আনন্দের রূপ

বাল গোপালের রূপে এসেছিলে তুমি
কোন্ সে অতীত যুগে আমার এ কোলে;
গভীর সোহাগে স্নেহে সোনামুখ চুমি
আপনারে হারাইনু মধুর ‘মা’-বোলে।

আমি সে লতিকা রচি’ শীতল বিতান
স্নেহের অঞ্চল পাতি ছিনু প্রতীক্ষায়—
সার্থক করিয়া মোর মাতার পরাণ,
ফুটিলে ফুলের রূপে কবে সুষমায়?

এই ধরণীর সেই প্রথম ঊষায়,
গাহিল বিহগ যবে আদি জাগরণ—
ক্ষুদ্র বনফুল, আমি চিনি তোমায়
গগনের জ্যোতির্ম্ময় প্রথম তপন!

হে চির-সুন্দর! মনে পড়ে, একদিন
আমারেই ডেকেছিল বাঁশরী তোমার,
কোথা সেই রাধা—কোথা যমুনা পুলিন,
জাগিছে সে স্মৃতি আজো মনের মাঝার।

ভক্ত কহে আছ তুমি তীর্থে ও মন্দিরে,
জ্ঞানী কহে জলে, স্থলে, বাতাসে, বিমানে,
কবি চাহে কাব্যে তার ফুটে ওঠ ধীরে,
শিল্পী চাহে আঁকিবে সে পটে ও পাষাণে।

ক্ষুদ্র নারী আমি, প্রভু, হেরি গো তোমায়-
কখনো জীবনারাধ্য প্রিয়তম রূপ,
কখনো এ ধূলি-স্নান অঞ্চলের ছায়,
স্নেহের দুলাল তুমি আনন্দ স্বরূপ।

গাহিছে নিখিল বিশ্ব অমৃতের জয়
দিকে দিকে হেরি মূর্ত্ত আনন্দের লীলা
রূপে রসে ভরা তুমি বর্ণ-গন্ধ-ময়—
নহ শুধু দারুব্রহ্ম— নহ শুধু শিলা।