ইস্তাহার/মৃত্যু
মৃত্যু
নদীর তীরে ওই ডালিম গাছের ধারে
ছোট্ট কুঁড়ে ঘরে বাঁশের বেড়ার ফাঁকে
সেদিন সহসা সূর্যের আলো এসে পড়েছিল,
যেদিন জন্ম নিয়েছিল একটি প্রাণ
নিষ্কৃত্রিম আর্তনাদে সরবে শঙ্খ রবে।
তারপর কত কাল পার হয়ে গেছে
সেই শিশুর কৈশোর যৌবন স্মৃতি বুকে নিয়ে;
সেই কুঁড়ে ঘরে যে প্রাণের জন্ম হল,
আজ সে যেন বেঁচে রইল অন্য নামে অন্য পরিচয়ে।
কবে তার তথাকথিত মৃত্যু ঘটেছে ইঁট পাথরের ঘরে,
সে কথা ওই ডালিম গাছ আর বলতে পারবে না;
কোন প্রমাণও নেই কুঁড়ে ঘরের বাঁশের বেড়ার ফাকে,
যেখানে সূর্যের আলো আজ পথ হারিয়েছে।
আজ মনে হয়, ওই কুঁড়ে ঘর আর ডালিম গাছটা
অতল পাতালে তলিয়ে গেছে নদীর ভাঙাগড়ার খেয়ালী খেলায়।
প্রভাতের শেষে প্রখর রৌদ্রের তাপে
শিশির বিন্দু যখন বাষ্প হল, আর
ডালিমের রাঙা রঙ ফিকে হল, কিংবা
মাটির বুকে নিরস ইট কাঠ ধাতু তপ্ত হল,
তখন পুনর্জন্মের ধূসর খোলস নিয়ে কঠিন বর্মে আবৃত
কাচঘরের মতো নিদারুণ নির্মম পৃথিবীর মুখোমুখি
দৃপ্ত ভঙ্গিমায় সে দাঁড়ালে, তাকে আদৌ চেনা যায় না।
রঙ করা কাঠপুতলি বিদূষকের পোষাকে বেমানান,
বেকুবের ভূমিকা নিয়ে সে বেঁচে আছে
তোমাদেরই কাছে কাছে, যেখানে চিরমৃত্যু ঘটেছে
তার যত্নলালিত কুশপুত্তলিকার দরিদ্র জন্মস্মৃতির।