কবিতা/আবেগ
শারদ পূর্ণিমা নিশি
হাসে রে সুন্দর,
সুষমা খেলায়ে যায়
দিক দিগন্তর।
তারি কথা লয়ে যেন
প্রাণে প্রাণে হায়!
সেই ত কুটীর অই
অই দেখা যায়।
কোকিল ঝঙ্কারে একি
প্রাণে হাহাকার,
জোছনার বুকে ঢালা
ও কি ও আঁধার।
আপন ইচ্ছায় হায়
পাগল যেমন,
কত আশা হৃদয়ের
কত সুখ জীবনের
দিয়া বিসর্জ্জন,
যাহারে দিয়াছি প্রাণ
সে আজ কোথায়?
সেই ত কুটীর অই
অই দেখা যায়।
জ্বালায় পুড়ায়ে প্রাণ
আজ জোছনায়,
সেই ত কুটীর অই
অই দেখা যায়।
বরিষার শেষ মেঘ
শারদ শোভায়
কেন সে দাঁড়ায়ে কেন
কেন আজ হায়!
হারান সুখের শুধু
শেষ স্মৃতি লয়ে,
শূণ্য প্রাণে আজ সে রে
কেন দাঁড়াইয়ে।
মৃতদেহে হয় কি রে
প্রাণের সঞ্চার?
শূন্য গেহে সে কি ফিরে
আসিবে আবার?
শারদ পূর্ণিমা নিশি
হাসে রে সুন্দর।
সুষমা খেলায়ে যায়
দিক দিগন্তর।
বারেক রে ভালবাসা।
না জানায়ে মুখে,
বুকের বিষম বোঝা
চেপে রেখে বুকে।
ভালবাসা না চাহিয়ে
ভালবেসে যায়।
যে রূপ দেখিনু আমি
পাগলের প্রায়।
নয়নের সব শোভা
কাড়ি’ লয়ে হায়!
সে মোর যাইল চলে
সে আজ কোথায়?
ভোলা মন ভুলাইয়ে
কুহকী আশায়.
সেই ত রয়েছে তার
আজ জোছনায়।
বিমল রজত কান্তি
মূর্ত্তিময়ী যেন শান্তি
সুখের কথায়
কুমুদী ফুটিয়া জলে
যেন তার কথা তুলে
দেখাইছে তার
সরমের সে বিকাশ
সুন্দর যে আর।
কোকিল ঝঙ্কারে এ কি
প্রাণে হাহাকার।
জোছনার বুকে ঢালা
ওকি ও আঁধার।
সায়াহ্ন সুখের কোলে
ও কি কাল ছায়া দোলে
বিবর্ণ মলিন,
আজ, আজ আজ না সে
মিলনের দিন।
কি দেখিতে এসেছিনু,
কি দেখিয়া যাই;
কি বলে পরাণে আজ
প্রবোধ রে পাই।
হুহু করে জ্বলে প্রাণ
দগ্ধ তৃষিকায়,
বলে দে বলে দে চাঁদ!
সে আজ কোথায়?
ধরায় অমিয়ারাশি
মূর্ত্তিময়ী সেই হাসি
মিশেছে কি হায়!
অমিয় যেখানে থাকে
তোর কি সেথায়,
আশা তৃষা মন মত
ছাই ভস্ম সব যত
এখন যা প্রধূমিত
জ্বলন্ত চিতায়।
নিবাইয়া সব আজ
নিবায়ে ধরায়।
তার সুখে সুখ দুঃখ
দিয়া বিসর্জ্জন,
ফিরাইয়ে ধরা হ’তে
দগ্ধ দু'নয়ন।
জুড়াই জুড়াই প্রাণ
বলি নিরন্তর।
শারদ পূর্ণিমা নিশি
হাসে রে সুন্দর