চিঠিপত্র (দশম খণ্ড, ১৯৬৭)/দীনেশচন্দ্র সেনকে লিখিত/২৯
২৯
[অগস্ট ১৯০৪]
ওঁ
প্রিয়বরেষু
বাদ প্রতিবাদের যে তরঙ্গ উঠিয়াছে তাহাতে আপনি মনকে লেশমাত্র ক্ষুব্ধ করিবেন না। আমার রচনায় যে শত্রুমিত্র সকলকেই জাগ্রত করিয়া তুলিয়াছে ইহা ভাল লক্ষণ জানিবেন। আমাকে কে আক্রমণ করিতেছে বা সমর্থন করিতেছে তাহা চিন্তার বিষয় নহে— আমার প্রবন্ধ যে দেশের মধ্যে কাজ করিতে আরম্ভ করিয়াছে ইহা আনন্দের বিষয়।— বিরোধ এবং প্রতিবাদও একটা সত্যকে ব্যাপ্ত ও সুদৃঢ় করিয়া দিবার পক্ষে একান্ত প্রয়োজনীয় বলিয়া জানিবেন অতএব আমার অবমাননায় আপনি কিছুমাত্র দুঃখিত হইবেন না। আমি এমন অনেকবার অনেক লাঞ্ছনা সহ্য করিয়াছি— আমাকে লইয়া অনেক তোলপাড় হইয়া গেছে আজ তাহার চিহ্ণমাত্রও নাই অথচ আমি যেখানে ছিলাম সেইখানেই টিকিয়া আছি। অতএব ধৈর্য্য ধরিয়া বর্তমান বাগবিতণ্ডার পরিণাম অপেক্ষা করিবেন।
আজ দেউস্কর মহাশয়ের বৈদ্যুত তাড়নায় শিবাজিউৎসব সম্বন্ধে একটা কবিতা লিখিয়া পাঠাইলাম। যদি সুবিধা পান তবে তাহার এক কপি শৈলেশের কাছ হইতে লইয়া দেখিবেন।
এখানে আসিয়া অবধি রচনাকার্য্য যে বিশেষ অগ্রসর হইতেছে তাহা বলিতে পারিনা। এখনো আমার কল্পনাশক্তি প্রলুপ্ত আছে।
ভাদ্রমাসের ভারতী আমার হস্তগত হয় নাই। পাঠাইয়া দিতে বলিবেন।
মীরার পাত্রসম্বন্ধে মোকাবিলায় আপনার সঙ্গে আলোচনা করিব। ইতি ১১ই ভাদ্র ১৩১১
শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর