অন্তিমে

ফিরে যাও দূত চিনি না তোমায়,
কেন চাও ফিরে ফিরে?
তোমার পরশে ম্লানছায়া আজ
ঘিরেছে এ দেহটীরে;
বোলো দেবরাজে তাঁর অমরার
কোনো প্রলোভন নাহিকো আমার
কেন তবু ডাক আসে বার বার
দীপ নিভে যায় ধীরে;
তুলে লও তব কিরণের সেতু
ভালবাসি ধরণীরে;

মুকুলিত মোর যৌবন বীথি
ফুলে ফুলে গেছে ভরি;
হের জাগে সেথা বসন্ত আজ
রঙ্গীন বসন পরি;
কত মধু ভরা বিহগ কূজন
ছায়া মায়া রচে সকল ভুবন
আলো মেঘে ভাসে কতই বরণ
পরাণ আকুল করি;
চরণে লুটায় জ্যোছনা যামিনী
সোনার স্বপন গড়ি।

হে অপরিচিত, এমন সময়
কেন তুমি এলে হেথা?
কেন ভেঙ্গে দিলে জীবন স্বপন
দিয়ে গেলে শুধু ব্যথা?

ফিরে যাও ওগো দেবতার দাস,
এই ধরণীর আকাশ বাতাস
বহিছে আমার শেষ নিঃশ্বাস,
শুনে যাও শেষ কথা—
আমরার আলো দেবতারি থাক্
যাব নাকো আমি সেথা।

কি কহিলে, সেথা সুর-রমণীর
ললিত কণ্ঠ ভাষে,
নন্দন বনে সুরভি ছড়ায়ে
শত পারিজাত হাসে?
অমর সে দেশ সোনা দিয়ে গড়া,
শুধু হাসি রাশি শুধু সুখে ভরা?
মাটির ধরণী ভালবাসি তবু
যাব না স্বর্গবাসে
রেখে যাও মোরে ওগো দেবদূত
কাঁটা ভরা পথ পাশে।