কড়ি ও কোমল/জন্মতিথির উপহার
জন্মতিথির উপহার।
(একটি কাঠের বাক্স)
শ্রীমতী ইন্দিরা। প্রাণাধিকাসু
স্নেহ-উপহার এনেছিরে দিতে
লিখেও এনেছি দু-তিন ছত্তর।
দিতে কত কিযে সাধ যায় তােরে
দেবার মত নেই জিনিষ-পত্তর!
টাকাকড়ি গুলাে ট্যাঁকশালে আছে
ব্যাঙ্কে আছে সব জমা,
ট্যাঁকে আছে খালি গােটা দুত্তিন
এবার কর বাছা ক্ষমা!
হীরে জহরৎ যত ছিল মাের
পোঁতা ছিল সৰ মাটিতে,
জহরী যে যেত সন্ধান পেয়ে
নে গেছে যে যার বাটিতে!
দুনিয়া সহর জমিদারী মাের,
পাঁচ ভূতে করে কাড়াকাড়ি,
হাতের কাছেতে যা-কিছু পেলুম,
নিয়ে এনু তাই তাড়াতাড়ি!
স্নেহ যদি কাছে রেখে যাওয়া যেত
চোখে যদি দেখা যেতরে,
বাজারে-জিনিষ কিনে নিয়ে এসে
বল্ দেখি দিত কে তোরে!
জিনিষটা অতি যৎসামান্য
রাখিস্ ঘরের কোণে,
বাক্সখানি ভোরে স্নেহ দিনু তোরে
এইটে থাকে যেন মনে!
বড়সড় হবি ফাঁকি দিয়ে যাবি,
কোন্খেনে র’বি লুকিয়ে,
কাকা ফাকা সব ধুয়ে-মুছে ফেলে
দিবি একেবারে চুকিয়ে,
তখন্ যদিরে এই কাঠ-খানা
মনে একটুকু তোলে ঢেউ—
একবার যদি মনে পড়ে তোর
“বুজি” বলে বুঝি ছিল কেউ!
এই যে সংসারে আছি মোরা সবে
এ বড় বিষম দেশটা!
ফাঁকিফুঁকি দিয়ে দুরে চ’লে মেতে
ভুলে যেতে সবার চেষ্টা!
ভয়ে ভয়ে তাই সবারে সবাই
কত কি যে এনে দিচ্চে,
এটা-ওটা দিয়ে স্মরণ জাগিয়ে
বেঁধে রাখিবার ইচ্ছে!
রাখ্তে যে মেলাই কাঠ খড় চাই,
ভূলে যাবার ভারি সুবিধে,
ভালবাস যা’রে কাছে রাখ্ তারে
যাহা পাস্ তারে খুবি দে!
বুঝে কাজ নেই এত শত কথা,
ফিলজফি হোক্ ছাই!
বেঁচে থাক তুমি সুখে থাক বাছা
বালাই নিয়ে ম’রে যাই।