কিশোরদের মন/একাদশ পরিচ্ছেদ
আস্ছে যাচ্ছে লোকের পর লোক সুবিনয়দের বাসায়। মা ধানদূর্ব্বার আশীর্ব্বাদ দিচ্ছেন।
মা বল্লেন-“বিমল আজো, এখনো এল না রে?
বোধ হয় আরো রাত্তিরে আস্বে?”
মণ্টুরা যখন সুবিনয়কে প্রণাম করেই বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ল, সুবিনয় তখন শুধু তাদের হাতের ছোঁয়াটাই পেল, তাদের মুখ সে কি দেখতে পেল?
মাকে, বাবাকে, সে প্রণাম করেছে।
গাছপালার ফুলে হাসা প্রণাম নিয়ে, শরতের জ্যোৎস্না মাখা মেঘেরা চলে গেল। সে তা-ও দেখ্তে পেল না।
ফার্ণের টব্টার কাছে সে শুধু দাঁড়িয়ে রইল।
তিনটে চাদর, ঝুল্ছিল আল্নাতে। একটা চাদর গলায় জড়িয়ে নিয়ে সে বারান্দায় ঘুর্তে লাগল।
কতক্ষণ পরে সে চাদরটা গলা থেকে খুলে’ একটা চেয়ারের ব্যাকে রেখে, তাতেই বসে পড়্ল।
বসে’ বসে’ কতকটা ঘুমের মত আস্ছিল, কেউ দেখে বোধ হয় এই রকম মনে কর্ত।
হঠাৎ সে উঠে, খালি সাটটা গায়ে, মাঠের উপর দিয়ে চল্ল।
রাস্তার আলোর তল দিয়ে লোকজনেরা চল্ছে, শব্দ করে গাড়ী চল্ছে কাঁকর-পথের মাঝখান দিয়ে, ঘাসগুলোর উপর দিয়ে চোক বুলিয়ে, সে, গাছের আড়াল ধরে আস্তে চল্ল। ষ্টেসানের পুকুরের ওপারের পথ বেয়ে থানা পেরিয়ে গিয়ে, সে বিমলদের বাসায় উঠেছে। ভিতরে ঢুকে, সিঁড়িতে উঠেই সে থেমে গেল।
পিছন ফিরে দাঁড়িয়ে, কাম্ড়াতে লাগ্ল হাতের বুড়ো আঙুলের নখ্টা।
কোথাও সাড়া শব্দ নেই।
ভাব্ছিল ফিরে যাবে।
বিমলদের ঘরে, মা ঘুমিয়ে পড়েছেন।
বিমল মাথায় একটা পাগ্ড়ি জড়ালে।
তারপর সেটাকে খুলে রেখে কতক্ষণ মায়ের পায়ের কাছে বসে রইল।
তারপর আবার উঠে বেরিয়ে এল।
আস্তেই, দোর খুলেই,—সাম্নে—সুবিনয়!
শব্দ শুনে’ সুবিনয় ফিরেই,—দেখ্লে—বিমল!
একেবারে বিস্ময়ে, দুজনে কতক্ষণ দুজনের দিকে চেয়ে থাক্লে।
তারপর হেসে দিলে বিমল, সুবিনয়, দুজনেই
আর ক’ সেকেণ্ডের মধ্যে দুজন দুজনের বুকে—বিজয়ার আলিঙ্গনে বাঁধা পড়্ল।
হঠাৎ সুবিনয়ের হাত বিমলের পিঠের একটা পকেটে গেল বেধে!
চম্কে সুবিনয় বল্লে,—
বিমল বল্লে—
“সেই জামাটা, মাকে দিয়ে নিয়েছি সারিয়ে, পিছনে একটা পকেট করে’।
আজ ইস্তিরি করে পরেছি