ভাস্‌তে সেই হাঁড়ি গিয়ে সেই জালে আট্‌কাল। সন্ধ্যার সময় জেলে জাল তুলতে এসে দেখে তাতে একটা হাঁড়ি আটকেছে, খুলে দেখে তার মধ্যে সুন্দর একটি ছেলে! জেলের নিজের ছেলে পুলে ছিলনা। তাই সে খুব সুখী হয়ে ছেলেটিকে বুকে করে বাড়ী নিয়ে তার জেলেনীর কাছে দিল।

 জেলের বাড়ীতে ছেলেটি খুব যত্নে আছে। তা’রা তা’র নাম রেখেছে “দুঃখীরাম”, ডাকবার সময় তা’কে ‘দুখি’ ‘দুখি’ বলে ডাকে।

 এর তের বছর পরে একদিন রাজামশাই বেড়াতে বেড়াতে সেই নদীর ধারে জেলের বাড়ীর কাছে এলেন। দুখি সেখানে খেলা কর্‌ছিল। এখন সে বড় সড় হয়েছে, আর দেখ্‌তে খুব সুন্দর হয়েছে। রাজা জেলেকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন, “এটি কি তােমার ছেলে?” সে বল্‌ল, “না, তের বছর আগে আমি ওকে এই নদীতে একটা হাঁড়ির ভিতর কুড়িয়ে পেয়েছিলাম।” তখন রাজার মনে মনে ভারি রাগ হ’ল, আর ভয় হ’ল। নদীতে ভাসিয়ে দিলেন, তবু দুখি মরেনি। এখন তার চৌদ্দ বছর বয়স, গণক বলেছিল এই বয়সের সময় রাজার মেয়ের সঙ্গে তার বিয়ে হবে। এখন উপায়! এই বছরের মধ্যেই তাকে মেরে না ফেল্‌তে পারলে ত মুস্কিল! এই ভেবে রাজা জেলেকে বলেন, “আমি রাণীর কাছে একটা চিঠি পাঠাতে চাই, কিন্তু কা’কে দিয়ে পাঠাব, লােক খুঁজে পাচ্ছিনা। তােমার ছেলে চিঠি নিয়ে যেতে পার্‌বে কি? যদি পারে আমি তাকে অনেক টাকা দিব।”

 জেলে বল্‌ল, “তা আর পারবে না কেন?” পরদিন দুখির হাতে দিয়ে রাজা রাণীকে চিঠি পাঠালেন। সেই চিঠিতে লেখা ছিল, “যে ছেলে এই চিঠি নিয়ে যাচ্ছে, তা’কে, যাবামাত্র মেরে ফেল্‌তে হুকুম দেবে। আমি ফিরে গিয়ে যেন তা’কে দেখ্‌তে না পাই।” চিঠি নিয়ে যেতে যেতে দুখি এক বনের মধ্যে পথ হারিয়ে ফেল্‌ল। অন্ধকার বন, চারিদিকে কিছু ভাল করে দেখা যাচ্ছেনা। তখন রাত ও হয়ে এসেছে। দুখি ভাবল, “এখন উপায়?” এমন সময় সে দুরে একটা আলোর মত দেখ্‌তে পেল। সেই দিকে গিয়ে দেখ্‌ল একটা ছোট্ট ঘরের ভিতর আলো জ্বল্‌ছে, আর আলোর কাছে একজন বুড়ী বসে আছে। বুড়ী তাকে দেখে বল্‌ল, “তুমি কে বাছা? এখানে কেন এসেছ? এ যে ডাকাতের বাড়ী।” দুখি বল্‌ল, “তা ডাকাতের বাড়ী হোক্। আমার বড্ড পরিশ্রম হয়েছে, আর চলতে পার্‌ছি না। আজ রাত্রে আমি এখানেই থাক্‌ব। রাজামশাই রাণীকে একটা চিঠি দিয়ে ছিলেন, সে চিঠি আমি নিয়ে যাচ্ছিলাম, কিন্তু অন্ধকারে পথ ভুলে ফেলেছি।” এই ব’লেই সে সেই ডাকাতদের একটা বিছানায় শুয়ে পড়্‌ল।

 ডাকাতেরা বাড়ী ফিরে এসে দেখে দুখি খুব নাক ডাকিয়ে ঘুমচ্ছে। তারা বুড়ীকে জিজ্ঞাসা কর্‌ল, “এ কে?” বুড়ী বল্‌ল, “এই ছেলেটি রাণীর কাছে রাজার চিঠি নিয়ে যাচ্ছিল, অন্ধকারে পথ হারিয়ে ফেলেছে।” রাজা কিনা ডাকাতদের ধর্‌তে পারলেই সাজা দেন তাই তারা তাঁকে দেখ্‌তে পারে না। তারা ভাব্‌ল, “একটু মজা করা যাক্।” এই ভেবে তারা দুঃখীরামের জামার ভিতর থেকে চিঠিখানা বার করে, খুলে পড়্‌ল তারপর সেটা ছিঁড়ে ফেলে আর একখানা চিঠিতে লিখ্‌ল, “এই লােক যাবামাত্র আমার মেয়ের সঙ্গে তার বিয়ে দেবে।” লিখে সেই চিঠিখানা দুঃখীরামের জামার ভিতর দিল। দুখি এসবের কিছুই জানে না, সে তখনও খুব নাক ডাকিয়ে ঘুমচ্ছে।

 রাজার বাড়ী পৌছে দুখি রাণীর কাছে চিঠি দিল। রাণী খুলে দেখ্‌লেন, তাতে দুখির সঙ্গে তাঁদের মেয়ের বিয়ে দেবার কথা লেখা আছে। আর দুখিকে দেখে তাঁর খুব পছন্দও হয়েছে। কাজেই তিনি অমনি মেয়ের সঙ্গে তার বিয়ে দেবার যােগাড় করতে লাগলেন। রাজার বাড়ীতে খুব ধুমধাম লেগে গেল।

 বাড়ী ফিরে এসে সব কাণ্ড দেখে রাজা মশাই ত অবাক। তিনি বল্‌লেন, “রাণী, এ কি?” রাণী বল্‌লেন, “কেন, তুমিই ত লিখেছিলে। এই ত তােমার চিঠি।” চিঠি পড়ে রাজা দেখলেন এ তো তাঁর চিঠি নয়! তখন তিনি ভয়ানক রেগে দুঃখীরামকে ডেকে পাঠালেন। দুখি বল্ল, “আমি ত কিছুই জানিনা, তবে যদি ডাকাতের চিঠি বদ্‌লিয়ে দিয়ে থাকে।” রাজামশাই আরও রেগে বল্‌লেন, “সে আমি জানিনা। এক মাসের মধ্যে যদি তুমি আজব পাহাড়ে যে দৈত্য থাকে, সেই যার সােণার চুল, তার মাথার তিন গাছা চুল আমাকে না এনে দিতে পার, তবে আমি তােমাকে কেটে ফেল্‌ব।”

 সেই দৈত্যের চুল আন্‌তে দুঃখীরাম বেরুল, আর কিছু দিন পথ চলে সে এক মস্ত সহরের দরজার কাছে এসে উপস্থিত হ’ল। তা’কে দেখে সে সহরের দারােয়ান বল্‌ল, “দাঁড়াও, কোথায় যাচ্ছ। আগে বল তুমি কি কাজ কর, কি বিদ্যা জান, তবে যেতে পাবে।” দুখি বল্‌ল, “আমি সব জানি।”

 দারােয়ান বল্‌ল, “সব জান? আচ্ছা, এ সহরে একটা দুধের ফোয়ারা আছে, আগে তা থেকে খুব ভাল দুধ পড়্‌ত, কিন্তু এখন যে সেটা শুকিয়ে যাচ্ছে, এখন আর তা থেকে জলও বার হয় না, কেন বল্‌তে পার? যদি পার ত তােমাকে দুই গাধা বােঝাই ক’রে মােহর দিব।”

 কিছু দূর গিয়ে দুখি এক ছােট নদীর ধারে এসে উপস্থিত হ’ল। তা’কে সেই নদী পার হয়ে যেতে হবে। নদীতে নৌকা নিয়ে এক মাঝি ব’সে ছিল, সেই সব লােকদের নদী পার কর্‌ত। দুখিকে সে জিজ্ঞাসা করল, “তুমি কি বিদ্যা জান?” দুখি তা’কেও বল্‌ল, “আমি সব জানি।” তখন মাঝি বল্‌ল, “সেই কবে থেকে আমি এই ঘাটে বসে, নৌকায় করে কেবল লােকেদের পার কর্‌ছি। আচ্ছা, কি ক’রে আমি এই কাজ থেকে ছুটী পেতে পারি জান? যদি বল্‌তে পার তবে আমি তােমাকে অনেক টাকা দিব।”

 দুখি বল্‌ল, “ফিরে যাবার সময় বল্‌ব।”

 তার পর নদী পার হয়ে দুখি কাল আর অন্ধকার এক পাহাড় দেখ্‌তে পেল। সেই পাহাড়ে একটা প্রকাণ্ড গর্ত্তের ভিতর সেই দৈত্য থাকে। গর্ত্তের দরজায় গিয়ে দুখি ঘা দিতে এক বুড়ী দরজা খুলে দিল। সে বুড়ী হচ্ছে দৈত্যের দিদি মা। দৈত্য তখন বাড়ী ছিল না। বুড়ী বল্‌ল, “তুমি এখানে কি কর্‌তে এসেছ? দৈত্য যে তােমাকে দেখলে খেয়ে ফেল্‌বে।”

 দুখি বল্‌ল, “আমি দৈত্যের মাথা থেকে তিন গাছা সোণার ফুল নিতে এসেছি, না হ’লে আমাদের রাজামশাই আমাকে মেরে ফেল্‌বেন।” শুনে বুড়ীর দুঃখ হ’ল। সে বল্‌ল, “আচ্ছা দাঁড়াও, আমি তোমাকে লুকিয়ে রাখ্‌ছি।”

 দুখি বলল, “আর আমি তিনটা কথা জান্‌তে চাই।” বুড়ী বল্‌ল, “কি কথা?” দুখি বল্‌ল, “সেই যে এক সহরে এক দুধের ফোয়ারা আছে, সে ফোয়ারা কেন শুকিয়ে যাচ্ছে? আর আরেক সহরে যে গাছে সোণার ফল হত, সে গাছ কেন মরে যাচ্ছে? আর ঐ নদীতে যে মাঝি নৌকায় ব’সে আছে তার কিসে ছুটী হবে?”

 বুড়ী বল্‌ল, “তাই ত; তিনটা কথাই বড় শক্ত। আচ্ছা, দৈত্য এলে আমি তা’কে জিজ্ঞাসা কর্‌ব। এখন তোমাকে লুকিয়ে রাখি।”

 এই ব’লে সে দুখিকে একটি ছোট্ট পিঁপড়ে বানিয়ে, নিজের কাপড়ের মধ্যে লুকিয়ে রাখ্‌ল। দৈত্য এসে ঘরে ঢুকেই খালি নাক সিঁটকিয়ে শুঁকছে আর চেঁচাচ্ছে, “হাঁউ মাউ কাঁউ, মানুষের গন্ধ পাঁউ।”

 বুড়ী বল্‌ল, “মানুষ আবার এখানে কোত্থেকে আস্‌বে?” তবু কি সে তার কথা শোনে? ঘরের যত জিনিষ সব উল্টিয়ে পাল্টিয়ে দেখ্‌ল মানুষ কোথায় আছে। শেষে বুড়ী তাকে ধমক দিয়ে বল্‌ল, “কি গোলমাল কর্‌ছ? এখনি আমি সব ঝাট পাট দিয়ে পরিষ্কার করে রাখ্‌লাম, আর দেখ দেখি তুমি কি কর্‌লে? এখন খেয়ে দেয়ে ঘুমাও।” দৈত্য তখন খাওয়া দাওয়া করে বুড়ীর কোলে মাথা রেখে ঘুমাতে লাগ্‌ল। একটু পরেই ঘোঁ-ও-ও-ও করে তার নাক্‌ ডাক্‌তে লেগেছে, আর বুড়ীও অমনি পট্‌ করে তার এক গাছ, সােণার চুল ছিঁড়ে নিয়েছে।

 দৈত্য ত তখনি উঃ হুঃ হু ব’লে একেবারে লাফিয়ে উঠে বল্ল, “ওকি ওকি, ওকি কর?

 বুড়ী বল্‌ল, “না, না, কিছু না। আমার একটু একটু ঘুম পাচ্ছিল, আর বড় খারাপ স্বপ্ন দেখেছিলাম, তাই ঘুমের ঘােরে ভুলে তােমার চুল ধ’রে টেনে ফেলেছি।” দৈত্য জিজ্ঞাসা করল, “কি স্বপ্ন” বুড়ী বল্‌ল, “দেখেছিলাম কি সেই যে এক সহরে দুধের ফোয়ারা আছে, সেই ফোয়ারাটা যেন শুকিয়ে গিয়েছে।”

 দৈত্য হাস্‌তে হাস্‌তে বল্‌ল, “যাবেনা? ফোয়ারার নীচে যে ব্যাঙ্ বসে আছে। সেটাকে বার করে মেরে ফেললেই আবার ফোয়ারা দিয়ে দুধ পড়্‌বে।” এই বলে দৈত্য আবার ঘুমতে লাগ্‌ল। খানিক পরে বুড়ী পট্‌ করে আরেক গাছা চুল ছিঁড়েছে। এবারে দৈত্যের রাগ হ’ল। সে বল্‌ল, “আবার! তুমি ওকি কর্‌ছ বল্‌ত? ফের যদি কর ত ভাল হবেনা বল্‌ছি।” বুড়ী বল্‌ল, “না দাদা, কিছু ত করিনি। ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখ্‌ছিলাম, তাইত তােমার চুল টেনে ফেলেছি।”

 দৈত্য বল্‌ল, “কি স্বপ্ন শুনি।” বুড়ী বল্‌ল, “স্বপ্ন দেখছিলাম কি, যে গাছে সােণার ফল হত সেই গাছটা যেন মরে যাচ্ছে।”

 দৈত্য বল্‌ল, “তা আর যাবেনা। ওর নীচে ইঁদুরে বাস করেছে। সেটাকে মেরে ফেল্‌লেই আবার গাছ বাঁচবে।”


বুড়ী দৈত্যের চুল ছিঁড়ছে
 এবারে দৈত্য খুবই নাক ডাকিয়ে ঘুমুচ্ছে। তা’ দেখে বুড়ীও আবার আরেক গাছা চুল পটাস্‌ করে টেনে তুলেছে। তখ, দৈত্য যে লাফটা দিল আর রাগটা কর্‌ল! বুড়ীকে সে মারেই। আর কি! অনেক হাত জোড় করে বল্‌ল, “আর কর্‌ব না দাদা, এবার ছেড়ে দাও। বুড়ী মানুষ ব’সে ব’সে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, আর স্বপ্ন দেখেছিলাম।” দৈত্য তখন ঠাণ্ডা হয়ে বল্‌ল, “আবার কি স্বপ্ন দেখেছিলে?” বুড়ী বল্‌ল,“আচ্ছা, ঐ যে মাঝি নদীর ধারে ব’সে আছে, কতবছর থেকে কেবল লােক পার কর্‌ছে, তার কি কর্‌লে ছুটী হবে?”

 দৈত্য বলল, “বেটা যেমন বােকা! কেউ নৌকায় উঠ্‌লে তার হাতে দাঁড়খানি দিয়ে ছুটে পালালেইত তার ছুটী হয়ে যায়।”

 পরদিন দৈত্য যখন বাড়ী থেকে বেরিয়ে গেছে, বুড়ী তখন দুখিকে পিঁপড়ে থেকে মানুষ করে দিল। দৈত্যের সব কথা ত দুখি শুনেইছে। তারপর তিন গাছা সােণার চুল নিয়ে, বুড়ীকে অনেক নমস্কার করে সে দেশে চল্‌ল।

 নদীর ধারে আসতেই মাঝি বল্‌ল, “কি, আমার ছুটী কি করে হবে জানতে পার্‌লে?”

 দুখি বল্‌ল, “আগে আমাকে পার কর তবে বল্‌ব।” নদীর ওপারে গিয়ে নৌকা থেকে নেমে দুখি মাঝিকে বলল, “এর পরে যে কেউ তােমার নােকায় উঠ্‌বে, অমনি তার হাতে দাঁড় দিয়ে তুমি ছুটে পালাবে তা’হ’লেই তােমার ছুটী হবে।” মাঝি তখন দুই গাধা বােঝাই মােহর এনে দুঃখীরামকে দিয়ে বল্‌ল, “বাঁচালে ভাই! এই নাও তােমার টাকা।”

 যে সহরে সােণার ফুলের গাছ ছিল, দুখি, সেই সহরে এলে পর সেখানকার দারােয়ানকে বল্‌ল, “গাছের নিচে ইঁদুরে বাসা করেছে। ইঁদুরটাকে মেরে ফেল তাহলে তােমাদের গাছে আবার ফল হবে।” তখন সহরের লােকেরা মিলে গাছের গােড়া খুঁড়ে ইঁদুর বার করে ফেল্‌ল, আর অমনি দেখতে দেখতে গাছ নূতন পাতায় ভরে গেল। তখন তারা খুব খুশী হয়ে দুখিকে আরও দুই গাধা বােঝাই করে মােহর দিল।

 তারপর দুখি দুধের ফোয়ারার দেশে এলে, সেখানকার দারােয়ান তাকে বল্‌ল, “এখন বল আমাদের ফোয়ারা কেন শুকিয়ে যাচ্ছে।” দুখি বল্‌ল, “ফোয়ারার নীচে ব্যাঙ বসে আছে। ব্যাঙ তাড়ালেই ফোয়ারা ভাল হবে।” সকলে মিলে ব্যাঙটাকে টেনে বার কর্‌ল, আর অমনি ফোয়ারা থেকে গল্‌ গল্‌ করে চমৎকার দুধ পড়্‌তে লাগল। তারাও তা’তে যারপর নাই খুসী হয়ে দুখিকে দুই গাধা বােঝাই করে মােহর দিল।

 ছয় গাধা বােঝাই মােহর, আর তিনগাছা চুল নিয়ে দুখি ত দেশে ফিরে এসেছে। রাজা মশাই ভারি খুসী হয়ে বল্‌লেন, “এখন তুমি আমার মেয়েকে বিয়ে করতে পার।” কিন্তু দুখীরামের এত টাকা দেখে রাজার বড়ই লােভ হল। তিনি তা’কে জিজ্ঞাসা করলেন, “এত টাকা তুমি কোথেকে পেলে?”

 দুখি তাকে যেখানে সেই মাঝি বসে আছে সেই নদীর কথা বলে বল্‌ল, “সেই নদী পার হ’লে ওপারে দেখ্‌বেন বালীর উপরে হাজার হাজার মােহর ছড়ান রয়েছে।

 তা’ শুনে রাজামশাই তখনি সেই নদীতে চল্‌লেন। সেখানে এসে মাঝিকে বল্‌লেন “আমি পার হব।”

 তারপর যেই তিনি নৌকায় উঠেছেন অমনি মাঝি তাঁর হাতে দাঁড় খানি দিয়ে দে ছুট!

সেই হতে রাজামশাই সে নদীতে সেই নৌকার মাঝি গিরি কর্‌ছেন।