ক্ষণিকা/সম্বরণ
< ক্ষণিকা
(পৃ. ১২৮-১২৯)
সম্বরণ
আজকে আমার বেড়া-দেওয়া বাগানে
বাতাসটি বয় মনের-কথা-জাগানে।
আজকে কেবল বউকথাকও ডাকে
কৃষ্ণচূড়ার পুষ্পপাগল শাখে—
আমি আছি তরুর তলায় পা মেলি,
সামনে অশোেক টগর চাঁপা চামেলি।
আজকে আমার বেড়া-দেওয়া বাগানে
বাতাসটি বয় মনের-কথা-জাগানে॥
এমনিতরো বাতাসবওয়া সকালে
নিজেরে মন হাজারো বার ঠকালে।
আপ্নারে হায় চিত-উদাস গানে
উড়িয়ে দিলে অজানিতের পানে-
চিরদিন যা ছিল নিজের দখলে
দিয়ে দিলে পথের পান্থ-সকলে।
আজকে আমার বেড়া-দেওয়া বাগানে
বাতাসটি বয় মনের-কথা-জাগানে॥
ভেবেছি তাই আজকে কিছুই গাব না
গানের সঙ্গে গলিয়ে প্রাণের ভাবনা।
আপ্না ভুলে, ওরে ভাবোম্মদ,
দিস্ নে ভেঙে তোর বেদনাবাঁধ-
মনের সঙ্গে মনের কথা গাঁথা সে।
গাব না গান আজকে দখিন-বাতাসে।
আজকে আমার বেড়া-দেওয়া বাগানে
বাতাসটি বয় মনের-কথা-জাগানে॥
শিলাইদহ
২ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৭