ক্ষণিকা/শাস্ত্র
শাস্ত্র
পঞ্চাশোর্ধ্বে বনে যাবে
এমন কথা শাস্ত্রে বলে;
আমরা বলি বানপ্রস্থ
যৌবনেতেই ভালো চলে।
বনে এত বকুল ফোটে,
গেয়ে মরে কোকিল পাখি,
লতাপাতার অন্তরালে
বড় সরস ঢাকাঢাকি!
চাঁপার শাখে চাঁদের আলো,
সে সৃষ্টি কি কেবল মিছে?
এ-সব যারা বোঝে তারা।
পঞ্চাশতের অনেক নীচে!
পঞ্চাশোর্ধ্ব বনে যাবে
এমন কথা শাস্ত্রে বলে;
আমরা বলি বানপ্রস্থ
যৌবনেতেই ভালো চলে॥
ঘরের মধ্যে বকাবকি,
নানান মুখে নানা কথা;
হাজার লোকে নজর পাড়ে,
একটুকু নাই বিরলতা।
সময় অল্প, ফুরায় তাও
অরসিকের আনাগোনায়,
ঘণ্টা ধরে থাকেন তিনি
সৎপ্রসঙ্গ-আলোচনায়।
হতভাগ্য নবীন যুবা
কাজেই থাকে বনের খোঁজে,
ঘরের মধ্যে মুক্তি যে নেই
এ কথা সে বিশেষ বোঝে।
পঞ্চাশোর্ধ্বে বনে যাবে
এমন কথা শাস্ত্রে বলে;
আমরা বলি বানপ্রস্থ
যৌবনেতেই ভালো চলে॥
আমরা সবাই নব্যকালের
সভ্য যুবা অনাচারী
মনুর শাস্ত্র শুধরে দিয়ে।
নতুন বিধি করব জারি-
বুড়ো থাকুন ঘরের কোণে
পয়সাকড়ি করুন জমা,
দেখুন বসে বিষয়পত্র,
চালান মামলা-মকদ্দমা;
ফাগুন মাসে লগ্ন দেখে
যুবারা যাক বনের পথে,
রাত্রি জেগে সাধ্যসাধন,
থাকুক রত কঠিন ব্রতে!
পঞ্চাশোর্ধ্বে বনে যাবে
এমন কথা শাস্ত্রে বলে;
আমরা বলি বানপ্রস্থ
যৌবনেতেই ভালো চলে॥