অজ্ঞাত লেখক
(পৃ. ৩০-৩১)
বাংলা দেশ

পুতুল নাচের মঞ্চে একদিন কালো হত্যা নাটকের শেষ;
বিশ্বগর্ভে জন্ম নিল নব রাষ্ট্র, নাম 'বাংলা দেশ'
কোটি শহীদের শুদ্ধ রক্তের বিনিময়ে কেনা।
পীড়ন ধর্ষণপটু শয়তানের সন্তানেরা তবুও থামে না
ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থেকে স্বার্থাম্বেষী কালনেমী বন্ধুদের দ্বারে
আনবিক ধ্বংসাত্মক মরণাস্ত্রে সুসজ্জিত রণসম্ভারে
বিষধর সর্পকুল আক্রোশভরে করে কুটিল বীভৎস ফোঁসফোঁস
পলাতক শক্তিধর মুখের গ্রাসের জন্যে নিদারুণ জঘন্য আফশোস,
আদিম যুগের বন্য পশুর স্বভাবে মত্ত অসভ্য অনার্যসম।
পঙ্কিল পাপের শাস্তি দিতে আসে নিজ হাতে কালজয়ী যম,
কাল বৈশাখীর মতো লকলকে তার লাল জিহ্বা সর্বগ্রাসী
মুছে দিতে অন্ধকার গহ্বরের লোভী ক্রুর শয়তানী হাসি।

অত্যাচারী রক্তিম ভূমিকা রচে পৃথিবীর আদি ইতিহাসে,
অভিনব দৃষ্টান্তে হিটলার মুসোলিনী নাদির শাহ বুঝি হাসে।
জালিওয়ানাবাগে সাদা প্রভুদের বিভীষিকা ভুলতে চেয়েছি,
কিন্তু পারি নি, বন্ধু! শোষণে শাসনে আজও দেখতে পেয়েছি
দুঃশাসনী প্রলয়ের আয়োজনে ভ্রূকুটিতে তিক্ত অবিচার,
সভ্যতার আবরণ মুহুর্মুহু ছিন্ন করে ক্লীব অনাচার,
নারী শিশু বৃদ্ধ রুগ্ন হত্যা নির্বিচারে
বেনামী যুদ্ধের ভানে রক্তে মাংসে গড়া কোন সৈনিক কি পারে?

অন্ধ মন্ত্রে ধর্মের মুখোসধারী রক্তপায়ী মাংসলোভী জীব,
কোটি শহীদের ক্রুদ্ধ আত্মার অভিশাপ করছে নির্জীব
তিলে তিলে তোমাদের। নরকের কালো পাঁকে অতল কবরে
নিদারুণ যন্ত্রণায় তোমাদের প্রেতছায়া নিশিদিন কিলবিল করে।

সোনার মাটির দানা শহীদের পবিত্র রক্তে শুদ্ধ সার পেয়ে
সোনার ফসলে ভরে। দুনিয়ার চার দিকে চেয়ে

নব রাষ্ট্র তার নব জন্মের বাস্তব খবর ছড়ায়:
বিস্ময়ে পুলকে বিশ্ব ধীরে ধীরে বিজয়ের মুকুট পরায়
উন্নত শিরে তার। সম্মুখে প্রসারিত উন্মুক্ত প্রশস্ত দীর্ঘ পথ
ধ্বংসের কীটের মৃত্যু। তারপর গঠনের কঠিন শপথ।
বীজমন্ত্রে উদ্বুদ্ধ আট কোটি মৃত্যুহীন মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাণ,
তাদের মিলিত কণ্ঠে সোনার বাংলার প্রাণতুল্য প্রিয় গান।