ও পারের ডাক

যেতে হবে আজ—
ফুরাল দিনের আলো শেষ হল কাজ;
জলে স্থলে মাঠে
এ পারে নামিছে সন্ধ্যা। ও পারের ঘাটে
তরী ফিরে যায়;
শ্রান্তদেহে বিহগেরা ফিরিছে কূলায়;
শেষ হ’ল বেলা,
ফুরাইল বনপথে রাখালের খেলা;
যেতে হবে আজ,
কৃষাণ ফিরেছে ঘরে শেষ হল কাজ।

বিদায় বিদায়—
গৃহে গৃহে দীপ জ্বলে, আঁধার ঘনায়;

ফিরেছে ভবনে
পল্লীবধূ জল নিয়ে চপল চরণে;
নাহি যায় দেখা
অস্তগামী তপনের শেষ রশ্মি রেখা;
স্তব্ধ বনানীর
কাঁপায় পল্লব দল মৃদুল সমীর;
বিদায় বিদায়—
আকাশে তারকা ওই মিটি মিটি চায়।

চল, দ্রুত চল—
এ পারের হাট ভাঙ্গে থামে কোলাহল;
যাত্রীদলে ঘিরে
ও পারে বাজ়িছে শঙ্খ মন্দিরে মন্দিরে
সন্ধ্যাদীপ খানি
তুলসী তলায় রাখে গৃহলক্ষ্মী আনি;

এ পারের মায়া
রচিতেছে নেত্র’পরে স্বপ্নময় ছায়া;
অধীর চঞ্চল
কে যেন কহিল কাণে চল্‌ দ্রুত চল্‌।

দূরে নদী কূল,
সময় নাহিক আর কেন হয় ভুল?
ক্ষণ বয়ে যায়
মনে পড়ে কত কথা কিসের ব্যথায়;
হিয়ার মাঝারে,
হারাণো স্মৃতিটী কার জাগে বারে বারে?
নিষ্ফল নিষ্ফল,
ধরণী দিয়াছে মোরে শুধু আঁখি জল!
শেষ হল সাজ
স্নেহের আহ্বান আসে যেতে হবে আজ।