চিঠিপত্র (দশম খণ্ড, ১৯৬৭)/দীনেশচন্দ্র সেনকে লিখিত/৩০
[সেপ্টেম্বর ১৯০৪]
ওঁ
প্রিয়বরেষু
অরুণের জ্বর অল্পের উপর দিয়া গেছে শুনিয়া নিশ্চিন্ত হইলাম।
বিদ্যালয় সম্বন্ধে আমি কিছুমাত্র উদ্বিগ্ন হই নাই। ছুটি দিবার জন্যও তাড়াতাড়ি করি নাই। মোহিতবাবু অত্যন্ত উৎকণ্ঠিত হইয়া একেবারে হাল-ছাড়া গোছের এক চিঠি আমাকে লিখিয়াছিলেন। তাঁহার সঙ্গে দেখা করিয়া তাঁহাকে যদি ভাল করিয়া আশ্বস্ত করিতে পারেন ত ভাল হয়।
অক্ষয় সরকার মহাশয় চিন্তিত সুরে আমাকে চিঠি লিখিয়াছেন আজ তাহার জবাব দিয়া দিলাম। আমার বিদ্যালয় বলিয়া বোলপুরের এই বিদ্যালয়টিকে আমি মুগ্ধ মমত্বের দ্বারা আবিষ্ট করিয়া ধরিতে সর্ব্বদাই নিজেকে বাধা দিই। মঙ্গলের পথে অবিচলিত থাকিয়া এ বিদ্যালয়ের যাহা হয় তাহাই হইবে— খ্যাতিও চাই না, আড়ম্বরও চাই না— কোনোমতেই ইহাকে আমি লোক-দেখানে করিয়া তুলিতে চাই না।
মনোরঞ্জনবাবু এখানেই আছেন— তাঁহার সঙ্গে প্রত্যহই আমার দেখা হয়। যোগরঞ্জনের মৃত্যু সম্বন্ধে তিনি আমাদের বিদ্যালয়কে লেশমাত্র দায়ী করেন না। এমন কি, ছুটির পরে দেবরঞ্জনকেও তিনি সেখানে দিতে প্রস্তুত।
এবারে “নৌকাডুবি” লেখা শেষ না করিয়া জলগ্রহণ করিব না। আশ্বিন ও কার্ত্তিক মাসের লেখা শৈলেশের কাছে পাঠাইয়াছি। অঘ্রাণেরটাতে হাত দিয়াছি। মনে হইতেছে মাঘ ফাল্গুন পর্যন্ত চলিতেও পারে— হয়ত বা এ বৎসরটা কাটিয়া যাইবে। অঘ্রাণের সংখ্যায় রমেশের সাক্ষাৎ পাইবেন।রথীর শরীর এখনো সম্পূর্ণ নিরাময় হয় নাই। আমি মোটের উপরে ভালই আছি। আপনার সমস্ত খবর দিবেন। ইতি ২০শে ভাদ্র ১৩১১
শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর