক২ বার ফেল্২ করিয়া চায়—এক২ বার জিহ্বা বাহির করে—এক২ বার দন্ত কড়্মড়্ করে—এক২ বার শ্বাসের টান দেখায়—এক২ বার কবিরাজের গোঁপ ধরিয়া টানে। রায় মহাশয় সরে২ বসেন, রোগী গড়িয়া২ গিয়া তাঁহার তেলের বোতল লইয়া টানাটানি করে। ছোঁড়ারা জিজ্ঞাসা করিল—রায় মহাশয়! এ কি? তিনি বলিলেন—এ পীড়াটি ভয়ানক—বোধ হয় জ্বরবিকার ও উল্বণ হইয়াছে। পূর্ব্বে সংবাদ পাইলে আরাম করিতে পারিতাম এক্ষণে শিবের অসাধ্য। এই বলিতে২ রোগী তেলের বোতল টানিয়া লইয়া এক গণ্ডুষ তৈল মাখিয়া ফেলিল। কবিরাজ দেখিলেন যে ছবুড়ির ফলে অমিত্তি হারাইতে হয়, এজন্য তাড়াতাড়ি বোতল লইয়া ভালো করিয়া ছিপি আঁটিয়া দিয়া উঠিলেন। সকলে বলিল—মহাশয় যান কোথায়? কবিরাজ কহিলেন —উল্বণ ক্রমে ক্রমে বৃদ্ধি হইতেছে বোধ হয়, এক্ষণে রোগিকে এ স্থানে রাখা আর কর্ত্তব্য নহে —যাহাতে তাহার পরকাল ভাল হয় এমত চেষ্টা করা উচিত। রোগী এই কথা শুনিয়া ধড়্মড়িয়া উঠিল—কবিরাজ এই দেখিয়া চো ঁকরিয়া পিট্টান দিলেন—বৈদ্যবাটীর অবতারেরা সকলেই পশ্চাৎ২ দৌড়ে যাইতে লাগিল—কবিরাজ কিছুদূর যাইয়া হতভোম্বা হইয়া থম্কিয়া দাঁড়াইলেন—নববাবুরা কবিরাজকে গলাধাক্কা দিয়া ফেলিয়া ঘাড়ে করিয়া লইয়া হরিবোল শব্দ করিতে করিতে গঙ্গাতীরে আনিল। দোলগোবিন্দ নিকটে আসিয়া কহিল—কবিরাজ মামা! আমাকে গঙ্গায় পাঠাইতে বিধি দিয়াছিলে —এক্ষণে রোজার ঘারে বোঝা —এসো বাবা! এক্ষণে তোমাকে অন্তর্জলি করিয়া চিতায় ফেলি। খামখেয়ালী লোকের দণ্ডে২ মত ফেরে, আবার কিছুকাল পরে বলিল —আর আমাকে গঙ্গায় পাঠাইবে? যাও বাবা! ঘরের ছেলে ঘরে যাও, কিন্তু তেলের বোতলটা দিয়ে যাও। এই বলিয়া তেলের বোতল লইয়া সকলে রগ্রগে করিয়া তেল মাখিয়া ঝুপঝাপ করিয়া গঙ্গায় পড়িল। কবিরাজ এই সকল দেখিয়া শুনিয়া হতজ্ঞান হইলেন! এক্ষণে পলাইতে পারিলেই বাঁচি, এই ভাবিয়া পা বাড়াইতেছেন —ইতিমধ্যে হলধর সাঁতার দিতে২ চীৎকার করিয়া বলিল—ওগো কবরেজ মামা! বড় পিত্ত বৃদ্ধি হইয়াছে, পান দুই রসাসিন্ধু দিতে হবে —পালিও না। বাবা! যদি পালাও তো মামীকে হাতের লোহা খুলিতে হবে। কবিরাজ ঔষধের ডিপেটা ছুঁড়িয়া ফেলিয়া বাপ২ করিতে২ বাসায় প্রস্থান করিলেন।
ফাল্গুণ মাসে গাছপালা গজিয়ে উঠে ও ফুলের সৌগন্ধ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। বরদা বাবুর বাসাবাটী গঙ্গার ধারে —সম্মুখে একখানি আটচালা ও চতুষ্পার্শে বাগান। বরদা বাবু প্রতিদিন বৈকালে ঐ আটচালায় বসিয়া বায়ু সেবন করিতেন এবং নানা বিষয় ভাবিতেন ও আত্মীয় লোক উপস্থিত থাকিলে তাহাদিগের সহিত আলাপ করিতেন। রামলাল সর্ব্বদা নিকটে থাকিত, তাহার সহিত বরদা বাবুর মনের কথা হইত। রামলাল এই প্রকারে অনেক উপদেশ পায় —সুযোগ পাইলেই কি২ উপায়ে পরমার্থ জ্ঞান ও চিত্তশোধন হইতে পারে তদ্বিষয়ে গুরুকে খুঁচিয়া২ জিজ্ঞাসা করিত। একদিন রামলাল বলিল —মহাশয়! আমার দেশ ভ্রমণ করিতে বড় ইচ্ছা যায়—বাটীতে থাকিয়া দাদার কুকথা ও ঠকচাচার কুমন্ত্রণা শুনিয়া২ ত্যক্ত হইয়াছি কিন্তু মা বাপের ও ভগিনীর স্নেহ প্রযুক্ত বাড়ি ছেড়ে যাইতে পা বাধুবাধু করে— কি করিব কিছুই স্থির করিতে পারি না।
বরদা। দেশ ভ্রমণে অনেক উপকার। দেশ ভ্রমণ না করিলে লোকের বহুদর্শিত্ব জন্মে না, নানা প্রকার দেশ নানা প্রকার লোক দেখিতে দেখিতে মন দরাজ হয়। ভিন্ন ভিন্ন স্থানের লোকদিগের কি প্রকার রীতি নীতি, কিরূপ ব্যবহার ও কি কারণে তাহাদিগের ভাল অথবা মন্দ অবস্থা হইয়াছে তাহা খুঁটিয়া অনুসন্ধান করিলে অনেক উপদেশ পাওয়া যায়; আর নানা জাতীয় ব্যক্তির সহিত সহবাস হওয়াতে মনের দ্বেষভাব দূরে যাইয়া সদ্ভাব বাড়িতে থাকে। ঘরে বসিয়া পড়া শুনা করিলে কেতাবী বুদ্ধি হয় —পড়া শুনাও চাই —সৎলোকের সহবাসও চাই —বিষয়কর্ম্মও চাই —নানা প্রকার লোকের সহিত আলাপও চাই। এই কয়েকটি কর্ম্মের দ্বারা বুদ্ধি পরিষ্কার এবং সদ্ভাব বৃদ্ধিশীল হয় কিন্তু ভ্রমণ করিতে গিয়া কি২ বিষয়ে ভাল করিয়া অনুসন্ধান করিতে হইবে তাহা অগ্রে জানা আবশ্যক, তাহা না জানিয়া ভ্রমণ করা বলদের ন্যায় ঘুরিয়া বেড়ান মাত্র। আমি এমন কথা বলি না যে এরূপ ভ্রমণ করাতে কিছুমাত্র উপকার নাই —আমার সে অভিপ্রায় নহে, ভ্রমণ করিলে কিছু না কিছু উপকার অবশ্যই আছে কিন্তু যে ব্যক্তি ভ্রমণকালে কি২ অনুসন্ধান করিতে হয় তাহা না জানে ও সেই সকল অনুসন্ধান করিতে না পারে তাহার ভ্রমণের পরিশ্রম সর্ব্বাংশে সফল হয় না। বাঙালীদিগের মধ্যে অনেকে এ দেশ হইতে ও দেশে গিয়া থাকেন কিন্তু ঐ সকল দেশ সংক্রান্ত আসল কথা জিজ্ঞাসা করিলে কয়জন উত্তমরূপে উত্তর করিতে পারে? এ দোষটি বড় তাহাদিগের নহে —এটি তাহাদিগের শিক্ষার দোষ—দেখাশুনা, অন্বেষণ ও বিবেচনা করিতে না শিখিলে একবারে আকাশ থেকে ভাল বুদ্ধি পাওয়া যায় না। শিশুদিগকে এমত তরিবত দিতে হইবে যে তাহারা প্রথমে নানা বস্তুর নক্সা দেখিতে পায় —সকল তসবির দেখিতে দেখিতে একটার সহিত আর একটার তুলনা করিবে অর্থাৎ এর হাত আছে, ওর পা নাই, এর মুখ এমন, ওর লেজ নাই, এইরূপ তুলনা করিলে দর্শনশক্তি ও বিবেচনাশক্তি দুয়েরই চালনা হইতে থাকিবে। কিছুকাল পরে এইরূপ তুলনা করা আপনা-আপনি সহজ বোধ হইবে তখন নানা বস্তু কি কারণে পরস্পর ভিন্ন হইয়াছে তাহা বিবেচনা করিতে পারিবে, তাহার পরে কোন্২ বস্তু কোন্২ শ্রেণীতে আসিতে পারে তাহা অনায়াসে বোধগম্য হইবে। এই প্রকার উপদেশ দিতে২ অনুসন্ধান করণের অভ্যাস ও বিবেচনাশক্তির চালনা হয়। কিন্তু এরূপ শিক্ষা এদেশে প্রায় হয় না এজন্য আমাদিগের বুদ্ধি গোলমেলে ও ভাসা২ হইয়া পড়ে —কোন প্রস্তাব উপস্থিত হইলে কোন্ কথাটা বা সার ও কোন্ কথাটা বা অসার তাহা শীঘ্র বোধগম্য হয় না ও কিরূপ অনুসন্ধান করিলে প্রস্তাবের বিবেচনা হইয়া ভাল মীমাংসা হইতে পারে তাহাও অনেকের বুদ্ধিতে আসে না অতএব অনেকের ভ্রমণ যে মিথ্যা ভ্রমণ হয় এ কথা অলীক নহে কিন্তু তোমার যে প্রকার শিক্ষা হইয়াছে তাহাতে বোধ হয় ভ্রমণ করিলে তোমার অনেক উপকার দর্শিবে।
রামলাল। যদি বিদেশে যাই তবে যে২ স্থানে বসতি আছে সেই সেই স্থানে কিছুকাল অবস্থিতি করিতে হইবে কিন্তু আমি কোন্ জাতীয় ও কি প্রকার লোকের সহিত অধিক সহবাস করিব?
বরদা। এ কথাটি বড় সহজ নহে —ঠাওরিয়া উত্তর দিতে হবে। সকল জাতিতেই ভাল মন্দ লোক আছে—ভাল লোক পাইলেই তাহার সহিত সহবাস করিবে। ভাল লোকের লক্ষণ তুমি বেস জান, পুনরায় বলা অনাবশ্যক। ইংরেজদিগের নিকটে থাকিলে লোকে সাহসী হয় —তাহারা সাহসকে পূজা করে —যে ইংরাজ অসাহসিক কর্ম্ম করে সে ভদ্রসমাজে যাইতে পারে না কিন্তু সাহসী হইলে যে সর্ব্বপ্রকারে ধার্ম্মিক হয় এমত নহে —সাহস সকলের বড় আবশ্যক বটে কিন্তু যে সাহস ধর্ম্ম জ্ঞান হইতে উৎপন্ন হয় সেই সাহসই সাহস —তোমাকে পূর্ব্বে বলিয়াছি ও এখনও বলিতেছি সর্ব্বদা পরমার্থ চর্চ্চা করিবে নতুবা যাহা দেখিবে —যাহা শুনিবে—যাহা শিখিবে তাহাতেই অহংকার বৃদ্ধি হইবে। আর মনুষ্য যাহা দেখে তাহাই করিতে ইচ্ছা হয়, বিশেষতঃ বাঙালীরা সাহেবদিগের সহবাসে অনেক ফাল্তো সাহবানি শিখিয়া অভিমানে ভরে যায় ও যে-কিছু কর্ম্ম করে তাহা অহংকার হইতেই করিয়া থাকে —এ কথাটিও স্মরণ থাকিলে ক্ষতি নাই।
এইরূপ কথাবার্ত্তা হইতেছে ইতিমধ্যে বাগানের পশ্চিম দিক থেকে জনকয়েক পিয়াদা হন্২ করিয়া আসিয়া বরদা বাবুকে ঘিরিয়া ফেলিল —বরদা বাবু তাহাদিগের প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন —তোমরা কে? তাহারা উত্তর করিল —আমরা পুলিশের লোক —আপনার নামে গোম খুনির নালিশ হইয়াছে —আপনাকে হুগলির মাজিস্ট্রেট সাহেবের আদালতে যাইয়া জবাব দিতে হইবে আর আমরা এখানে গোম তল্লাস করিব। এই কথা শুনিবামাত্রে রামলাল দাঁড়াইয়া উঠিল ও পরওয়ানা পড়িয়া মিথ্যা নালিশ জন্য রাগে কাঁপিতে লাগিল। বরদা বাবু তাহার হাত ধরিয়া বসাইলেন এবং বলিলেন —ব্যস্ত হইও না, বিষয়টা তলিয়ে দেখা যাউক —পৃথিবীতে নানাপ্রকার উৎপাত ঘটিয়া থাকে। আপদ্ উপস্থিত হইলে কোনোমতে অস্থির হওয়া কর্ত্তব্য নহে—বিপদ্ কালে চঞ্চল হওয়া নির্বুদ্ধির কর্ম্ম, আর আমার উপর যে দোষ হইয়াছে তাহা মনে বেশ জানি যে আমি করি নাই —তবে আমার ভয় কি? কিন্তু আদালতের হুকুম অবশ্য মানিতে হইবে এজন্য সেখানে শীঘ্র হাজির হইব। এক্ষণে পেয়াদারা আমার বাটী তল্লাস করুক ও দেখুক যে আমি কাহাকেও লুকাইয়ে রাখি নাই। আদেশ পাইয়া পেয়াদারা চারিদিকে তল্লাশ করিল কিন্তু গুমি পাইল না।
অনন্তর বরদা বাবু নৌকা আনাইয়া হুগলি যাইবার উদ্যোগ করিতে লাগিলেন, ইতিমধ্যে বালীর বেণী বাবু দৈবাৎ আসিয়া উপস্থিত হইলেন। তাঁহাকে ও রামলালকে সঙ্গে করিয়া বরদাবাবু হুগলিতে গমন করিলেন। বেণীবাবু ও রামলাল কিঞ্চিৎ চিন্তাযুক্ত হইয়া থাকিলেন কিন্তু বরদা বাবু সহাস্য বদনে নানা প্রকার কথাবার্ত্তায় তাহদিগকে সুস্থির করিতে লাগিলেন।