আরও একবার জীবনকে যদি নতুনভাবে আরম্ভ করা যেত
দরকারি মেরামত করে নিয়ে
কেমন হত তাহলে
কথাটা এমন করে আগে ভাবিনি
যদি ছেলেবেলাকার সেই কানামাছি, সেই এক্কাদোক্কা
ফিরে আসে, যদি ফিরে আসে
সেই গানের ইশকুল থেকে ফিরে আসার সময়
ব্রহ্মদত্যি-ওয়ালা গাছের নীচে এসে
চোখ বুজে ছোটা, ফিরে আসে নদীতীরে একা
মন-খারাপের সন্ধেবেলা

আরও একবার জীবনকে যদি নতুনভাবে আরম্ভ করা যেত
সব ভুল শুধরে নিতাম
আর কখনও উপপাদ্য মেলাতে কষ্ট হত না
ইতিহাস পরীক্ষায় সবগুলো উত্তর
দ্রুত লিখে ফেলে হাসতে হাসতে বেরিয়ে আসতাম
নরম মনের সরল ছেলেটা
তাহলে এত সহজে চোখে জল আসতে দিত না
সরস্বতী পুজোয় ফুল তুলতে গিয়ে
হঠাৎ দিঘির পারে কুঁচবরণ কন্যার মেঘবরণ চুল দেখে
শিউরে উঠত না

আরও একবার জীবনকে যদি নতুনভাবে আরম্ভ করা যেত
মুখোশে-ঢাকা মুখগুলি
ঠিক ঠিক শনাক্ত করা যেত, নিজেকে বলতাম
শর্মা, ওদিকে আর নয়
দরকারি মেরামত করে নিয়ে সম্পর্কগুলিকে কখনও
হারিয়ে যেতে দিতাম না
কোনটা পথ কোনটা পথ নয় আদৌ, জানা থাকত যদি
হয়ে উঠতাম সম্পূর্ণ সফল একজন মানুষ
আর আগেই বুঝে নিতাম কারা হাসির আড়ালে বিপুল দক্ষতায়
লুকিয়ে রেখেছে সেঁকো বিষ

আরও একবার জীবনকে যদি নতুনভাবে আরম্ভ করা যেত
ভালবাসার পান্থপাদপদের জন্যে
আরো বেশি করে আলো-হাওয়া-রোদের শুশ্রূষা
পাঠিয়ে দিতাম, জেনে নিতাম কবে কখন ঘনিয়ে উঠবে
কালো ছায়া আর তার ঠিক আগে
সূর্যের কাছে চেয়ে নিতাম আরোগ্যের বিশল্যকরণী
পৃথিবীটা আরো একটু সহনীয় হত
অনেক আগেই পৌঁছে যেতাম ভালবাসার কাছে
তাতে কোরকগুলি আরো দ্রুত ফুটে উঠত
জীবন হয়তো হত আরও একটু বর্ণময়, আরও একটু গভীর

আরও একবার জীবনকে যদি নতুনভাবে আরম্ভ করা যেত
কবিতা ভাসিয়ে নিয়ে যেত চরাচর
প্রতিটি মুহূর্তে ভালবাসা জাগিয়ে রাখত নিদ্রাতুরদের
সমস্ত খানাখন্দ, বিষে-ভরা আয়োজন
পেরিয়ে-পেরিয়ে জীবন হয়ে উঠত আরও অপ্রতিরোধ্য
আরও একবার যদি...

বিকেল॥ ২-৪৫॥ ১৪.১২.২০১০॥ রঞ্জুর বাড়ি, কলকাতা