ক্ষণিকা/অতিথি
অতিথি
ওই শোনো গো অতিথ বুঝি আজ,
এল আজ।
ওগো বধূ, রাখো তোমার কাজ,
রাখো কাজ।
শুনছ না কি তোমার গৃহদ্বারে
রিনিঠিনি শিকলটি কে নাড়ে,
এমন ভরা সাঁঝ!
পায়ে পায়ে বাজিয়ো নাকো মল,
ছুটো নাকো চরণ চঞ্চল,
হঠাৎ পাবে লাজ।
ওই শোনো গো অতিথ এল আজ,
এল আজ।
ওগো বধূ, রাখো তোমার কাজ,
রাখো কাজ॥
নয় গো কভু বাতাস এ নয় নয়,
কভু নয়।
ওগো বধূ, মিছে কিসের ভয়,
মিছে ভয়।
আঁধার কিছু নাইকো আঙিনাতে,
আজকে দেখো ফাগুন-পূর্ণিমাতে
আকাশ আলোময়।
নাহয় তুমি মাথার ঘোমটা টানি
হাতে নিয়ো ঘরের প্রদীপখানি
যদি শঙ্কা হয়।
নয় গো কভু বাতাস এ নয় নয়,
কভু নয়।
ওগো বধূ, মিছে কিসের ভয়,
মিছে ভয়॥
নাহয় কথা কোয়ো না তার সনে,
পান্থ-সনে।
দাঁড়িয়ে তুমি থেকো একটি কোণে,
দুয়ার-কোণে।
প্রশ্ন যদি শুধায় কোনো-কিছু
নীরব থেকো মুখটি ক’রে নিচু
নম্র দুনয়নে।
কাঁকন যেন ঝংকারে না হাতে
পথ দেখিয়ে আনবে যবে সাথে
অতিথিসজ্জনে।
নাহয় কথা কোয়ো না তার সনে,
পান্থ-সনে।
দাড়িয়ে তুমি থেকো একটি কোণে,
দুয়ার-কোণে॥
ওগো বধূ, হয় নি তোমার কাজ?
গৃহকাজ?
ওই শোনো কে অতিথ এল আজ,
এল আজ।
সাজাও নি কি পূজারতির ডালা।
এখনো কি হয় নি প্রদীপ জ্বালা
গোষ্ঠগৃহের মাঝ।
অতি যত্নে সীমন্তটি চিরে
সিঁদুরবিন্দু আঁক নাই কি শিরে।
হয় নি সন্ধ্যাসাজ?
ওগো বধু, হয় নি তোমার কাজ?
গৃহকাজ?
ওই শোনো কে অতিথ এল আজ,
এল আজ॥