চিঠিপত্র (দশম খণ্ড, ১৯৬৭)/দীনেশচন্দ্র সেনকে লিখিত/৪
৪
[এপ্রিল ১৯০২]
ওঁ
বোলপুর
সাদর সম্ভাষণমেতৎ
আগামী ১লা বৈশাখে শান্তিনিকেতনের বিদ্যালয়ে নববর্ষের উৎসব হইবে— আপনার ছেলেটিকে লইয়া যদি সংক্রান্তি অথবা তাহার পূর্ব্বদিনে আসেন এবং উৎসবে যোগদান করেন ত আনন্দিত হইব। ছেলে লওয়া সম্বন্ধে আমাদের নিয়ম এই যে, দশ বৎসরের অধিক বয়স্ক ছেলেদের আমরা বিদ্যালয়ে লই না। কারণ ছোট ছেলেদের সহিত বড় ছেলেদের মিশিতে দেওয়া নিরাপদ নহে। আপনার ছেলেটির বয়স যদি অধিক না হয় তবে তাহাকে একবার দেখিতে ইচ্ছা করি। আপনি এখানে আসিয়। কিছুকাল থাকিয়া যান। আপনার শরীর ভাল হইবে— কাজ করিতে পারিবেন। আমাদের বিদ্যালয়ের প্রণালীও দেখিয়া লইতে পারিবেন— আমাকে তাগিদ দিয়া সমালোচনা লিখাইয়া লইবারও অবসর পাইবেন। অতএব এমন সুবিধা ছাড়িবেন না। শৈলেশের দল বোধ হয় আসিতে পারে— আপনি তাহাকে পাণ্ডা স্বরূপে বরণ করিয়া লইবেন। পাথেয়ের ভার সম্পুর্ণ আমার উপর দিবেন— আহূতের পাথেয় আহ্বানকর্ত্তার দেয় ইহাই আমাদের দেশের সনাতন প্রথা— অতএব এ সম্বন্ধে আপনি যদি বিলাতী কায়দার অনুসরণ করেন তবে দুঃখিত হইব। রিক্ত হস্তে আসিবেন। কেবল যদি লেখাপড়া করিতে চান তবে আপনার অর্দ্ধসসাপ্ত ও সদ্য আরব্ধ প্রবন্ধগুলি সঙ্গে করিয়া আনিবেন। অবকাশের সময় আপনার বইখানি আপনার সঙ্গে বসিয়া পড়িবার ইচ্ছা করি— তাহা হইলে আলোচনার অনেক খোরাক পাওয়া যাইবে। শিলাইদহে আসিবেন প্রতিশ্রুত ছিলেন বোলপুরে আসিয়া উপস্থিত হইলে আপনাকে সেই সত্য হইতে মুক্তি দিব— অতএব ইহকাল পরকালের প্রতি দৃষ্টি রাখিয়া আপনি আর কালবিলম্ব করিবেন না। ইতি ২৬শে চৈত্র ১৩০৮
শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর