চিঠিপত্র (দশম খণ্ড, ১৯৬৭)/দীনেশচন্দ্র সেনকে লিখিত/২৩
২৩
[এপ্রিল ১৯০৪]
ওঁ
প্রীতিসম্ভাষণমেতৎ
শৈলেশকে অবশ্য হিসাব দেখাইতে হইবে। ব্যবসায়ের দস্তুর না মানিলে চলিবে কেন? আমি তাহার যে কয়টি দেনার কথা জানি তাহা এই:— মহিম ২॥০ হাজার, আর একব্যক্তি ২ হাজার, আমি ১ হাজার— এই সাড়ে পাঁচ হাজার তা ছাড়া উহাদের আত্মীয়-স্বজনের কাছে দেনা করিয়াছে তাহা আমি জানি— নিজের সম্বলও কিছু দিয়াছে তথাপি আমার বিশ্বাস ১০ হাজার টাকার উপরে দেনা হইবার কথা নহে। যাহা হউক্ দেনার হিসাব দুরে রাখিয়া দেখা যাইতে পারে assets কত আছে। তাহা এবং চলতি কারবারের goodwill লইয়া তাহাকে কত দেওয়া যাইতে পারে ইহাই বিবেচ্য। অবশ্য নগেন্দ্রবাবু যদি এই কারবার গ্রহণ করেন তবে এই কোম্পানির সহিত আমার সম্বন্ধ পূর্ব্ববৎ থাকিবে— আমার সমস্ত গ্রন্থ ইহাদেরই হাতে রাখিব এবং সুবিধামত terms এই রাখিব। আপনি বোধহয় জানেন আমার সমস্ত গ্রন্থের স্বত্ব আমি বোলপুর বিদ্যালয়কে দিয়াছি— অথচ অর্থাভাবে আমি ভিক্ষাবৃত্তি করিয়া ফিরিতেছি— কাজের লোকের হাতে পড়িলে এ দুর্দশা হইত না এই জন্য এবং দুর্ভাগা শৈলেশের আসন্ন দুর্গতি স্মরণ করিয়া আমি কিছু ব্যস্ত হইয়া পড়িয়াছি।
এখানে আমার শরীর ভালই আছে— ইতিমধ্যে আর জ্বর আসে নাই। চুপচাপ করিয়া কেদারা হেলান্ দিয়া পড়িয়া আছি— অল্প-স্বল্প লিখিতেছি, যথাসাধ্য খাইতেছি— ইহাতে জ্বর আসিবার কথা নয়।আমি “বঙ্গবিভাগ” লইয়া বঙ্গদর্শনে একটা সাময়িক প্রসঙ্গ লিখিয়াছি। আপনি “সাহিত্যপ্রসঙ্গ” লিখিবেন। পথের মধ্যে এক খণ্ড “হিন্দুস্থান রিভিয়ু” কিনিয়াছিলাম সেটা আপনাকে পাঠাইয়া দিব— তাহাতে সামাজিক প্রবন্ধ লইয়া আলোচ্য বিষয় আছে।
আপনার গল্পটি কি করিলেন? আপনাকে কিছুদিন কাছে পাইলে আপনাকে দিয়। আমি গল্প লিখাইয়া লইতে পারিতাম— Collaborationএ দুইজনে মিলিয়া গল্প লেখাও মন্দ নয়, ফ্রান্সে খুব চলিত আছে— একবার এই প্রণালী পরীক্ষা করিয়া দেখিবার ইচ্ছা আছে। অরুণ ভাল আছে ত? তাহাকে পড়াশুনায় নিযুক্ত রাখিবেন। ইতি ১৬ই বৈঃ ১৩১১
শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর