যুগল

ঠাকুর, তব পায়ে নমোনমঃ,
পাপিষ্ঠ এই অক্ষমেরে ক্ষম,
আজ বসন্তে বিনয় রাখো মম—
বন্ধ করো শ্রীমদ্ভাগবত।
শাস্ত্র যদি নেহাত পড়তে হবে
গীত-গোবিন্দ খোলা হোক-না তবে;
শপথ মম, বোলো না এই ভবে
জীবনখানা শুধুই স্বপ্নবৎ!
একটা দিনের সন্ধি করিয়াছি,
বন্ধ আছে যমরাজের সমর—
আজকে শুধু এক বেলারই তরে
আমরা দোঁহে অমর, দোঁহে অমর

স্বয়ং যদি আসেন আজি দ্বারে
মানব নাকো রাজার দারোগারে—
কেল্লা হতে ফৌজ সারে সারে
দাঁড়ায় যদি, ওঁচায় ছোরাছুরি,

বলব, রে ভাই, বেজার কোরো নাকো—
গোল হতেছে, একটু থেমে থাকো,
কৃপাণ-খোলা শিশুর খেলা রাখো
খ্যাপার মতো কামান-ছোঁড়াছুঁড়ি!
একটুখানি সরে গিয়ে করো
সঙের মতো সঙিন-ঝমঝমর—
আজকে শুধু এক বেলারই তরে
আমরা দোঁহে অমর, দোঁহে অমর॥

বন্ধুজনে যদি পুণ্যফলে
করেন দয়া, আসেন দলে দলে,
গলায় বস্ত্র কব নয়নজলে—
ভাগ্য নামে অতিবর্ষাসম!
এক দিনেতে অধিক মেশামেশি
শ্রান্তি বড়োই আনে শেষাশেষি—
জান তো, ভাই, দুটি প্রাণীর বেশি
এ কুলায়ে কুলায় নাকো মম।
ফাগুন মাসে ঘরের টানাটানি,
অনেক চাঁপা, অনেকগুলি ভ্রমর—
ক্ষুদ্র আমার এই অমরাবতী,
আমরা ছুটি অমর, দুটি অমর॥