খুন না চুরি?/চতুর্থ পরিচ্ছেদ
চতুর্থ পরিচ্ছেদ।
নকুলেশ্বর-তলা পার হইয়া গাড়ী ক্রমাগত দক্ষিণমুখেই যাইতে লাগিল। পুর্ব্বে দুই একটা আলোক দেখিতে পাইতেছিলাম, কিন্ত ক্রমে আর তাহাও দেখা গেল না। পথটা অতি সঙ্কীর্ণ, দুইপার্শ্বে বাগান বা বন। বড় বড় বৃক্ষগুলিতে খদ্যোতকুল আশ্রয় লইয়াছিল। দূর হইতে সেগুলিকে অতি মনোরম দেখাইতেছিল।
একে বাত্রি দশটা বাজিয়া গিয়াছিল, তাহার উপর আকাশে চন্দ্র নাই। চারিদিক ভয়ানক অন্ধকারে আচ্ছন্ন। পথে জন- প্রানীর সাড়া-শব্দ নাই, কোথাও একটাও আলোক নাই। কোচমান অতি কষ্টে গাড়ীর আলোকে শকট-চালনা করিতেছিল।
কিছুদূর এইরূপে গমন করিয়া কোচমান সহসা গাড়ী থামাইল। আমি ভাবিলাম, বুঝি সে যথাস্থানে আসিয়া পড়িয়াছে এবং সেই মনে করিয়া গাড়ী হইতে অবতরণ করিতে উদ্যত হইয়াছি, এমন সময় কোচমান বলিল, “বাবু! পথ ভুলে অন্যদিকে এসে পড়েছি। সে বাগানখানি এদিকে নয়। আমরা পূর্ব্বদিকে যে গলিটা ছেড়ে এসেছি, বোধ হয় সেই পথেই আমাদিগকে যেতে হবে।”
একে রাত্রি অধিক, তাহার উপর সেই ঘোর অন্ধকার, তাহাতে আবার আমি ক্লান্ত হইয়া পড়িয়াছিলাম, কোচমানের কথায় আমার সর্ব্বাঙ্গ জ্বলিয়া উঠিল। ক্রোধে কাঁপিতে কাঁপিতে আমি কর্কশস্বরে বলিলাম, “তুমি কি মনে করিয়াছ যে, আমার চক্ষে ধূলি দিয়া পলায়ন করিবে?” আমি বহুদিন হইতে এই কার্য্য করিতেছি। চোর, ডাকাত, দস্যুদিগের সহিত আমার চির বিবাদ, বদ-মায়েসগণ আমার নাম শুনিলে থর থর বিকম্পিত হয়! আর তুমি একজন সামান্য কোচমান হইয়া আমার সহিত চাতুরী করিতেছ? ধন্য তোমার সাহস! কিন্তু তুমি মনে করিও না যে, আমি তোমার কথায় ভুলিব। যদি ভাল চাও, এখনই সেইস্থানে লইয়া চল।”
আমাকে অত্যন্ত রাগান্বিত দেখিয়া কোচমান গাড়ী হইতে অবতরণ করিল এবং আমার পদতলে বসিয়া জোড়হাত করিয়া বলিল, “হুজুর! আমার এমন সাহস নাই যে, আমি পুলিসের বাবুকে প্রবঞ্চনা করিব। আল্লার দোহাই, আমি সত্য সত্যই পথ ভুলে গিয়েছি। একে _______’তে এই ঘোর অন্ধকার, আমি রাস্তা চিন্তে পাচ্চি না। আপনি একটু এই গাড়ীতে বসুন, আমি একবার দেখে আসি।”
এই বলিয়া উত্তরের অপেক্ষা না করিয়াই সে সেখান হইতে চলিয়া গেল। আমি সেই ভয়ানক তমসাচ্ছন্ন নিশীথে একাকী সেই অপরিচিত স্থানে বসিয়া রহিলাম। একরার মনে হইল, লোকটা যদি দলবল লইয়া হঠাৎ আমায় আক্রমণ করে, তাহা হইলেই আমার সর্ব্বনাশ! একা দুই জনের বিরুদ্ধেও আত্মরক্ষা করিতে পারা যায়, কিন্তু যদি তিন চারিজন বা ততোধিক লোকে একেবারে চারিদিক হইতে আক্রমণ করে, তাহা হইলে কি করিব? লোকটাকে ছাড়িয়া দিয়া ভাল করি নাই। সে ত স্বচ্ছন্দে গাড়ী লইয়া পথ অন্বেষণ করিতে পারিত! গাড়ীর সহিত আমাকে এখানে রাখিয়া গেল কেন? নিশ্চয়ই তাহার মনে কোন দুরভিসন্ধি আছে।
এই প্রকার চিন্তা করিয়া আমি পকেট হইতে ক্ষুদ্র পিস্তলটী বাহির করিলাম এবং গাড়ী হইতে নামিয়া নিকটস্থ একটা প্রকাণ্ড বৃক্ষের তলে গিয়া প্রচ্ছন্নভাবে দাঁড়াইয়া রহিলাম।ভাবিলাম, যদি কোচমান একা আইসে, তাহা হইলে কোন কথাই নাই। কিন্ত যদি লোক জন লইয়া আইসে, তাহা হইলে তাহার অভিপ্রায় নিশ্চয়ই মন্দ।
কিছুক্ষণ পরে অদূরে কাহার পদশব্দ শুনিতে পাইলাম। আমি পিস্তলটী ঠিক করিয়া ধরিলাম। কিন্তু আমার অনুমান মিথ্যা হইল। কোচমান একাই ফিরিয়া আসিয়া একেবারে গাড়ীর নিকটে গেল এবং দরজার নিকট দাঁড়াইয়া বলিল, “হুজুর! পথ ঠিক করিয়াছি। আর কোন ভয় নাই।”
কোচমানের কথায় আন্তরিক প্রীত হইলাম এবং ধীরে ধীরে আসিয়া পুনরায় গাড়ীতে উঠিয়া বসিলাম। কোচমান ভাবিল, আমি বুঝি প্রস্রাব করিতে গিয়াছিলাম। সেই ভাবিয়া সে বলিল, বাবু, প্রস্রাব কর্তে কতদূরে গিয়েছিলেন, এই অন্ধকারে কে আপনাকে দেখ্তে পেত, পেলেই বা আপনার কি কর্তো?”
আমি সে কথার কোন উত্তর করিলাম না, বলিলাম, “যদি ঠিক সন্ধান পাইয়া থাক, তবে একটু শীঘ্র লইয়া চল। রাত্রি অনেক হইয়া গিয়াছে। এমন সময় সেখানে গিয়া যে আজ কার্য্য সিদ্ধ করিতে পারি, এমন ত বোধ হয় না।”
কোচমান কোন উত্তর না দিয়া অশ্বে কশাঘাত করিল। অশ্বদ্বয় ঊর্দ্ধশ্বাসে দৌড়িল। প্রায় আধঘণ্টা পরে একটী প্রকাণ্ড বাগানের ভাঙ্গা ফটকের নিকট গাড়ী থামাইয়া কোচমান বলিল, “হুজুর, এই সেই বাগান। এই বাগানের ভিতর একখানা ভাঙ্গা বাড়ী আছে। বুড়ী মেয়ে দুটীকে নিয়ে সেই বাড়ীতে গিয়েছিল। তার পর কি হ’ল আমি জানি না।”
আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “বাগানখানি কার?”
কো। আজ্ঞে সে কথা বল্তে পার্লাম না। এদিকে আমি আর কখনও আসি নাই।
আ। নিকটে কোন বাড়ী আছে?
কো। আজ্ঞে না। চার্দিকেই বাগান।
আ। বাগান থাকিলে নিশ্চয়ই মালি আছে, তাহাদের বাস করিবার ঘরও আছে। সকালে কোন মালীর সহিত তোমার দেখা হইয়াছিল?
কো। আজ্ঞে না—জনপ্রাণী না।
আ। এখান হইতে ফাঁড়ী কতদূর?
কো। প্রায় একক্রোশ।
আ। তোমাকে বলিষ্ঠ বলিয়া বোধ হইতেছে, চল দেখি, উভয়ে বাগানের ভিতর যাই। প্রয়োজন হইলে তোমাকে আমার সাহায্য করিতে হইবে। পারিবে?
কো। হুজুর—খুব পারিব। আমি একাই তিনজনকে রাখ বো।
ঈষৎ হাসিয়া কোচমানকে সঙ্গে লইলাম এবং অতি সন্তর্পণে সেই অন্ধকারের ভিতর দিয়া বাগানে প্রবেশ করিলাম। আমার পকেটে চোরা লণ্ঠন ছিল, বাহির করিয়া জ্বালিয়া ফেলিলাম এবং সেই আলোকের সাহায্যে অতি ধীরে ধীরে একটা ভগ্ন অট্রালিকার দ্বারে উপনীত হইলাম। দেখিলাম, দরজা খোলা। কোচমানকে সঙ্গে লইয়া আমি সেই দ্বার অতিক্রম করিলাম এবং অতি সন্তর্পণে ভিতরে প্রবেশ করিলাম।
বাহিরেও যেমন অন্ধকার, ভিতরেও ততোধিক, যতক্ষণ বাহিরে ছিলাম, চোরা লণ্ঠনটী হাতে ছিল তাহারই মৃদু আলোকে কিছু কিছু দেখিতেও পাইতেছিলাম। কিন্তু ভিতরে যাইয়া লঠনটী পকেটে রাখিলাম। ভাবিলাম, যদি কেহ দেখিতে পায়, এখনই পলায়ন করিবে। তাহা হইলে সেই ঘোর অন্ধকারের মধ্যে কাহাকেও খুঁজিয়া বাহির করা বড় সহজ হইবে না।
কিছুদূর অগ্রসর হইয়া একটা প্রকাণ্ড ঘরের দরজার সম্মুখে আসিলাম। বাহির হইতে দেখিলাম, ভিতরে তিনজন প্রশান্তমূর্ত্তি সন্ন্যাসী একমনে ধ্যানে নিমগ্ন। সকলেরই চক্ষু মুদিত; সকলেই নাভীর নিম্নে করদ্বয় মিলিত করিয়া, একাগ্রচিত্তে ঈশ্বরোপাসনায় নিযুক্ত। সম্মুখে গ্রজ্বলিত অগ্নি ধূ ধূ শব্দে জ্বলিতেছিল।
তাহাদের গভীর ও প্রশান্ত মূর্ত্তি দেখিয়া আমার ভক্তির উদ্রেক হইল। যে কার্য্যে গিয়াছিলাম, সহসা তাহা করিতে পারিলাম না। ভাবিলাম, এমন শান্তমূর্ত্তি যাহাদের, তাহারা নারীহত্যা করিবে কেন? কিন্তু পরিক্ষণেই দেখিলাম, তিনজনের ললাটদেশে সিন্দুরের দীর্ঘফোঁটা, গলে রুদ্রাক্ষ মালা, হস্তেও অনেকগুলি রুদ্রাক্ষ, পরিধানে রক্তবর্ণ পট্টবাস, গলে যজ্ঞোপবীত। বেশ দেখিয়াই বোধ হইল, তাহারা কাপালিক। শক্তি-উপাসক। শুনিয়াছি, কাপালিকগণ সিদ্ধ হইবার জন্য নরহত্যা করিতেও পশ্চাৎপদ হয় না। এরূপ ঘটনা অনেক শোনা গিয়াছিল। কিন্তু তাহাদের দ্বারা নারীহত্যা একপ্রকার অসম্ভব বলিয়া বোধ হইল। যে শক্তির উপাসনার জন্য তাহারা সেই কঠোর নিয়ম প্রতিপালন করিতেছে, ইচ্ছা করিয়া কেন তাহারা সেই শক্তিকে খুন করিবে, বুঝিলাম না।
যাহাই হউক, দ্বার সমীপে গিয়া যখন দেখিলাম, তিনজন মাত্র সন্ন্যাসী—আর কোন লোক নাই, তখন আমার সাহস হইল। আমি বাহির হইতে জুতার শব্দ করিতে লাগিলাম। ভাবিলাম, সে শব্দে তাহাদের ধ্যান ভঙ্গ হইবে। কিন্তু আমার অনুমান মিথ্যা হইল। তাহাদের কেহই চক্ষু উন্মীলন করিল না, সকলেই পূর্ব্বের মত ধ্যানে নিমগ্ন রহিল।
আমি আর বিলম্ব করিতে পারিলাম না। কোচমানকে বাহিরে রাখিয়া আমি একাই ভিতরে যাইলাম এবং চীৎকার করিয়া ডাকিতে লাগিলাম। অনেক ডাকাডাকির পর সর্ব্বাপেক্ষা কনিষ্ঠ চক্ষু চাহিল, কিন্তু সম্মুখে আমাকে দেখিয়া পুনরায় চক্ষু মুদিত করিল। আমি বিষম ফাঁপরে পড়িলাম। কাহারও নাম জানি না সুতরাং কি বলিয়া ডাকিব স্থির করিতে না পারিয়া, পুনরায় চিৎকার করিতে লাগিলাম। প্রায় আধ ঘণ্টা পরে বয়োজ্যেষ্ঠ সন্ন্যাসী চক্ষু উন্মীলন করিল, আমাকে পরিষ্কার বাঙ্গালা ভাষায় জিজ্ঞসা করিল, “কেন বাপু! এখানে এত গোলযোগ করিতেছ? গোলমালের ভয়ে আমরা লোকালয় ছাড়িয়া এই নির্জ্জন বনের মধ্যে আশ্রয় লইয়াছি। আর তুমি কিনা স্বচ্ছন্দে এখানে আসিয়া আমাদের ধ্যান ভঙ্গ করিতেছ। আকৃতি দেখিয়া তোমায় জ্ঞানবান্ বলিয়া বোধ হইতেছে, কিন্তু এ কি কাজ তোমার!”
গৌরীর মুখে যাহা শুনিয়াছিলাম, তাহাতে তাহাদের উপর কিছুমাত্র ভক্তির উদ্রেক হয় নাই। বরং তাহার মুখে ঐ সকল কথা শুনিয়া আমার ক্রোধ হইল। রাগ সম্বরণ করিয়া ঈষৎ কর্কশ স্বরে বলিলাম, “আর তোমার সাধুগিরিতে কাজ নাই। এখন ওঠ, আমার সঙ্গে থানায় চল।”
থানার নাম শুনিয়া সন্ন্যাসীর কিছুমাত্র ভয় হইল না। সে হাসিয়া উঠিল, পরে বলিল, “চল, আমাদিগকে যেখানে লইয়া যাইবে সেইখানেই যাইব। কিন্তু সেখানে যেন একটু নির্জ্জন স্থান পাই, আমরা যেন নির্ব্বিবাদে ধ্যান করিতে পারি।”
আমি হাসিয়া উঠিলাম। হাসিতে হাসিতে বলিলাম, “এখন বুজরুকি রাখ ঠাকুর! সকালে যে কাণ্ড করেছ, তাহাতে শীঘ্রই চিরধ্যানে নিমগ্ন হতে হবে। আগে উঠ, পরে এই দুই জনকে নিয়ে শীঘ্র আমার সঙ্গে এস।”
সন্ন্যাসী গম্ভীরভাবে বলিল, “সত্যই কি আমাদিগকে তোমার সহিত যাইতে হইবে? সকালে কি কাণ্ড করেছি বাবা?”
আ। এখনও বলিতেছি, বুজরুকি রাখ, সকালে কি করেছ জান না না কি?
স। ধর্ম্মই আমাদের একমাত্র অবলম্বন। আমি সেই ধর্ম্মের দোহাই দিয়ে বলিতেছি যে, সত্যই আমি তোমার কথা কিছুই বুঝিতে পারিতেছি না।
আমি বিস্মিত হইলাম। বলিলাম, “সে কি! শোভন সিংহের কন্যাকে খুন করিয়া আবার মিথ্যা কথা বলিতেছ? তুমি কেমন সন্ন্যাসী? শক্তির উপাসক হইয়া শক্তিকে খুন?”
আমার কথা শুনিয়া সন্ন্যাসী হাসিয়া উঠিল। কিছুক্ষণ পরে বলিল, “বাবা! তোমার ভুল হইয়াছে। কোথায় আসিতে কোথায় আসিয়াছ, আমরা শোভন সিংএর কন্যাকে আজ দেখিও নাই।”
আ। আজ দেখ নাই, তবে কি আর কখনও দেখিয়াছিলে?
স। সে অনেক দিনের কথা।
আ। তবে তুমি শোভন সিংকে চেন?
স। বেশ চিনি, আমারই এক আত্মীয়ের নাম শোভন সিং। রূপসী নামে তার এক কন্যা ছিল। কিন্তু জানি না, সে এখনও জীবিত আছে কিনা?
আ। তোমার আত্মীয়ের নিবাস কোথায়?
স। নিকটেই—এই ভবানীপুবেই তাহার বাড়ী।
আ। আর তোমার?
স। শোভনেরই বাড়ীর নিকটে ছিল; কিন্ত এখন আর নাই। এখন ____ সেই আমার বাড়ী।
আ। কত দিন হইল তুমি এই বেশ ধরিয়াছ?
স। প্রায় দুই বৎসর হইল।
আ। সংসার ত্যাগ করিলে কেন?
স। সে অনেক কথা।
আ। শোভন সিং কি তোমার শত্রু?
স। না—এ জগতে আমার শত্রুও কেহ নাই, মিত্রও কেহ নাই।
সন্ন্যাসীর কথা শুনিয়া আমার সন্দেহ বৃদ্ধি হইল। ভাবিলাম, সে নিশ্চয়ই মিথ্যা কথা বলিতেছে। পাছে শোভন সিংকে শত্রু বলিয়া প্রকাশ করিলে আমার মনে সন্দেহ হয়, এই মনে করিয়া সে বোধ হয় কথাটা লুকাইল। এইরূপ চিন্তা করিয়া বলিলাম, “আজ প্রাতে কি কোন বৃদ্ধা তোমার নিকট দুইজন বালিকা আনিয়া ছিল?”
স। কেমন করিয়া জানিব? সমস্ত দিনের পর এই আমি চক্ষু চাহিতেছি।
আ। বৃদ্ধা যে দুইটী বালিকাকে এখানে আনিয়াছিল তাহার সাক্ষী আছে। যে গাড়ীতে করিয়া তাহারা তোমার নিকট আসিয়াছিল, সেই গাড়ীর কোচমান আমার সঙ্গেই আছে।
স। হইতে পারে—আপনার কথা যথার্থ হইতে পারে। কিন্ত আমি আজ সমস্ত দিনই ধ্যানে নিমগ্ন।
কথায় কথায় রাত্রি অনেক হইয়া গেল দেখিয়া, আমি তাহাকে বলিলাম, “বিচার পরে হইবে, এখন তোমরা তিনজন আমাদের সঙ্গে আইস।”
দ্বিরুক্তি না করিয়া সেই সন্ন্যাসী অপর দুইজনের ধ্যান ভঙ্গ করিল। তখন তিনজনে মিলিয়া আমার সঙ্গে সঙ্গে ঘরের বাহির হইল এবং বাগান পার হইয়া সেই ভাঙ্গা ফটকের নিকট উপস্থিত হইল। ফটকের সম্মুখেই গাড়ী ছিল। আমি সন্ন্যাসী তিনজনকে তাহাতে উঠিতে বলিলাম। সকলে গাড়ীতে উঠিলে, কোচমান শকট চালনা করিল।
বাসায় ফিরিতে রাত্রি একটা বাজিয়া গেল। তখন সন্ন্যাসী তিনজনকে আটক করিতে বলিয়া আমি বিশ্রাম লাভ করিলাম।